রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
দলের জমি আন্দোলনের ‘ধাত্রীভূমি’ সিঙ্গুর হয়েই আজ থেকে ‘নির্বাচনী লড়াই’-এর ময়দানে নামতে চলেছেন হুগলি কেন্দ্রে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইন জানান, দুপুর দু'টোয় সিঙ্গুরের ডাকাতকালী বাড়িতে পুজো দিয়ে কর্মিবৈঠকে যোগ দেবেন তিনি। এরপর গন্তব্য পাশের বিধানসভা ধনেখালি। সেখানে জনসভা হওয়ার কথা। সবশেষে সদর শহর চুঁচুড়া বিধানসভায় আসবেন তিনি। চুঁচুড়াতেও কাছে একটি মন্দিরে পুজো দিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হওয়ার কথা রচনার।
প্রথম দিন যে তিনটি বিধানসভায় পা রাখছেন রচনা, তার মধ্যে ধনেখালি ছাড়া বাকি দু'টিতেই ২০১৯ সালের লোকসভায় হারের মুখ দেখেছিল তৃণমূল। যদিও প্রার্থীর আসার পিছনে হার-জিতের অঙ্ক মানছে না তৃণমূল। অরিন্দমের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী সিঙ্গুর থেকেই জমি আন্দোলন শুরু করেছিলেন। তাই রচনাও সিঙ্গুর হয়ে ‘নির্বাচনী লড়াই’ শুরু করতে চেয়েছেন। এ নিয়ে রচনার প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তাঁকে শুক্রবার বারবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজেরও উত্তর দেননি। তবে, অরিন্দম বলেন, "শুধু কর্মীরা নয়, রচনাকে দেখতে উদগ্রীব হয়ে আছেন সাধারণ মানুষও। মানুষের উদ্দীপনার প্রভাব ভোট-বাক্সে পড়বে। রচনা হু হু করে জিতবেন।’’
গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায় মোট ৬ লক্ষ ৭১ হাজার ৪৪৮টি ভোট পেয়েছিলেন। তৃণমূলের দু'বারের চিকিৎসক সাংসদ রত্না দে নাগের ঝুলিতে গিয়েছিল ৫ লক্ষ ৯৮ হাজার ৮৬টি ভোট। লকেটের কাছে ৭৩ হাজার ৩৬২ ভোটে পরাস্ত হন রত্না। বিধানসভার নিরিখে চন্দননগরে ও ধনেখালিতে যথাক্রমে ৩ হাজার ও ১২ হাজার ভোটে তৃণমূল এগিয়ে থাকলেও বাকি পাঁচটি বিধানসভাতেই পদ্মফুল ফুটেছিল। যার মধ্যে বলাগড় বিধানসভায় প্রায় ৩৪ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল বিজেপি। চুঁচুড়ায় ২১ হাজার, সপ্তগ্রামে ২২ হাজার, সিঙ্গুরে ১১ হাজার এবং পান্ডুয়ায় ৭০২ ভোটে লকেটের থেকে পিছিয়ে ছিলেন রত্না। যদিও দু'বছর পরে, বিধানসভা ভোটে ওই ফলাফল ধরে রাখতে পারেনি বিজেপি। সাতটি আসনেই তৃণমূল প্রার্থীদের থেকে অনেকটাই পিছিয়ে ছিলেন বিজেপি প্রার্থীরা। তাই এই কেন্দ্রে গতবারের লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে তৃণমূলের এবং বিগত বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে বিজেপি— দু'পক্ষেরই ঘুরে
দাঁড়ানোর লড়াই।
তৃণমূল বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল এবং রচনার মতো তারকা প্রার্থী দেখে উজ্জীবিত হলেও বিজেপির তারকা প্রার্থী লকেটের পাল্টা দাবি, ‘‘লোকসভা ভোট প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লড়াই। যেখানে মোদীজির বিকল্প নেই। মানুষ সেটি জানেন। তাই তাঁকেই পুনর্নির্বাচিত করবেন।’’