(বাঁ দিকে) রাহুল গান্ধী। নরেন্দ্র মোদী (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
দেশের সংবিধান পাল্টে দেওয়ার লক্ষ্যেই ‘চারশো পার’-এর স্লোগান তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী— লোকসভা ভোটের প্রচারে ধারাবাহিক ভাবে এই অভিযোগ তুলেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী-সহ বিরোধীরা। ‘জবাবে’ এ বার ভারতীয় সংবিধান বদলের ইতিহাস তুলে ধরে গান্ধী-নেহরু পরিবারকে নিশানা করলেন মোদী। বৃহস্পতিবার তাঁর মন্তব্য, ‘‘নেহরু-গান্ধী পরিবার চার প্রজন্ম ধরে সংবিধানকে ধ্বংস করেছে।’’
রাহুল শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসিতে ‘ইন্ডিয়া’-র সভায় বলেছিলেন, ‘‘বিজেপি এ বার লোকসভা ভোটে জিতে গেলেই ভারতের সংবিধানকে ধ্বংস করবে।’’ বাবাসাহেব অম্বেডকরের আদর্শকে মুছে দিয়ে সংবিধানে সাম্প্রদায়িকতার ছোঁয়া আনতেই মোদী ৪০০ আসনে জেতার কথা বলছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। রাহুলের ওই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পরেই ‘ইন্ডিয়া টুডে’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মোদীর মন্তব্য, ‘‘দেশে প্রথম বার সংবিধান বদল করেছিলেন কে? জওহরলাল নেহরু। বাক্স্বাধীনতার উপর রাশ টানতেই প্রথম বার সংশোধন করা হয়েছিল সংবিধান।’’
রাহুল গান্ধীর ঠাকুমা ইন্দিরা আদালতের রায়কে উল্টে দিয়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন বলে অভিযোগ করেন মোদী। সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘ওঁর (রাহুল) পিতা রাজীব গান্ধী কী করেছিলেন? শাহবানো মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায় এড়ানোর জন্য সংবিধান সংশোধনের বিল পাশ করিয়েছিলেন।’’ ২০১৩ সালে রাহুল গান্ধী যে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকারেরই অর্ডিন্যান্স ছিঁড়ে ফেলার কথা প্রকাশ্যে বলেছিলেন, সে কথাও মনে করিয়ে দেন মোদী।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, কোনও মামলায় দু’বছরের বেশি সাজা পেলে বিধায়ক বা সাংসদের সদস্যপদ তখনই খারিজ হয়ে যায়। শুধু তা-ই নয়, সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে ছ’বছর আর ভোটে দাঁড়াতে পারেন না তাঁরা। কিন্তু ২০১৩-য় পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির একটি মামলায় আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদের জেলের সাজা হওয়ার পরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সরকার তাঁকে বাঁচাতেই সুপ্রিম কোর্টের রায় কার্যকর করা ঠেকাতে সক্রিয় হয়েছিল বলে অভিযোগ। সরকার অর্ডিন্যান্স জারি করার পরে রাহুল প্রকাশ্যে তা ছিঁড়ে ফেলতে বলেছিলেন। এর পরেই পিছু হটে অর্ডিন্যান্স প্রত্যাহার করেছিল মনমোহন সরকার।