(বাঁ দিকে) কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র। —ফাইল চিত্র।
রাজনৈতিক প্রচারে ‘সরকারি পরিকাঠামো’ (সিস্টেম) নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়ালেন রাহুল গান্ধী এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কংগ্রেস নেতা রাহুল আজ হরিয়ানার সভায় জানিয়েছিলেন, তাঁর মতে ‘সরকারি পরিকাঠামো’ দলিত, অনগ্রসর এবং আদিবাসী-বিরোধী। ওই বক্তব্যেই আজ অস্ত্র করেন প্রধানমন্ত্রী। রাহুলকে ‘শাহজ়াদা’ বলে কটাক্ষ করে তাঁর অভিযোগ, কংগ্রেসের জন্য আদিবাসী, দলিত ও অনগ্রসর অংশের বহু প্রজন্মের ক্ষতি হয়েছে।
হরিয়ানায় সংবিধান সম্মান সম্মেলনের আলোচনা সভায় আজ রাহুল যোগ দেন। সেখানে তিনি বলেন, “আমি জন্ম থেকেই সরকারি পরিকাঠামোর (সিস্টেম) মধ্যে রয়েছি। এ বিষয়টি আমার থেকে ভাল কেউ বোঝেন না। আমার ঠাকুমা, বাবার প্রধানমন্ত্রিত্বের সময় সরকারি বাসভবনে থাকতাম। পরে মনমোহন সিংহ প্রধানমন্ত্রী হন, তখনও তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যেতাম। আমাদের এই সরকারি পরিকাঠামো সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশের বিরুদ্ধে ঝুঁকে রয়েছে। ক্ষমতায় এলে আমরা এর সংশোধন করতে চাই।”
রাহুলের এই মন্তব্যকে কার্যত লুফে নিয়েছেন মোদী। নয়াদিল্লির দ্বারকার সভায় তিনি বলেন, “মিথ্যে কথা বলা শাহজ়াদার মুখ থেকে মাঝে মাঝে সত্যি বেরিয়ে আসে। তিনি বলেছেন, তাঁর ঠাকুমা, বাবা এবং মায়ের জমানায় যে নীতি তৈরি হয়েছে তাতে দলিত, পিছিয়ে থাকা শ্রেণি এবং অনগ্রসরদের বিরুদ্ধে। কংগ্রেসের নীতির ফলে তফসিলি জাতি, জনজাতি এবং ওবিসি-র প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধ্বংস হয়েছে।”
নির্বাচনী প্রচারে লাগাতার মোদী সরকারের নীতির সমালোচনা করছেন রাহুল। কংগ্রেসের ইস্তাহারেও উল্লেখ করা হয়েছে, তারা ক্ষমতায় এলে ‘অগ্নিবীর’ প্রকল্প বাতিল করা হবে। আজ রাহুল জানিয়েছেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে অগ্নিবীর প্রকল্প ‘ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হবে’। তাঁর দাবি, সেনাবাহিনী অগ্নিবীর প্রকল্প চায় না। এই প্রকল্পের মাধ্যমে জওয়ানদের ‘মজদুর’ করে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।
২৫ মে হরিয়ানার ১০টি আসনে ভোট। আজ দিল্লির অদূরে মহেন্দ্রগড়ে নির্বাচনী প্রচারে এসেছিলেন রাহুল। এই নির্বাচনী মরসুমে প্রথম এ রাজ্যে এলেন তিনি। প্রচারসভায় কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘‘দেশভক্তি আমাদের দেশের যুবকদের অস্থিমজ্জায়। হরিয়ানার যুবকেরা সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে, দেশের জন্য শহিদ হতে, গর্ব বোধ করেন। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী সরকার কী করেছে জানেন তো? তারা দু’ধরনের ‘শহিদ’ তৈরি করেছে। এক দল, যাঁরা সেনাবাহিনীর জওয়ান ও অফিসার। তাঁরা শহিদ হলে তাঁদের পরিবার পেনশন ও শহিদের সম্মান ও সব সুবিধা পাবে। কিন্তু অন্য দিকে, যাঁরা দরিদ্র পরিবার থেকে অগ্নিবীর হয়েছেন, তাঁরা শহিদ হলে তাঁদের পরিবার শহিদের মর্যাদা, পেনশন বা ক্যান্টিনের সুবিধা— কিছুই
পাবে না।’’ এর আগে হিমাচল প্রদেশে কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখু অভিযোগ করেছিলে, ‘অগ্নিবীর’ প্রকল্পের জন্য যুব সমাজ সেনাবাহিনীতে চাকরির উৎসাহ হারাচ্ছে।
তাঁর বক্তৃতায় আন্দোলনরত কৃষকদের প্রসঙ্গও তোলেন রাহুল। বলেন, ‘‘মোদী সরকার আপনাদের অধিকার কেড়ে নিতে তিনটি কৃষি আইন এনেছিল। কিন্তু আপনাদের আন্দোলনের জেরে সরকার পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। আমরা ক্ষমতায় এসে কৃষক ঋণ মকুব হবে। ‘কর্জ়া মাফি’ কমিশন গঠন হবে।’’