রামনবমী উপলক্ষে বিক্রি হচ্ছে রাম ও হনুমান ছবি সংবলিত পতাকা। দুবরাজপুর বাজারে সোমবার। —নিজস্ব চিত্র।
রামনবমী আজ, মঙ্গলবার। সেই উপলক্ষে এ বছর ছুটি ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। লোকসভা নির্বাচনের আগে সেই বিষয়টিকে তুলে ধরতে চায় রাজ্যের শাসকদল। রামনবমী উপলক্ষে ময়দানে নামবে বিজেপিও। সরাসরি দু’দলের ব্যানারে কোনও কর্মসূচি না-হলেও রামনবমীর শোভাযাত্রায় শামিল থাকবেন দু’দলের নেতারাই বলে সূত্রের খবর। রামনবমী নিয়ে ঘাসফুল ও পদ্মফুল শিবিরের ‘তৎপরতাকে’ সমালোচনা করেছে সিপিএম।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, রামনবমী বাইরে ধর্মীয় উৎসব হলেও ভিতরে রাজনীতির অঙ্ক রয়েছে। বিশেষ করে লোকসভা নির্বাচনের আগে এই ‘সুযোগ’ হাতছাড়া করতে রাজি নয় তৃণমূল বা গেরুয়া শিবির। রামনবমীর শুভেচ্ছা জানিয়ে যেমন সিউড়ি শহরে ফ্লেক্স লাগিয়েছে জেলা তৃণমূল। ছুটি দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানোর ভাবনাও আজ রয়েছে তৃণমূলের। যদিও জেলায় কয়েকটি জায়গা ছাড়া আলাদা করে রামনবমীর কোনও মিছিলের আয়োজন করছে না তৃণমূল। যেখানে রামনবমীর অনুষ্ঠান হয়ে থাকে, সেখানেই দলের নেতারা যোগ দেবেন।
তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “দু-একটি জায়গায় শুনছি রামনবমী উপলক্ষে তৃণমূলের কর্মীরা মিছিল করবেন। তবে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নাগরিক সমাজের আয়োজিত রামনবমীর মিছিলে অংশ নেবেন না তৃণমূলের নেতারা।”
দুবরাজপুরের তৃণমূল শহর সভাপতি স্বরূপ আচার্য বলেন, “আমাদের এখানে রামনবমী উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা আয়োজিত হয়। আয়োজকদের আমন্ত্রণে গত বছর আমরা সেখানে যোগ দিয়েছিলাম। এ বারেও সেখানে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা আছে।’’ তিনি জানান, এটি কোনও রাজনৈতিক অনুষ্ঠান নয়। তাই সেখানে কারা উপস্থিত থাকলেন, তা নিয়ে তাঁরা ভাবছেন না।
অন্য দিকে, অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনের পরে এ বার রামনবমীকে আরও উদ্যমে উদ্যাপনের প্রস্তুতি নিয়েছে গেরুয়া শিবিরও। বীরভূমে সরাসরি দলীয় পতাকা বা ব্যানার ব্যবহার করে রামনবমী উদ্যাপন করে না বিজেপি। এ বারেও দলীয় ভাবে কোনও উদ্যাপনের পরিকল্পনা নেই। তবে, সিউড়ি, কড়িধ্যা, দুবরাজপুর, বোলপুরে রামনবমীর মিছিলে থাকবেন বিজেপি নেতৃত্ব। রামমন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে ধন্যবাদ জানানো হবে বলে সূত্রের খবর। তৃণমূলকে কটাক্ষ করে বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি বাবন দাস বলেন, “রামমন্দির কারা তৈরি করছেন, রামনবমী কারা পালন করেন, তা জনসাধারণ জানেন। এ বারেও রামনবমী ধুমধাম করেই পালন হবে, তৃণমূলকে খুঁজে পাওয়া যাবে না।”
যদিও সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষের দাবি, “তৃণমূল ও বিজেপি, দু’দলই নিজেদের কাজের ভিত্তিতে মানুষের কাছে ভোট চাওয়ার অধিকার হারিয়েছে। রামনবমী তো কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি হতে পারে না! ফলে বোঝাই যাচ্ছে, দু’দলের ভোট চাওয়ার অন্য কোনও অস্ত্র না থাকায় ধর্মীয় আবেগকে আঁকড়ে ধরতে হচ্ছে তাদের।”