গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
নির্বাচনের বিজ্ঞাপন নিয়ে বিজেপির করা মামলায় সোমবার হস্তক্ষেপ করতে চাইল না সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতে বিচারপতি জেকে মাহেশ্বরী এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের অবকাশকালীন বেঞ্চ জানায়, বিজেপির তরফে প্রকাশিত বিজ্ঞাপন আপাতদৃষ্টিতে ‘অসম্মানজনক’। দুই বিচারপতির বেঞ্চের আরও পর্যবেক্ষণ, রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী মানে শত্রু নয়। তা ছাড়া এই বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল তাদের কোনও ইতিবাচক দিক তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে বলেও জানায় শীর্ষ আদালত।
সংবাদমাধ্যমে বিজেপির কয়েকটি বিজ্ঞাপনে আপত্তি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনে নালিশ করেছিল তৃণমূল। পরে তারা ওই বিষয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের একক বেঞ্চ বিজেপির বিজ্ঞাপনের উপর অন্তর্বর্তী নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কমিশন সিদ্ধান্ত নিতে কেন দেরি করল, তা নিয়েও সমালোচনা করে উচ্চ আদালত। সিঙ্গল বেঞ্চের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যায় বিজেপি। তাদের বক্তব্য, ওই বিজ্ঞাপনকাণ্ডে ইতিমধ্যে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে শো-কজ় করেছে কমিশন। তার পরেও আদর্শ আচরণবিধি থাকাকালীন কী ভাবে আদালত কমিশনের কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারে? তা ছাড়া ওই মামলায় বিজেপিকে যুক্ত করা হয়নি। তাদের বক্তব্য না শুনেই নির্দেশ দিয়েছে সিঙ্গল বেঞ্চ।
বিজ্ঞাপনকাণ্ডে সিঙ্গল বেঞ্চের পর হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চেও ধাক্কা খায় বিজেপি। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, যে কোনও বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে একটা লক্ষ্মণরেখা থাকা উচিত। সিঙ্গল বেঞ্চ যে হেতু অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছে, তাই ওই নির্দেশের উপর কোনও হস্তক্ষেপ করা হবে না। একই সঙ্গে প্রধান বিচারপতি জানান, নির্দেশে অখুশি হলে সিঙ্গল বেঞ্চে গিয়ে আবেদন করতে পারবে বিজেপি। সেখানে তারা নির্দেশ প্রত্যাহার বা পুনর্বিবেচনার আর্জি করতে পারবে।
হাই কোর্টের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল বিজেপি। তাদের এক আইনজীবী জানিয়েছিলেন, তাঁরা আদালতের রায়কে সম্মান করেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বিষয়টি বিজ্ঞাপন নিয়ে বিতর্কের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় মধ্যে কমিশনের সিদ্ধান্তের উপরে আদালতের হস্তক্ষেপের বিষয়টির উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে তার সন্তোষজনক উত্তর না পাওয়ার কারণে সুপ্রিম কোর্টে যেতে হয়েছে। কিন্তু এই মামলায় হস্তক্ষেপই করতে চাইল না শীর্ষ আদালত।