প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
গত এক মাস ধরে দৈনিক গড়ে তিনটি জনসভা করে তাঁর গলা ভেঙে গিয়েছে। তা বলে বক্তৃতায় আক্রমণের ঝাঁঝ কমেছে এমনটা একেবারেই নয়। লোকসভা নির্বাচনের শেষের দিক এসে আজ উত্তরপ্রদেশের শ্রাবস্তী থেকে দিল্লির দ্বারকা—কংগ্রেস তথা বিরোধীদের আক্রমণ শুধু তীব্রতরই করলেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, এমন এক পর্যায়ে নিয়ে গেলেন যা তাঁর চরম মরিয়া ভাবকেই আরও বেশি করে তুলে ধরল, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।
আজ সকালে শ্রাবস্তীতে জনসভায় মোদী বলেছেন, “কংগ্রেস-সমাজবাদী পার্টি (এসপি) ক্ষমতায় এলে আপনাদের ব্যাঙ্কের খাতা বন্ধ করে টাকা ছিনিয়ে নেবে। মোদী গ্রামে গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে, তার সংযোগ কেটে সব অন্ধকারে ডুবিয়ে দেবে। মোদী প্রতিটি ঘরের নলে জল পৌঁছে দিয়েছে। ওরা এসে সেই জলের সরবরাহ বন্ধ করে দেবে।”
কী ভাবে নির্বাচিত সরকার এমনটা করতে পারে, তার ব্যাখ্যা অবশ্য দেননি প্রধানমন্ত্রী। পশ্চিম দিল্লির দ্বারকায় সন্ধ্যার প্রচারসভায় মেরুকরণকে নতুন ভাবে নিয়ে এসেছেন মোদী। বলেছেন, “দেশ জানে গত ৬০ বছর জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে তফসিলি জাতি, জনজাতি এবং ওবিসি-র সংরক্ষণ রয়েছে। কিন্তু ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে জেতার জন্য মনমোহন সরকার রাতারাতি জামিয়া মিলিয়াকে সংখ্যালঘু বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণা করে দিল।”
ঘটনা হল, মনমোহন সরকার ২০১১ সালে যখন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, সেই সময় সরকারের মধ্যেও বিষয়টি নিয়ে আপত্তি ছিল। সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠান ঘোষণা হলে তাদের জন্য ৫০ শতাংশ পর্যন্ত আসন সংরক্ষিত হয়ে যায়। এবং তফসিলি জাতি, জনজাতি বা ওবিসি-র জন্য সংরক্ষণ আর থাকে না। ২০১১ সালের আগেই আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়কে সংখ্যালঘুর মর্যাদা দেওয়া নিয়ে আদালতে মামলা চলছিল। তার পর জামিয়া মিলিয়াকে সংখ্যালঘু মর্যাদা দেওয়া নিয়ে দিল্লি হাই কোর্টে মামলা করেছিল বিজেপি, মোদী সরকারে আসার পর। দিল্লি হাই কোর্ট গত বছর এই মামলার শুনানি স্থগিত রেখেছিল কারণ সুপ্রিম কোর্টে আলিগড় নিয়ে মামলার ফয়সলা হয়নি। গত ফেব্রুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্ট আলিগড় নিয়ে মামলার শুনানি শেষ করে রায় সংরক্ষিত রেখেছে।
বিরোধী মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’কে নিশানা করে মোদী বলেন, “কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়া জোটের একটাই কর্মসূচি— পরিবারই প্রথম। আজ দেশে যা যা অশুভ তার প্রতীক ইন্ডিয়া জোট। তারা চরম সাম্প্রদায়িক, পরিবার কেন্দ্রিক। আমাদের দিল্লি এই সাম্প্রদায়িকতার নগ্ন রূপ দেখেছে। কংগ্রেস শিখদের হত্যা করেছিল। যারা দোষী তারা গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরছিল। আমরা তাদের শাস্তি দিই।”