—ফাইল চিত্র।
অযোধ্যায় রামলালা দর্শনের জন্য আরএসএসের পক্ষ থেকে বিশেষ ট্যুর প্যাকেজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্পেশাল ট্রেনে করে যাতায়াত, মন্দির ও রামলালা দর্শন সেরে আবার বাড়ি ফিরে আসা। জনপ্রতি ধার্য হয়েছে ১৬০০ টাকা করে। এই খরচের মধ্যেই ধরা রয়েছে খাওয়ার খরচও। ইতিমধ্যেই রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রায় আড়াই হাজার মানুষ এই প্যাকেজের মাধ্যমে রামলালা দর্শন করেছেন। এবারের লোকসভা নির্বাচনে এই ট্যুর প্যাকেজ ইভিএমে কতটা প্রভাব ফেলবে, আপাতত তারই হিসেব কষছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
গত লোকসভা নির্বাচনে প্রথম বারের জন্য রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রটি বিজেপির দখলে আসে। সেই সময়ে বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকার তৃণমূলের রূপালি বিশ্বাসকে প্রায় ২ লক্ষ ৩৪ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনেও জেলার দক্ষিণ অংশে থাকা আটটি বিধানসভা কেন্দ্রে দখল নেয় বিজেপি। পরে অবশ্য উপনির্বাচনে শান্তিপুর কেন্দ্রটি তৃণমূলের দখলে যায়। ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে অবশ্য উল্লেখযোগ্য ফল করতে পারেনি বিজেপি। বিজেপির একটা অংশের দাবি, অযোধ্যার মন্দিরে রামলালা দর্শনের বিষয়টি অবশ্যই লোকসভা ভোটে বড় প্রভাব ফেলবে। অপর একটি অংশের অবশ্য দাবি, রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে মতুয়া ভোট প্রতি বার নির্বাচনে জয়ের ক্ষেত্রে অন্যতম নির্ণায়ক হয়ে ওঠে। তাই এক দিকে রামলালা দর্শন ট্যুর প্যাকেজ, অন্য দিকে মতুয়া ভোট নিজেদের দিকে রাখতেই মরিয়া বিজেপি।
তবে এই রামলালা দর্শনের ট্যুর প্যাকেজ কোনও ভাবেই ভোটে প্রভাব ফেলবে না বলে দাবি করেছে তৃণমূল ও সিপিএম। রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ধর্ম নিয়ে রাজনীতি মানুষ কখনওই মেনে নেবে না। একশো দিনের বকেয়া টাকা কেন্দ্রের বিজেপি সরকার কবে দেবে, তার উত্তর ওরা দিতে পারছে না। রানাঘাটের সাংসদকেও গত পাঁচ বছরে মানুষ কাছে পায়নি।’’
আর সিপিএমের নদিয়া জেলা কমিটির সম্পাদক সুমিত দে বলেন, ‘‘রামলালা দর্শনের নামে যে প্যাকেজ ট্যুরের ব্যবস্থা করা হয়েছে, তার প্রভাব কোনও ভাবেই লোকসভা নির্বাচনে পড়তে পারে না। কারণ, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, কৃষকদের বঞ্চনা, ইলেক্টরাল বন্ডের নামে দেশের বিত্তশালীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় ইত্যাদি বিষয়গুলি সম্পর্কে সাধারণ মানুষ সচেতন।’’
এই প্রসঙ্গে বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি আশিসবরণ উকিল
বলেন, ‘‘রাম মন্দিরের প্রভাব নিশ্চিত ভাবেই ভোটের উপরে পড়বে। রামলালা দর্শনের জন্য বাংলা থেকে ৬৯টি বিশেষ
ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিশ্চিত ভাবেই রানাঘাট কেন্দ্র এ বারও আমাদের দখলেই থাকবে।’’