গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ফোন এল কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায়ের কাছে। মঙ্গলবার রাতে পাঁচ মিনিটের কথোপকথনে কৃষ্ণনগরের ‘রাজবধূ’কে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কথাবার্তা হয় বাংলার ‘দুর্নীতি’ নিয়েও। অমৃতার ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্রের কথাও তাঁকে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
গত লোকসভা ভোটে কৃষ্ণনগর থেকে বিজেপি প্রার্থী করেছিল কল্যাণ চৌবেকে। কিন্তু ৭৫ হাজারের বেশি ভোটে তাঁকে পরাজিত করে সংসদে যান মহুয়া। সংসদে বিজেপির বিরুদ্ধে ঝাঁঝালো আক্রমণ শানিয়েছেন। সাংসদের মেয়াদ শেষের সময় পাল্টা মহুয়ার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় হয় লোকসভা। এথিক্স কমিটি থেকে লোকপাল হয়ে কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্তের আওতায় সংসদ থেকে বহিষ্কৃত মহুয়া। যদিও তৃণমূল তাঁকে দ্বিতীয় বার টিকিট দিয়েছে একই লোকসভা আসন থেকে। অন্য দিকে, মহুয়ার বিরুদ্ধে প্রার্থী নির্বাচনে ‘চমক’ দিয়েছে বিজেপি। মহুয়ার বিরুদ্ধে লড়াইকে ‘অন্য লড়াই’ বলেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রীও। তিনি কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির সদস্যা অমৃতাকে ‘জোশ’ নিয়ে নির্বাচনের ময়দানে নামার বার্তা দিয়েছেন। সূত্রের খবর, কৃষ্ণনগরের কেন্দ্রের ‘গুরুত্ব’ বুঝিয়ে দেন প্রধানবর্তী। এ ছাড়া রাজনীতিতে আনকোরা বিজেপি প্রার্থীকে ভবিষ্যতেও ‘গাইড’ করার কথা দেন মোদী। যা নিয়ে উচ্ছ্বসিত অমৃতা নিজেও। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার পর বুধবার তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘ময়দানে লড়াই হবে।’
বিজেপি সূত্রে খবর, রাজনীতির অভিজ্ঞতা না-থাকা কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির বধূ অমৃতার নাম ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ভোট রাজনীতির অঙ্ক বুঝিয়ে চলেছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। মঙ্গলবার জেলা বিজেপি দফতরে বসে নেতারা ঠিক করে দেন, কী ভাবে লড়াই হবে কৃষ্ণনগরে। এরই মধ্যে মঙ্গলবার বিজেপি প্রার্থী অমৃতার কাছে আসে মোদীর ফোন। অল্প সময়ই কথা হয় দু’জনের।
কী কী কথা হল মোদীজীর সঙ্গে? আনন্দবাজার অনলাইনকে এই প্রশ্নের জবাবে বিজেপি প্রার্থী অমৃতা বলেন, ‘‘সাংঘাতিক জোশ পেলাম। সাহস পেলাম। খুবই আনন্দ পেয়েছি। ওঁর মতো এক জন আমাকে গাইড করছেন, ভেবে ভাল লাগছে। উনিই আমার অনুপ্রেরণা।’’ কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থীর সংযোজন, ‘‘যদিও উনি বলেছেন, ‘আমি কেউ নই।’ লোকের কাছে গিয়ে আশীর্বাদ নেওয়াটাই আসল অনুপ্রেরণা।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অমৃতার এক রাজনৈতিক পরামর্শদাতা আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী মোদী অমৃতাকে ফোন করে বলেন, ‘বিজেপি পরিবারের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। মনে রাখবেন কেন্দ্রটা কৃষ্ণনগর। এটা মহুয়ার লোকসভা। এখানে কিন্তু অন্য লড়াই লড়তে হবে।’’’ ওই বিজেপি নেতা আরও বলেন, ‘‘মোদী জানিয়েছেন দল সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে অমৃতার পাশে থাকবেন। কখনও নিজেকে অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যেন না-ভাবেন অমৃতা। পাল্টা মোদীজিকে ধন্যবাদ জানান অমৃতা। তবে জয়-পরাজয়ের দায়িত্ব দলের উপরই ছেড়েছেন তিনি।’’ গোটা বিষয়টি নিয়ে মহুয়া মৈত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে আনন্দবাজার অনলাইন। তৃণমূল প্রার্থীর কটাক্ষ, ‘‘ভিত্তিহীন প্রসঙ্গ নিয়ে মন্তব্য করার কিছু নেই। কে কোথায় কাকে ফোন করবে তাতে আমার কী এসে যায়! আসল লড়াই হবে ময়দানে।’’