শিশির অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
গত লোকসভা ভোটে প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর প্রচার কর্মসূচিতে তাঁকে দেখা গিয়েছিল। নিজের দলের কর্মসূচি থেকে দূরেও থাকছিলেন প্রায় চার বছর ধরে। স্বাভাবিক ভাবেই এবার আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কাঁথির বিজেপি প্রার্থী তথা ছেলে সৌমেন্দু অধিকারীর কর্মিসভায় গিয়ে প্রচার সারলেন তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী। সেখান তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে কটাক্ষ করে বলতে শোনা যায়, ‘‘শুভেন্দু মারলে মমতা বাঁচত না।’’
অন্যদিকে, জেলার তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে রবিবার রাত পর্যন্ত বিজেপি প্রার্থীর নাম প্রকাশ্যে আসেনি। এর মধ্যেই এ দিন ফের জেলায় এসে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন গেরুয়া শিবিরের সম্ভাব্য প্রার্থী তথা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন রামনগর-২ ব্লকের কালিন্দীতে একটি কর্মী বৈঠক ছিল বিজেপির। সেখানে ছোট ছেলে সৌমেন্দুর সমর্থনে প্রচার করতে হাজির হন বর্ষীয়ান সাংসদ শিশির। মমতাকে উদ্দেশ্য করে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘ ভোট এলেই আহত হন। বিরুলিয়া তে না কি শুভেন্দু মেরেছেন। আরে শুভেন্দু মারলে মমতা বাঁচতেন না।’’
উল্লেখ্য, গত বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রামের বিরুলিয়ায় পায়ে চোট পান মুখ্যমন্ত্রী। সে সময় বিরোধীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগও ওঠে। এর পরে এবার দিন কয়েক আগে বাড়িতে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখম হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর আরোগ্য কামনায় বার্তা পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে এ দিন শিশিরবাবুর মুখে মমতার অসুস্থতা নিয়ে কটাক্ষ রাজনৈতিক মহলে নতুন বিতর্ক ছড়িয়েছে। এ বিষয়ে তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পীযূষকান্তি পন্ডা বলছেন, ‘‘একজন প্রবীণ সাংসদের মুখে এ ধরনের কথা একদমই বেমানান। এটা একেবারে নির্লজ্জ রাজনীতির একটা উদাহরণ।’’
এদিকে, অভিজিৎ তমলুকে বিজেপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে গত ১২ মার্চ প্রথম তমলুকে আসেন তিনি যান কাঁথি এবং নন্দীগ্রামেও। এর পরে গত ১৪ মার্চ অভিজিৎ তমলুকে এসেছিলেন। এ দিন বিকেল ৪টা নাগাদ ফের তমলুকে তাঁর আগমণ। শহরের পদুমবসানে বিজেপির জেলা কার্যালয়ে তাঁকে দলীয় নেতৃত্ব সংবর্ধনা জানান। পরে বিজেপি জেলা কার্যালয় জেলা কমিটির পদাধিকারীদের সঙ্গে পরিচয় সারেন অভিজিৎ। ছিলেন বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা হলদিয়ার বিধায়ক তাপসী মণ্ডল, তমলুক লোকসভা ইনচার্জ অনুপম মল্লিক, লোকসভা আহ্বায়ক তথা তমলুকের প্রাক্তন বিধায়ক অশোক ডিন্ডা প্রমুখ। এর পরে বিজেপির যুব, মহিলা, সংখ্যালঘু, এসসি-ওবিসি, কিসান মোর্চা-সহ দলের বিভিন্ন শাখা সংগঠনের নেতাদের নিয়েও বৈঠক করেন অভিজিৎ।
দলীয় সূত্রের খবর, বৈঠকে অভিজিৎ জানিয়েছেন, তিনি দলের প্রার্থী হিসাবে এখানে আসেননি। বিজেপি কর্মী হিসেবে এসেছেন। ওই বৈঠকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সমালোচনা করেন অভিজিৎ। তিনি বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটে রাজ্যে বিজেপির ভাল ফল হলেই তৃণমূল ভেঙে যাবে।’’ তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের মন্তব্য প্রসঙ্গে অভিজিৎকে বলতে শোনা গিয়েছে,‘‘পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ। উনি ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন।’’