প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র।
পরিবেশের ছাড়পত্র না থাকা সত্ত্বেও ক’দিন আগে তিনি গুজরাত থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে কল্যাণী এমসের উদ্বোধন করেছিলেন। বিতর্কের মধ্যেই শনিবার নদিয়ায় প্রধানমন্ত্রী দাবি করলেন, ‘কমিশন’ না পেয়ে তৃণমূল সরকার পরিবেশ সংক্রান্ত অনুমতি দিতে সমস্যা খাড়া করেছে। কৃষ্ণনগরের সভায় মোদীর মন্তব্য, ‘‘এরা বলছে, অনুমোদন কেন নিইনি? পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের তোলাবাজদের, জমি মাফিয়াদের লুটের গুন্ডাগিরির অনুমতি আছে। এত বড় হাসপাতালের জন্য তৃণমূল সরকার পরিবেশ সংক্রান্ত অনুমতি দিতে সমস্যা করছে। কমিশন না পেলে তৃণমূল সব বিষয়ে আটকে দেয়। প্রথমে কমিশন, পরে পারমিশন।’’
সূত্রের খবর, এমসের পরিবেশ সংক্রান্ত অনুমোদনের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা ঝুলে রয়েছে। বিষয়টি শুধু রাজ্যের এক্তিয়ারেও নেই। ২০১৬-এ কল্যাণীর বসন্তপুরে রাজ্য সরকারের দেওয়া প্রায় ৮০০ একর জমিতে হাসপাতাল তৈরির কাজ শুরু করার সময়েই, পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্রের আবেদন করেন এমস কর্তৃপক্ষ। তা গৃহীত হয়নি।
২৫ ফেব্রুয়ারি কল্যাণী এমস উদ্বোধনের আগের দিন রাজ্য দুষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে সাংবাদিক সম্মেলন করে জানানো হয় যে, তাদের পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্র নেই। শুধু তা-ই নয়, ছাড়পত্র ছাড়াই কাজ শুরু করায় পরিবেশের ক্ষতির কথা জানিয়ে পরিবেশ মন্ত্রকের নির্দেশিকা অনুযায়ী ১৫ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। তা না মিটিয়ে এমস কর্তৃপক্ষ জরিমানায় ছাড়ের আর্জি জানান। সে সময়ে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক জানায়, জরিমানা মিটিয়েই ছাড়পত্র নিতে হবে। সুপ্রিম কোর্টও জরিমানায় ছাড় না দেওয়ার নির্দেশ দেয়। ছাড়পত্র না নিয়ে নির্মাণকাজ শুরু করার জন্য রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ মামলা দায়ের করেছে। তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবাশীষ গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “এক জন প্রধানমন্ত্রী কী ভাবে বিচারাধীন বিষয়ে ছাড়পত্র না নিয়ে আবার সাফাই গাইছেন, সেটাই বাংলার মানুষ বুঝতে পারছে না।” জবাবে বিচারাধীন বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার। তিনিও প্রধানমন্ত্রীর সুরেই বলেন, ‘‘এত বড় একটা হাসপাতালকে ছাড়পত্র না দিয়ে ফেলে রাখার চেষ্টাতেই বোঝা যাচ্ছে, তৃণমূল বাংলার উন্নতি চায় না।’’