ঝাড়গ্রামের সভায় চপ্পল ছিঁড়ে গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। —নিজস্ব চিত্র।
ঝাড়গ্রামে বক্তৃতার মাঝে চপ্পল ছিঁড়ে গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মঞ্চের উপরেই ছেঁড়া চপ্পল নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেফটি পিন দিয়ে তা লাগিয়ে নেবেন বলেও জানান। তাঁর দেহরক্ষী নতুন চপ্পল আনতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে নিষেধ করেছেন মমতা।
ছেঁড়া চপ্পল নিয়ে মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ভিডিয়ো থেকে।
ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুরে সভা করতে গিয়েছিলেন মমতা। দলের প্রার্থী কালীপদ সোরেনের সমর্থনে প্রচারসভা চলছিল। সভার একেবারে শেষে হঠাৎই দেখা যায়, মুখ্যমন্ত্রীর চপ্পলটি ছিঁড়ে গিয়েছে। মাইকেই সে কথা বলতে শোনা গিয়েছে তাঁকে। বক্তৃতা মাঝপথে থামিয়ে মঞ্চে উপস্থিত অন্যান্যদের উদ্দেশে তিনি বলে ওঠেন, ‘‘ছিঁড়েই তো গিয়েছে। আমি কি খালি পায়ে যাব এখন?’’ তৎক্ষণাৎ অন্য এক জন নিজের জুতো খুলে মমতাকে দিতে চান। কিন্তু তা নাকচ করে দিয়ে মমতা বলেন, ‘‘না, ওই জুতো আমি পরি না।’’ এর পরেই মঞ্চে মমতার কাছে গিয়ে তাঁর দেহরক্ষী নতুন জুতো নিয়ে আসার কথা জানান। মমতা তাঁকেও ‘না’ করে দেন। বলেন, ‘‘না, এখন কিছু নিয়ে আসতে হবে না। এখানে পাবে না। কোথা থেকে নিয়ে আসবে?’’
লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে প্রায় প্রতি দিনই রাজ্যের বিভিন্ন কেন্দ্রে ঘুরছেন মমতা। তাঁর সভার শেষে প্রতি দিনই মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনের নেতৃত্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে। ঝাড়গ্রামের সভার শেষেও ইন্দ্রনীলকে অনুষ্ঠানের মঞ্চ তৈরি করার নির্দেশ দিচ্ছিলেন মমতা। সেই সময়ে আচমকা তাঁর চপ্পল ছিঁড়ে যায়। তা নিয়ে মঞ্চে কিছু ক্ষণ কথাবার্তা চলে। তার পর মাইকে মমতা আবার বলেন, ‘‘ইন্দ্রনীল, তুমি সেট তৈরি করো। আমার জুতোটা ছিঁড়ে গিয়েছে। আমি সেফটি পিন লাগাই। জুতোর আসলে কোনও দোষ নেই। হাঁটতে হাঁটতে ছিঁড়ে গিয়েছে। ওর কোনও দোষ নেই। জুতোর যা আয়ু, তার চেয়ে বেশি ও হেঁটে ফেলেছে।’’
উল্লেখ্য, সাদা শাড়ি এবং সাদা হাওয়াই চপ্পল পরেই সর্বত্র ঘোরেন মমতা। সেটাই বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর চেনা সাজ। ঝাড়গ্রামে শুক্রবার প্রায় আধ ঘণ্টা মঞ্চে বক্তৃতা করেন তিনি। সর্ব ক্ষণই মঞ্চের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে হেঁটে হেঁটে ঘুরছিলেন। সভার শেষে তাঁর চপ্পলটি ছিঁড়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রীর চপ্পল নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন মঞ্চে উপস্থিত বাকিরা। কিন্তু নতুন চপ্পল আনাতে চাননি মমতা। অন্য কারও জুতোও পায়ে দিতে চাননি। সেফটি পিনেই খুঁজে নিয়েছেন তাৎক্ষণিক সমাধান। শুক্রবার ঝাড়গ্রামের পর ঘাটালে আরও একটি জনসভা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। সেখান থেকে মেদিনীপুর কেন্দ্রে যাওয়ার কথা তাঁর। জুন মালিয়ার সমর্থনে করবেন রোড শো। তার আগে নতুন চপ্পলের বন্দোবস্ত হয়ে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।