হিমাচল প্রদেশের একটি গুরুদ্বারে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী-সহ কংগ্রেস নেতারা। রবিবার। ছবিঃ পিটিআই।
নরেন্দ্র মোদী প্রথমে বলেছিলেন, তাঁর জন্ম জৈবিক প্রক্রিয়ায় হয়নি বলে তিনি এখন নিশ্চিত। তাঁর বিশ্বাস, পরমাত্মা তাঁকে কোনও বিশেষ কাজে পাঠিয়েছেন। এর পরে নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ২০৪৭-এর উন্নত ভারতের লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ঈশ্বর তাঁকে ডেকে নেবেন না বলে তাঁর বিশ্বাস। সম্প্রতি আর এক সাক্ষাৎকারে নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, তিনি ‘অবিনাশী’। তাঁর বিনাশ নেই।
আজ রাহুল গান্ধী প্রশ্ন তুললেন, নরেন্দ্র মোদীর মনে এই অনুভূতি কি সকালে হয়? না কি সন্ধ্যায়? না কি ২৪ ঘণ্টাই মনে এ সব খেয়াল আসে? আজ হিমাচল প্রদেশে প্রচারে গিয়ে রাহুল গান্ধীর কটাক্ষ, ‘‘বিভিন্ন রকমের অসুখ হয়। কোনওটা সকালে আসে, কোনও সন্ধ্যায়।’’ শনিবার পঞ্জাবে, তার পরে রবিবার হিমাচলে রাহুলের প্রশ্ন, নোট বাতিলের আগে, জিএসটি চালু করার আগেও কি পরমাত্মার সঙ্গে কথা হয়েছিল? পরমাত্মাই কি নরেন্দ্র মোদীকে বলেছেন, দেশের সমস্ত বিমানবন্দর, সমস্ত বন্দর আদানির হাতে তুলে দিতে! রাহুল বলেন, ‘‘যে ব্যক্তির সরাসরি পরমাত্মার সঙ্গে যোগাযোগ, তাঁর সংবিধানের কী প্রয়োজন? উনি তো সরাসরি ভগবানের সঙ্গে কথা বলছেন।’’
এক দিকে রাহুল গান্ধী মোদীর নিজেকে ‘ঈশ্বর প্রেরিত’ হিসেবে দাবি নিয়ে কটাক্ষ করেছেন। অন্য দিকে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা নরেন্দ্র মোদীর ‘মুজরো’ মন্তব্য নিয়ে আজ ফের প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করেছেন। শনিবারই প্রধানমন্ত্রী বিহারে প্রচারে গিয়ে বলেছিলেন, ‘‘ইন্ডিয়া জোট নিজেদের ভোটব্যাঙ্ককে তুষ্ট করার চেষ্টা করছে। ওরা চাইলে ভোটব্যাঙ্কের সামনে গিয়ে মুজরোও করতে পারে।’’ আজ প্রিয়ঙ্কা পঞ্জাবে প্রচারে বলেছেন, নরেন্দ্র মোদী তাঁদের রাজনৈতিক বিরোধী হলেও কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রীর পদকে সম্মান করে। কিন্তু নরেন্দ্র
মোদী প্রধানমন্ত্রীর পদের মর্যাদা রাখছেন না।
কংগ্রেস মনে করছে, নরেন্দ্র মোদী নিজেকে যে ভাবে ঈশ্বর প্রেরিত বলে দাবি করতে শুরু করেছেন, তাতে তাঁর ভোট কমবে। কারণ ইতিহাস বলে, স্বৈরাচারী শাসকরাই নিজেকে এ ভাবে ঈশ্বর প্রেরিত বলে দাবি করেছেন। ফলে মোদী যে ভবিষ্যতে সংবিধান বদলে দিতে চান, তা প্রমাণ করা সুবিধে হবে। রাহুল আজ সে দিকেই ইঙ্গিত করেছেন। অন্য দিকে প্রিয়ঙ্কা মোদীর ভাষার নিন্দা করে তাঁর মহিলা ভোটব্যাঙ্কে ভাঙন ধরানোর লক্ষ্য নিচ্ছেন।
প্রিয়ঙ্কার সুরে আজ তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সাগরিকা ঘোষ মন্তব্য করেছেন, ‘‘ ওঁর প্রধানমন্ত্রীর চেয়ার নয়, চিকিৎসা দরকার।’’