Lok Sabha Election 2024

এনডিএ-তে জয়ন্ত, এখনও মুখ ফিরিয়ে অকালি, এডিএমকে

গত লোকসভায় তামিলনাড়ুতে এডিএমকে দলের সঙ্গে জোট বেঁধে লড়েছে বিজেপি। যদিও সাফল্য আসেনি। গত বছর এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে যায় কে পলানীস্বামীর দল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:০৩
Share:

রাষ্ট্রীয় লোক দলের প্রধান জয়ন্ত চৌধরী। —ফাইল চিত্র।

লক্ষ্য শরিক দলের হাত ধরে ৪০০ আসন ছোঁয়া। কিন্তু তামিলনাড়ুতে এডিএমকে এবং পঞ্জাবে শিরোমণি অকালি দলের সঙ্গে জোটের কথা কার্যত ভেস্তে যাওয়ায় অস্বস্তিতে বিজেপি নেতৃত্ব। তবে আশার কথা, বিহারে নীতীশ কুমারের পর আজ এনডিএ-তে যোগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের জাঠ নেতা তথা রাষ্ট্রীয় লোক দলের প্রধান জয়ন্ত চৌধরী।

Advertisement

আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে দক্ষিণ ভারতে ভাল ফল করতে মরিয়া বিজেপি নেতৃত্ব। বিশেষ করে তামিলনাড়ুতে প্রথম জয় পেতে চান তাঁরা। সেই কারণে একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পের শিলান্যাস, দক্ষিণের খ্যাতনামা ব্যক্তিত্বদের পদ্ম পুরস্কার দেওয়া, রামমন্দির উদ্বোধনের আগে দক্ষিণের বিভিন্ন তীর্থস্থলে পুজো দিতে দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে। দলীয় সূত্রের মতে, লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে নীতিগত ভাবে শরিক দলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এগোতেও বিজেপি রাজি। অমিত শাহের কথায়, ‘‘যারা আমাদের সঙ্গে যোগ দিতে চায়, তাদের স্বাগত।’’

গত লোকসভায় তামিলনাড়ুতে এডিএমকে দলের সঙ্গে জোট বেঁধে লড়েছে বিজেপি। যদিও সাফল্য আসেনি। গত বছর এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে যায় কে পলানীস্বামীর দল। তা সত্ত্বেও তামিলনাড়ুতে ডিএমকে শিবিরকে চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করাতে বিজেপির পক্ষ থেকে ফের এডিএমকে-এর সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছিল। কিন্তু গত সপ্তাহে এক ঝাঁক নেতা এডিএমকে ছেড়ে বিজেপিতে গেলে দূরত্ব বাড়ে। গত কাল বিজেপির সঙ্গে জোট করার প্রশ্নে দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে নিয়ে বৈঠক করেন পলানীস্বামী। সূত্রের মতে, বৈঠকে ঠিক হয় তামিল অস্মিতার কথা মাথায় রেখে আসন্ন নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে জোটে যাবে না দল।

Advertisement

এডিএমকে সূত্রের মতে, বিজেপির বিরুদ্ধে দল ভাঙার অভিযোগ রয়েছে। উপরন্তু গত পাঁচ বছরে উত্তর ভারত ও দক্ষিণ ভারতের মানসিক দূরত্ব অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। বিজেপির বিরুদ্ধে তামিল ভূমিতে হিন্দি আগ্রাসনের অভিযোগ রয়েছে। যে বিষয়টিকে প্রচারের হাতিয়ার করেছে প্রতিপক্ষ ডিএমকে। এই আবহে বিজেপির সঙ্গে হাত মেলালে তামিল-বিরোধী তকমা জোটার আশঙ্কা রয়েছে। তাই আপাতত ভোটের আগে বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখতে চান এডিএমকে নেতৃত্ব।

পঞ্জাবেও অতীতের সঙ্গী শিরোমণি অকালি দলকে পাশে নিয়ে লোকসভা নির্বাচনে নামার পরিকল্পনা নিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু সূত্রের মতে, জোটের প্রশ্নে প্রাথমিক আলোচনা ভেস্তে গিয়েছে। গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে ওই রাজ্যে লড়েছিল অকালি। কিন্তু ২০২০ সালে নরেন্দ্র মোদী সরকার বিতর্কিত কৃষি আইন আনলে সরকার থেকে সমর্থন তুলে নেয় অকালি। পরে সরকার ওই আইন প্রত্যাহার করলেও অকালি আর সরকারে ফেরেনি। পঞ্জাবে এখন আম আদমি পার্টির সরকার। ‘ইন্ডিয়া’র শরিক হলেও, ওই রাজ্যের সবক’টি আসনে লড়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছে কেজরীওয়ালের দল। এই আবহে বিজেপি বুঝতে পারছে, পঞ্জাবে ভাল ফল করতে স্থানীয় শিখ সমাজের প্রতিনিধি শক্তিশালী দলের সমর্থন প্রয়োজন। গত সপ্তাহে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি (সংগঠন) বি এল সন্তোষ অকালি নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন। সূত্রের মতে, আসন ভাগাভাগি নিয়ে মতানৈক্যের পাশাপাশি কৃষি আন্দোলনে ধৃতদের ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে সরব রয়েছে অকালি। যা নিয়ে এই মুহূর্তে আপত্তি রয়েছে বিজেপির। যদিও সূত্রের মতে, বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছেন, পঞ্জাবে জোটের দরজা এখনও সম্পূর্ণ বন্ধ হয়নি।

অন্য দিকে চৌধরী চরণ সিংহকে মরণোত্তর ভারতরত্ন দেওয়ার ঘোষণার পরে তাঁর নাতি তথা আরএলডি দলের প্রধান জয়ন্তের বিজেপিতে যোগদান সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করা হচ্ছিল। মূলত পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে যে জাঠ-মুসলিম অধ্যুষিত ২৯টি আসন রয়েছে, তাতে ভাল ফল করতেই জয়ন্তের সঙ্গে জোট করার লক্ষ্য নিয়েছিল বিজেপি। আজ দিল্লিতে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে একটি বৈঠকের পরে এনডিএ-তে যোগদানের কথা সরকারি ভাবে জানিয়ে দেন জয়ন্ত। তিনি বলেন, ‘‘হাতে সময় অল্প। তাই দলের নেতা ও কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে এনডিএ-তে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ আরএলডি-র ওই যোগদান উত্তরপ্রদেশে ‘ইন্ডিয়া’, বিশেষ করে এসপি নেতা অখিলেশ যাদবের কাছে রাজনৈতিক ভাবে বড় ধাক্কা। পাঁচ বছর আগে আরএলডি-র সঙ্গে জোট করে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে বিজেপির থেকে ছ’টি আসন কেড়ে নিয়েছিল এসপি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement