Sisir Adhikari

‘তৃণমূলে যোগ দেওয়া ভুল ছিল, ক্ষমা চাইছি’, মন্তব্য শিশির অধিকারীর! ‘নাটক করছেন’, পাল্টা তৃণমূলের

বক্তৃতা করার সময় শিশির নিজেকে রাজ্যের সবচেয়ে বর্ষীয়ান রাজনীতিক হিসাবেও উল্লেখ করেন। এর পরেই সপরিবার তৃণমূলে যোগ দেওয়ার অতীতের সিদ্ধান্তের জন্য ক্ষমা চেয়ে নেন তৃণমূলেরই টিকিটে তিন বার সাংসদ হওয়া শিশির।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

রামনগর শেষ আপডেট: ০২ মে ২০২৪ ১১:২০
Share:

শিশির অধিকারী। —ফাইল চিত্র ।

তৃণমূলে গিয়ে ভুল করেছিলেন তিনি। বুধবার কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তথা কনিষ্ঠ পুত্র সৌমেন্দু অধিকারীর হয়ে প্রচারে নেমে তেমনটাই মন্তব্য করলেন শিশির অধিকারী। এক সময় তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে জনগণের কাছে ক্ষমাও চেয়ে নিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পিতা। যদিও তৃণমূলের দাবি, মানুষের চোখে ধুলো দিতেই এখন জনগণের কাছে ক্ষমা চাইছেন শিশির।

Advertisement

লোকসভা ভোটের প্রার্থী তখনও ঘোষণা করেনি বিজেপি। তার আগেই শিশিরের ‘ভবিষ্যদ্বাণী’ ছিল বাংলার ৪২ আসনের ৪২টিতেই জিতবে বিজেপি। পরে পুত্র সৌমেন্দুকে বিজেপি তাঁরই লোকসভা থেকে প্রার্থী করার পর শিশির জানিয়েছিলেন, অনেক আগে থেকেই অধিকারী পরিবার বিজেপিতে। তাঁর আর আলাদা করে বিজেপিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। পাশাপাশি, সাংসদ পদ খারিজের আবেদন নিয়েও বেনজির আক্রমণ করছিলেন তৃণমূলকে। এ বার তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তকেই দুষলেন কাঁথির বিদায়ী সাংসদ।

বুধবার সৌমেন্দুর সমর্থনে কাঁথির রামনগরের পদিমা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি নির্বাচনী জনসভায় যোগ দিয়েছিলেন শিশির। সেখানেই বক্তৃতা করার সময় শাসকদল তৃণমূলকে লাগাতার আক্রমণ করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক সময়ের আস্থাভাজন। শিশিরের কথায়, “তৃণমূল চোর-ডাকাতে ভরে গিয়েছে। এটা লক্ষ্মীর ভান্ডারের ভোট নয়, দেশ গড়ার ভোট। এত দুর্নীতি জালিয়াতি আমি অন্য কোথাও বা কোনও রাজ্যে দেখিনি।’’

Advertisement

বক্তৃতা করার সময় শিশির নিজেকে রাজ্যের সবচেয়ে বর্ষীয়ান রাজনীতিক হিসাবেও উল্লেখ করেন। এর পরেই সপরিবার তৃণমূলে যোগ দেওয়ার অতীতের সিদ্ধান্তের জন্য ক্ষমা চেয়ে নেন তৃণমূলেরই টিকিটে তিন বার সাংসদ হওয়া শিশির। তিনি বলেন, “আমি জানি না আমার থেকে কোনও বয়স্ক লোক পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে আছে কি না। তৃণমূলে যোগ দেওয়া মস্ত বড় ভুল ছিল। সেই আমিই আপনাদের কাছে হাত জোড় করে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি সে দিনের সিদ্ধান্তের জন্য। আমাদের সে দিনের ভুলের জন্য আজ বাংলাকে প্রায়শ্চিত্ত করতে হচ্ছে। সে দিন যদি চোখ-মুখ ওই দিকে না ঘোরাতাম তা হলে আজ বাংলার যুবকদের এই দুর্দশা হত না। আপনাদের অনুরোধ করছি তৃণমূলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিন।’’

বুধবার রামনগরে বক্তৃতা করার সময় অধিকারী পরিবারকে বেনজির ভাবে আক্রমণের অভিযোগও তিনি তুলেছেন শাসকদলের বিরুদ্ধে। যদিও শিশিরের মন্তব্য প্রসঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরি বলেন, ‘‘ভোট এলেই নাটক করে অধিকারী পরিবার। ওঁর ক্ষমা চাওয়া আসলে সাধারণ মানুষের চোখে ধুলো দেওয়া ছাড়া কিছু নয়। তৃণমূলে থেকে শিশির এবং তাঁর তিন ছেলেই একাধিক সুবিধা নিয়েছেন। মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদ, পুরসভার চেয়ারম্যান—সমস্ত পদই একচেটিয়া দখলে রেখেছিলেন শিশির। এখন সদলবলে বিজেপিতে যোগ দিয়ে বিজেপির গুণগান করছেন। ওই পরিবারের প্রতি সাধারণ মানুষ বিশ্বাস, ভরসা হারিয়েছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement