বাঁ দিক থেকে, বিজয়ন, রাহুল এবং প্রিয়ঙ্কা। — ফাইল চিত্র।
ভোটের কেরলে এ বার সিপিএমের সঙ্গে সংঘাতে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী! শনিবার নির্বাচনী প্রচারে পথনমথিট্টায় গিয়ে কড়া ভাষায় তিনি সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা পিনারাই বিজয়নকে নিশানা করলেন। কংগ্রেসের সভায় প্রিয়ঙ্কার মন্তব্য, ‘‘কেরলের মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির সঙ্গে বোঝাপড়া করেছেন। তাই ওদের (বিজেপি) সমালোচনা না করে বার বার রাহুল গান্ধী এবং কংগ্রেসকে আক্রমণ করছেন।’’
কূটনৈতিক যোগাযোগকে কাজে লাগিয়ে আরব থেকে বেআইনি ভাবে সোনা আমদানি, কারুভান্নুর সমবায় ব্যাঙ্ক দুর্নীতি-সহ বিভিন্ন আর্থিক কেলেঙ্কারিতে যে বিজয়নের নাম উঠে আসা সত্ত্বেও ইডি, সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি বিজয়নের বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়নি, সে অভিযোগও উঠে এসেছে প্রিয়ঙ্কার বক্তৃতায়।
প্রিয়ঙ্কার সভার আগেই সিপিএমের ভোটপ্রচারে কোঝিকোড়ে বিজয়ন ডিএলএফ জমি কেলেঙ্কারির প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। তিনি অভিযোগ করেন, প্রিয়ঙ্কার স্বামী রবার্ট বঢরা এবং তাঁর ব্যবসায়িক সহযোগী ডিএলএফের বিরুদ্ধে হরিয়ানায় জমি দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে ডিএলএফ বিপুল অঙ্কের অর্থ বিজেপির তহবিলে দেওয়ার পরেই ক্লিনচিট দেওয়া হয় তাঁদের। বিজয়নের উদ্দেশে প্রিয়ঙ্কার পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘সোনা চোরাচালান মামলা নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের এজেন্সিগুলি আপনার বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপটা করেছে?’’
বামেদের অনুরোধ উড়িয়ে রাহুল দ্বিতীয় বার কেরলের ওয়েনাড় লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হওয়ার পরেই কেরলে সিপিএম নেতৃত্বাধীন শাসকজোট ধারাবাহিক ভাবে নিশানা করছেন তাঁকে। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার কেরল কংগ্রেসের সভায় রাহুল বলেছিলেন, ‘‘বিরোধী দলগুলির নেতা-নেত্রীরা অহরহ কেন্দ্রীয় এজেন্সির নিশানা হচ্ছেন। কিন্তু একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে সিবিআই, ইডির মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সি গ্রেফতার, এমনকি জিজ্ঞাসাবাদও করছে না?’’
এর পরেই কোঝিকোড়ে সিপিএমের সমাবেশ থেকে রাহুলের ওই মন্তব্যের ‘জবাব’ দেন বিজয়ন। সেই সঙ্গে নাম না-করে অতীতে রাহুলের নামের সঙ্গে ‘পাপ্পু’, ‘আমুল বেবি’র মতো শব্দ জুড়ে যাওয়ার প্রসঙ্গও তোলেন তিনি। বিজয়ন বলেন, ‘‘রাহুল গান্ধী, আপনার পুরনো নাম আছে। এখনও সেই ভাবমূর্তি থেকে আপনি সরে আসতে পারেননি। এমন পরিস্থিতি থাকা উচিত নয়।’’ রাহুলের ঠাকুমা ইন্দিরা গান্ধী দেশে জরুরি অবস্থা জারি করে বাম নেতাদের দেড় বছর কারাবন্দি করেছিলেন বলেও মন্তব্য করেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য।