পরীক্ষায় বসতে হবে ভোটকর্মীদের। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটে সরকারি কর্মচারী এবং স্কুলশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ নতুন নয়। এ বার তাতে সংযোজন হচ্ছে বাধ্যতামূলক ৫০ নম্বরের পরীক্ষার বিষয়টি। রাজ্যের কয়েক লক্ষ সরকারি কর্মচারী এবং শিক্ষক-শিক্ষিকা রাজ্যের ভোট পরিচালনার দায়িত্বে থাকেন। তাঁদের নিজ নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে অবগত করাতেই নির্বাচন কমিশন এই প্রশিক্ষণের বন্দোবস্ত করে। জেলাভিত্তিক ভোটের নির্ঘণ্ট মেনে সরকারি কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তার পর নেওয়া হবে ওই পরীক্ষা। ‘ফাঁকিবাজ’ ভোটকর্মীদেরও এই পরীক্ষায় নিস্তার নেই বলে জানা যাচ্ছে।
তিন ধাপে সরকারি কর্মচারীদের এই প্রশিক্ষণ হবে। প্রথম এবং দ্বিতীয় ধাপে প্রশিক্ষণের পরে তৃতীয় ধাপের প্রশিক্ষণ শেষে একটি ৫০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হবে। সেই পরীক্ষায় প্রশ্ন থাকবে নির্বাচনে প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়ে। যদি কোনও ভোটকর্মী পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন, তা হলে তাঁকে আবার বিষয়গুলি প্রসঙ্গে অবগত করানো হবে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। ভোটগ্রহণের ক্ষেত্রে একটি বুথে কম করে চার জন ভোটকর্মীর প্রয়োজন হয়। এক জন প্রিসাইডিং অফিসার এবং পোলিং অফিসার হিসেবে থাকেন তিন জন। তৃতীয় পোলিং অফিসার করা হয় গ্রুপ ডি-র কর্মীকে। এ বারের ভোট পরিচালনার ক্ষেত্রে চার জনকেই পরীক্ষায় বসতে হবে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, এ বারের ভোটে নতুন অনেক বিষয় সংযোজিত হচ্ছে। তাই প্রশিক্ষণ ছাড়া কোনও ভোটকর্মীকে ভোটের কাজে ব্যবহার করার ঝুঁকি নিতে চাইছে না নির্বাচন কমিশন। তাই জেলাভিত্তিক ভোটের নির্ঘণ্ট দেখেই প্রশিক্ষণের সূচি ঠিক করা হয়েছে।
ভোটকর্মী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘যাঁরা নতুন ভোটকর্মী হয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রয়োগ করলে ঠিক ছিল। কিন্তু যাঁরা বহু বার নির্বাচনে কাজ করেছেন এবং অভিজ্ঞতা আছে, তাঁদেরকে আবার নতুন করে পরীক্ষায় বসানোর কোনও প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।’’ সরকারি কর্মচারীদের ভোটগ্রহণ পর্বে অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক করতে ইতিমধ্যেই একঝাঁক পদক্ষেপ করেছে নির্বাচন কমিশন। ভোটের ডিউটি এড়িয়ে যেতে চান অনেক সরকারি কর্মচারীই। বহু ক্ষেত্রে শারীরিক অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে তাঁরা নির্বাচনের কাজ থেকে বিরত থাকতে চান। কিন্তু সেই অজুহাত দেখিয়ে যাতে সরকারি কর্মচারীরা আর ভোট সংক্রান্ত কাজ এড়িয়ে না যেতে পারেন, সেই বিষয়ে পদক্ষেপ করেছে তারা। এ ক্ষেত্রে একটি মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করা হয়েছে। যেখানে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে যাঁরা ভোটের ডিউটি থেকে অব্যাহতি চাইবেন, তাঁদের ওই মেডিক্যাল বোর্ডের সামনে শারীরিক পরীক্ষা দিতে হবে। সেই স্বাস্থ্যপরীক্ষার পরেই প্রশাসন ঠিক করবে আবেদনকারী সরকারি কর্মীকে ভোটের ডিউটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে কি না। এ বারের ভোটে সরকারি কর্মচারী এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ‘ফাঁকিবাজি’ বরদাস্ত করতে নারাজ নির্বাচন কমিশন।