ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রায় রাহুল গান্ধী ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা। শনিবার। মোরাদাবাদে। ছবি: পিটিআই।
‘সসুরালওয়ালোঁ’!
হাসি মুখে প্রথমেই হাঁক ছাড়লেন। ভিড় করে থাকা জনতা চিৎকার করে সাড়া দিল।
বাস নয়। খোলা জিপ। রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার ৪২তম দিনে এই প্রথম বার দাদার পাশে দেখা গেল প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরাকে। উত্তরপ্রদেশে ন্যায় যাত্রার একেবারে শেষ পর্বে। মোরাদাবাদে। যে মোরাদাবাদের ভূমিপুত্র রবার্ট বঢরা। সেই অর্থে মোরাদাবাদ প্রিয়ঙ্কার শ্বশুরবাড়ি। আর মোরাদাবাদের মানুষ তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোক জন।
এক সপ্তাহ আগে পর্যন্ত এই মোরাদাবাদ আসন নিয়ে উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টির মধ্যে লড়াই চলেছে। কংগ্রেস এসপি-র দখলে থাকা মোরাদাবাদ দাবি করায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন অখিলেশ যাদব। শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস মোরাদাবাদের দাবি ছেড়েছে। প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে অখিলেশ যাদবের টেলিফোনে কথায় জট কেটেছে।
আজ মোরাদাবাদে রাহুল-প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে ন্যায় যাত্রায় যোগ দিয়েছেন এসপি সাংসদ এস টি হাসন। ন্যায় যাত্রায় কংগ্রেসের পতাকার সঙ্গেও সমাজবাদী পার্টির ঝাণ্ডাও দেখা গিয়েছে। তার পরে আমরোহায় রাহুল-প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে একই জিপে দেখা গিয়েছে বিএসপি থেকে সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ কুঁয়ার দানিশ আলিকে। যিনি এ বার কংগ্রেসের টিকিটে আমরোহায় প্রার্থী হতে চলেছেন। প্রিয়ঙ্কা প্রশ্ন তুলেছেন, উত্তরপ্রদেশে যোগী সরকার ইচ্ছেমতো কাউকে অভিযুক্ত ঠাউরে বুলডোজ়ার চালাচ্ছে। তা হলে কৃষকদের হত্যায় অভিযুক্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির পুত্রের বাড়িতে বুলডোজ়ার চালানো হয়নি কেন?
রবিবার উত্তরপ্রদেশে ন্যায় যাত্রা পর্ব শেষ হচ্ছে। সেখানে অখিলেশ যাদবকে রাহুল গান্ধী, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার সঙ্গে দেখা যাবে। ন্যায় যাত্রার পথের দু’পাশে হোর্ডিং-ব্যানারে ইতিমধ্যেই রাহুল-প্রিয়ঙ্কা-অখিলেশের ছবি একসঙ্গে উঠে এসেছে।
কংগ্রেস-এসপি আসন সমঝোতা ইন্ডিয়া মঞ্চের আসন সমঝোতার প্রথম সাফল্য হলেও তাতে কংগ্রেসের সলমন খুরশিদের মতো নেতারা খুশি নন। খুরশিদ ফারুখাবাদ থেকে লড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই আসনটি কংগ্রেস এসপি-কে ছেড়ে দিয়েছে। মজার কথা হল, কংগ্রেস আসন সমঝোতায় জন্য যে জাতীয় জোট কমিটি তৈরি করেছিল, খুরশিদ ছিলেন তার অন্যতম সদস্য। এখন তিনি নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়বেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। যদিও কংগ্রেস নেতারা বলছেন, খুরশিদকে নিরস্ত করা যাবে।
এখনও অবশ্য মূল প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। তা হল, অমেঠী-রায়বরেলী থেকে এ বার কে প্রার্থী হবেন? কংগ্রেসের নেতাদের একাংশ মনে করছেন, রাহুল গান্ধী এ বার হেরে যাওয়া অমেঠীর বদলে সনিয়া গান্ধীর রায়বরেলী থেকে প্রার্থী হতে পারেন। তবে কেরলের ওয়েনাড়ও থাকবে। প্রিয়ঙ্কাকে স্মৃতি ইরানির বিরুদ্ধে অমেঠী থেকে প্রার্থী করার সম্ভাবনা অবশ্য কম। অন্য একটি অংশ মনে করছে, রায়বরেলী-অমেঠী দুই আসন থেকেই কংগ্রেস এ বার গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ কোনও দলিত, ওবিসি নেতাকে প্রার্থী করতে পারে।