—প্রতীকী চিত্র।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহের গাড়িতে হামলার অভিযোগে পাঁচ বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। রবিবার সন্ধ্যায় কোচবিহারের ঘুঘুমারিতে ওই ঘটনার পরে, রাতে সে এলাকা থেকেই তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। বিজেপির যদিও দাবি, পুলিশ `তৃণমূলের হয়ে’ কাজ করছে। সোমবার শীতলখুচির জনসভা থেকেও এ নিয়ে উদয়ন ও পুলিশকে এক হাত নেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং নিশীথ প্রামাণিক। শুভেন্দু হুঁশিয়ারি দেন, ‘‘উদয়ন গুহ কত বড় গুন্ডা তা আমরাও দেখব।’’ উদয়নের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘কী ভাবে আমার গাড়ির উপরে হামলা হয়েছে, তা সমস্ত মানুষ দেখেছেন। মানুষকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে লাভ নেই। মানুষ এর জবাব দেবেন।’’ কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে পাঁচ জনকে ধরা হয়েছে। পক্ষপাতের প্রশ্ন নেই।
রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহের উপস্থিতিতে তেতে ওঠে ঘুঘুমারি বাজার। সূত্রের খবর, সেখানে নিশীথ একটি মিছিল করছিলেন। সেই সময়ে উদয়নের কনভয় যাচ্ছিল সে পথে। সেখানে উদয়নের গাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠে। একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। ঘটনায় নিশীথ-সহ ৫০ জনের নামে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ করেন তৃণমূলের এক কর্মী। তাতে বিজেপির একাধিক নেতা-কর্মীর নাম রয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে, এ দিন অঞ্চলে-অঞ্চলে মিছিল করে রাজ্যের শাসক দল। কোচবিহারের বিজেপির প্রার্থী নিশীথের যদিও অভিযোগ, তিনি যেখানেই কর্মসূচি করছেন, সেখানেই উদয়ন গুহ লোকজন নিয়ে গিয়ে গন্ডগোল করছেন। উদয়নের গাড়িতে ‘হামলা’ প্রসঙ্গে এ দিন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে আক্রমণ করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যপাল হিংসার কথা বলছেন। উদয়ন গুহের গাড়ির কাচ ভাঙা। তাঁকে আক্রমণ কে করেছে? রাজ্যপাল তাঁর বিরুদ্ধে চিঠি করুন।’’
বিজেপির পক্ষ থেকে সোমবার রাত পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। কোচবিহার জেলার সভাপতি সুকুমার রায়ের দাবি, ‘‘আমাদের মিছিলে হামলা করল তৃণমূল। আবার আমাদের নামেই মিথ্যে অভিযোগ দিয়ে গ্রেফতার করা হল। পুলিশের এখন এটাই কাজ। আমরা দ্রুত অভিযোগ করব।’’
ওই ঘটনার জেরে দিনহাটার একাধিক জায়গায় দু’পক্ষের মধ্যে গোলমাল হয়। রবিবার রাতে দিনহাটা ২ ব্লকের বাসন্তীরহাটে বিজেপি নেতা প্রভাত বর্মণের বাড়ি ভাঙচুর ও লুটের অভিযোগ ওঠে। দিনহাটা ১ ব্লকের পুটিমারি ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান প্রিয়াঙ্কুর রায়ের বাড়িতে বোমাবাজি ছাড়াও ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে। যুব তৃণমূল নেতা মনোজ দে-র বাড়িতেও গভীর রাতে বোমাবাজি করা হয়। এই ঘটনায় দিনহাটা থানায় আট জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানান মনোজ। বিজেপির জেলা সম্পাদক অজয় রায়, মহিলা মোর্চার নেত্রী সাবানা খাতুনের বাড়িতেও ওই রাতে বোমাবাজি করার অভিযোগ ওঠে।