মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যসভা নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করে দিল তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। রবিবার তৃণমূলের এক্স হ্যান্ডলে প্রার্থীদের নাম জানানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মনোনীত প্রার্থীরা সোমবার মনোনয়ন জমা দিতে পারেন বলেই তৃণমূল সূত্রে খবর। এ বারের তালিকায় স্থান পাননি রাজ্যসভার পুরনো তিন জন সাংসদ। শুধুমাত্র নাদিমুল হককেই আবারও স্থান দেওয়া হয়েছে প্রার্থিতালিকায়। এই নিয়ে তিন বার তিনি তৃণমূলের হয়ে রাজ্যসভায় যাবেন। অন্য তিন প্রার্থী হলেন প্রাক্তন সাংসদ সুস্মিতা দেব, প্রাক্তন সাংসদ মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুর এবং সাংবাদিক সাগরিকা ঘোষ। পুরনোদের মধ্যে রাজ্যসভায় মনোনয়ন পাননি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা (সদর) তৃণমূলের সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তী, আবীররঞ্জন বিশ্বাস এবং শান্তনু সেন। এ বারের রাজ্যসভা ভোটে চার আসনে তৃণমূল প্রার্থীদের জয় নিশ্চিত।
ঘটনাচক্রে, শনিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ লোকসভা ভোটের আগে নাগরিক সংশোধনী আইন (সিএএ) চালুর কথা বলেছেন, যা মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবি। আর রবিবার তৃণমূলনেত্রী মমতাবালাকে রাজ্যসভায় মনোনয়ন দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন। মুখ্যমন্ত্রীর এমন সিদ্ধান্তে অনেকেই মতুয়া ভোট ঘরে ফেরানোর ইঙ্গিত দেখছেন। কারণ, ২০১১ সালে বামফ্রন্টকে হারিয়ে তৃণমূলের ক্ষমতা দখলের নেপথ্যে বড় ভূমিকা ছিল মতুয়াদের। কিন্তু ২০১৪ সাল থেকে মতুয়া ভোট বিজেপির ঘরে যেতে শুরু করে। মতুয়া ঠাকুরবাড়ির ‘বড়মা’ প্রয়াত বীণাপাণি ঠাকুরের ছোট নাতি শান্তনু ঠাকুর বর্তমানে বনগাঁ থেকে সাংসদ হয়ে মোদীর মন্ত্রিসভায় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী। বড় নাতি সুব্রত ঠাকুর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় গাইঘাটা থেকে বিজেপির বিধায়ক। তাঁদের সঙ্গে মমতাবালার পারিবারিক দ্বন্দ্বের কথা সর্বজনবিদিত। এমতাবস্থায় প্রাক্তন সাংসদকেই আবারও মতুয়া ভোট ফেরাতে নিজের তুরুপের তাস করেছেন মমতা।
সুস্মিতা আবার তৃণমূলের হয়ে রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন। ২০২১ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করলে, তাঁকে মানস ভুঁইয়ার ছেড়ে দেওয়া রাজ্যসভা আসনে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। দেড় বছর সংসদের উচ্চকক্ষে ভাল কাজও করেছিলেন সুস্মিতা। কিন্তু গত বছর তাঁর আসনের মেয়াদ শেষ হলে সুস্মিতাকে আর রাজ্যসভায় পাঠাননি মমতা। তৃণমূলের একাংশের ব্যাখ্যা ছিল, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে অসমের শিলচর থেকে তৃণমূল প্রার্থী হতে পারেন প্রয়াত সন্তোষমোহন দেবের কন্যা। কিন্তু মাত্র এক বছরের ব্যবধানেই আবারও তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলেন তৃণমূলনেত্রী।
সাংবাদিক সাগরিকা আবার জাতীয় সংবাদমাধ্যমে পরিচিত নাম। সাংবাদিক রাজদীপ সরদেশাইয়ের স্ত্রী তিনি। জাতীয় সংবাদমাধ্যমের এমন এক জন সাংবাদিককে রাজ্যসভায় প্রার্থী করে চমক দিয়েছে তৃণমূল। তৃতীয় বার রাজ্যসভায় যাওয়া নাদিমুলও সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত একটি নাম। কলকাতা থেকে প্রকাশিত একটি উর্দু দৈনিক সংবাদপত্রের সম্পাদক তিনি।