বিষ্ণুপুরে মন্দিরে সুজাতা মণ্ডল এবং সৌমিত্র খাঁ। —নিজস্ব চিত্র।
লোকসভা ভোটে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী প্রায় একই সময়ে ‘বাবা’র স্মরণে। এক জন বিষ্ণুপুরের বিজেপি প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। অন্য জন, তৃণমূল প্রার্থী এবং সৌমিত্রের প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল। দু’জনেই চৈত্র সংক্রান্তির আগে ষাঁড়েশ্বরের গাজন মেলায় উপস্থিত হলেন। স্নান করে পৃথক দু’টি মন্দিরে পুজো দিলেন। দু’জনের প্রার্থনা, একে অন্যকে হারিয়ে যেন জয়ী হতে পারেন।
রাঢ় বাংলার প্রধান উৎসবগুলির মধ্যে অন্যতম গাজন মেলা। চৈত্র সংক্রান্তির সেই মেলা উপলক্ষে প্রতি বছর বিষ্ণুপুর শহর লাগোয়া প্রাচীন ষাঁড়েশ্বর মন্দিরে যেমন হাজার হাজার ভক্তের ভিড় হয় তেমনই ভক্তের ভিড়ে উপচে পড়ে বাঁকুড়া শহর লাগোয়া এক্তেশ্বর মন্দির। শুক্রবার থিকথিক করছে দুই প্রাচীন মন্দির চত্বর। এই দুটি মন্দিরই বিষ্ণুপুর লোকসভার অন্তর্গত। শুক্রবার দু’টি মন্দিরে পৃথক ভাবে হাজির হয়ে ভক্তিভরে পুজো দিলেন বিষ্ণুপুরের তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা এবং বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র।
বস্তুত, পাঁচ বছর আগে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ষাঁড়েশ্বর এবং এক্তেশ্বর মন্দিরেই গাজন উৎসবে হাজির হয়ে তৎকালীন স্বামী সৌমিত্রের জয়ের কামনায় পুজো দিয়েছিলেন সুজাতা। তখন আদালতের নির্দেশে লোকসভা কেন্দ্রে যাওয়া বারণ ছিল সৌমিত্রের। পাঁচ বছর পর তাঁরা প্রাক্তন স্বামী-স্ত্রী এবং ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বী। নিজের জয়ের কামনায় পুজো দিয়ে সুজাতা বললেন, ‘‘ষাঁড়েশ্বর বিষ্ণুপুর লোকসভা এলাকার অধীশ্বর। এলাকার হাজার হাজার মানুষের মতো আমিও তাঁর ভক্ত এবং চরণদাসী। তাই তাঁর চরণে আমার পুজো উৎসর্গ করলাম।’’ ষাঁড়েশ্বরের কাছে কী চাইলেন? সুজাতার জবাব, ‘‘বাবা সব জানেন। তিনি অন্তর্যামী। তাঁর ইচ্ছায় এ বার বিষ্ণুপুরে তৃণমূল করবে বাজিমাত আর বিরোধীরা হবে কুপোকাত।’’ এক্তেশ্বর মন্দিরে পুজো দিয়ে নিজের জয় প্রার্থনা করে বিষ্ণুপুরের বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র বলেন, ‘‘আমি ছোট থেকেই শিবের ভক্ত। বাবা এক্তেশ্বর, ষাঁড়েশ্বরের উপর আমার অগাধ আস্থা।’’ বিজেপির বিদায়ী সাংসদের সংযোজন, ‘‘আরও পাঁচ বছর যেন বিষ্ণুপুরের মানুষের জন্য কাজ করতে পারি, এলাকার রেল প্রকল্পগুলি যেন শেষ করতে পারি, পানীয় জলের কষ্ট যেন ঘোচাতে পারি এবং সর্বোপরি এ রাজ্যের সরকারকে পরাস্ত করে যেন বাংলার মানুষের দুঃখ-কষ্ট দূর করতে পারি, সেই কামনাই জানালাম বাবাকে।’’