জি২০ সম্মেলন। —নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রীয় অন্তর্বর্তী বাজেটে (ভোট অন অ্যাকাউন্ট) দেশের জি২০ শীর্ষ সম্মেলন হওয়া ৬০টি শহরের পরিকাঠামো উন্নয়ন ও পর্যটন বিকাশে জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। দেশে লোকসভা ভোটের পরে সে কাজ শুরু হলে, শিলিগুড়ির শহরের গুরুত্ব আরও বাড়বে বলে বলে আশাবাদী বিভিন্ন মহল। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানিয়েছেন, জি২০ সম্মেলন করতে গিয়ে শহরগুলির গুরুত্ব বেড়েছে। এই শহরগুলির সরকার বিভিন্ন ভাবে আরও উন্নয়ন করবে।
গত বছর ১ থেকে ৪ এপ্রিল শিলিগুড়িতে জি২০ শীর্ষ সম্মেলন হয়েছে। সম্মেলনের পর্যটন সম্পর্কিত বৈঠকগুলি শিলিগুড়িতে হয়েছে। শহর থেকে সুকনার পথে নিউ চামটা চা পর্যটন রিসর্টে অনুষ্ঠান হয়। বিদেশি প্রতিনিধিরা অংশ নেন। অনুষ্ঠানে ভিতরে ‘আর্ট অ্যান্ড ক্রাফ্ট’ বাজারও ছিল। দার্জিলিং শহরে গিয়েও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেন সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বিদেশি প্রতিনিধিরা। গোটা অনুষ্ঠানটি তত্ত্বাবধানে ছিলেন দেশের প্রাক্তন বিদেশ সচিব তথা জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের চিফ কো-অর্ডিনেটর হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।
সম্প্রতি শ্রিংলা শিলিগুড়ি শহরে বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছেন। কয়েকটি চা চক্রে গিয়ে তিনি শিলিগুড়িকে ‘স্মার্ট সিটি’ করার প্রয়োজনীয়তা নিয়েও কথা বলেছেন। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত আগামী দিনে কার্যকর হলে। শিলিগুড়ির গুরুত্ব বাড়বে বলে অনেকেই মনে করছেন। যদিও ভোটের আগের বাজেটের প্রতিশ্রুতি ভোটকে ঘিরেই থাকে বলে অভিযোগ। যেমন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাজেটে তো অনেক কিছুই বলা হয়। শেষ অবধি তা হলে ভাল।’’
সরকারি সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের হিসাবে দেশের ৬০টি শীর্ষ সম্মেলন হওয়া শহরের গুরুত্ব রয়েছে বলে সেখানে সম্মেলন হয়েছে। এ বার সেখানকার পরিকাঠামো আরও বাড়ানোর কথা ভাবা হবে। রাস্তা, রেল, মেট্রো, বিমান পরিষেবা, পর্যটন বিকাশের রাস্তা আরও খুলবে। যদিও শিলিগুড়িতে জি২০ সম্মেলনের পরেই কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের প্রচারের তালিকায় শিলিগুড়ি প্রথম বার জায়গা পায়। সেখানে হিমালয়ের পাদদেশের শহরকে নদী, পাহাড় ও চা বাগান জুড়ে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের ‘ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া’র প্রচারে প্রথম বার পরিচয় করানো হয়েছে শিলিগুড়ি শহরের। বাংলাদেশ ও নেপাল সীমান্ত লাগোয়া শহর থেকে ভুটান, চিন সীমান্তও দূরে নয়। বাণিজ্যের বিকাশের সঙ্গে বাণিজ্য পর্যটনে আগামী দিনে শিলিগুড়ি জোরালো ভাবে সামনে আসবে তা পর্যটন সংগঠনগুলিও মনে করছে। ‘হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড টুরিজ়ম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক’-এর সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘৬০টি শহরের মধ্যে শিলিগুড়িকে নিয়ে আগামী দিনে কী হয়, তা দেখতে হবে। কারণ, ভোটের পরে আবার পূর্ণাঙ্গ বাজেট আসবে।’’
বাজেটে ঘোষণা হয়েছে, পর্যটন বিকাশে রাজ্যগুলিকে সুদ ছাড়া ঋণ দেওয়া হবে। তাতে বিভিন্ন প্রকল্প থেকে পর্যটন বিকাশের কাজ রাজ্য করতে পারবে। আবার ‘উড়ান’ প্রকল্প চালু রাখার ঘোষণায়, মালদহ কোচবিহার বা বালুরঘাটের মতো ছোট বিমানবন্দরগুলিকে নিয়ে আশার আলো রয়েছে বলে আইসিসি’র উত্তরবঙ্গের চেয়ারম্যান সঞ্জয় গোয়েলরা মনে করছেন।