প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভার প্রস্তুতি। মঙ্গলবার কোচবিহারে। ছবি: মুক্তাঙ্কণ বর্মণস
রাত পোহালেই বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা কোচবিহারে। আর একই দিনের ওই সভায় লোক জমায়েতে কে কাকে টেক্কা দেবে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে শাসক-বিরোধীর জোর লড়াই।
দুই শিবিরের সূত্রেই জানা গিয়েছে, সভাস্থলে যত বেশি সংখ্যক কর্মী-সমর্থক হাজির করতে অঞ্চলে অঞ্চলে কার্যত ‘হুইপ’ জারি করা হয়েছে। কোনও অঞ্চল থেকে এক হাজার, কোথাও দেড় হাজার, কোথাও থেকে আবার দুই হাজার কর্মী-সমর্থক নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সে ভাবেই বাস-গাড়িও জোগাড় করা হচ্ছে।
তৃণমূল অবশ্য দাবি করেছে, বিজেপি প্রধানমন্ত্রীর সভার জন্য অসম থেকেও লোক নিয়ে আসবে। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকের কথায়, “প্রধানমন্ত্রী এর আগে কোচবিহারে এসে যা-যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার কোনওটি পূরণ করতে পারেননি। তাই প্রধানমন্ত্রীর সভায় লোক হবে না। সে জন্য অসম থেকে লোক নিয়ে এসে মাঠ ভরাবে বিজেপি। আর আমরা একটি বিধানসভা এলাকার মানুষকে নিয়েই সভা করব।” বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায় পাল্টা বলেন, “আসলে তৃণমূল বুঝে গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় লোক হবে না। আর প্রধানমন্ত্রীর সভায় লোকে ভাসবে। সে জন্য এমন কথা বলছে।” বৃহস্পতিবার কোচবিহারের রাসমেলার মাঠে সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দুপুরের পরে ওই সভায় তাঁর যোগ দেওয়ার কথা। ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ‘স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপ’ (এসপিজি)-এর নিরাপত্তাকর্মীরা কোচবিহারে পৌছে মাঠ পরিদর্শন করেছেন। রাজ্য পুলিশের এডিজি অজয় নন্দও পৌঁছেছেন জেলায়।
দলীয় সূত্রে খবর, ওই সভায় এক লক্ষ দশ হাজার মানুষের জমায়েতের লক্ষ্য নিয়েছে বিজেপি। তাতে কোচবিহারে বিজেপির দখলে থাকা নাটাবাড়ি, মাথাভাঙা, শীতলখুচি বিধানসভা থেকে কুড়ি হাজার করে কর্মী-সমর্থক জমায়েতের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। বিজেপির দখলে থাকা কোচবিহার উত্তর ও দক্ষিণ থেকেও পনেরো হাজার করে কর্মী-সমর্থক জমায়েতের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। দিনহাটা ও সিতাই থেকে আরও কুড়ি হাজার জমায়েতের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। আলিপুরদুয়ার থেকে চল্লিশ হাজার কর্মী-সমর্থক আনা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে প্রায় প্রত্যেক অঞ্চল থেকে এক হাজারের বেশি মানুষকে সভাস্থলে নিয়ে যেতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর সভা হবে মাথাভাঙার গুমানির হাটে। তৃণমূলের দাবি, মাথাভাঙা বিধানসভার মধ্যে থাকা প্রতিটি অঞ্চল থেকে সেখানে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে যেতে হবে। সব মিলিয়ে পঞ্চাশ থেকে ষাট হাজার মানুষের জমায়েতের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাথাভাঙা বিধানসভার লাগোয়া এলাকা থেকেও মুখ্যমন্ত্রীর সভায় লোক নিয়ে যাওয়া হবে। অভিজিৎ বলেন, “একাধিক বিধানসভায় সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রত্যেকটি সভায় পঞ্চাশ হাজারের বেশি মানুষ থাকবেন।”