Lok Sabha Election 2024

মোদী-মমতা কী বলেন আজ, অপেক্ষায় দু’দল

স্থানীয় বিজেপি নেতারা ভোট-প্রচারে বেরিয়ে দাবি করছেন, রাজ্য সহায়তা ‘না করাতেই’ সে ভাবে উন্নয়নের কাজ করা যায়নি কোচবিহারে। কিন্তু প্রশ্ন রয়েছে, নারায়ণী রেজিমেন্ট তৈরির মতো একাধিক বিষয়ে রাজ্যের কোনও ভূমিকাই নেই।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৪ ০৫:৩৯
Share:

(বাঁ দিকে) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

প্রশ্নগুলো কঠিন। উত্তরও অজানা। তাই সেনাপতিদের মুখের দিকে তাকিয়ে দু’দলের নেতা-কর্মীরা। বিজেপি এবং তৃণমূল। আজ, বৃহস্পতিবার দুই দলের দুই সেনাপতি ঘণ্টা তিনেকের হেরফেরে পৌঁছবেন কোচবিহারে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেলা ১২টা নাগাদ সভা করার কথা মাথাভাঙার গুমানিরহাট হাই স্কুলের মাঠে। কোচবিহার সদরে রাসমেলার মাঠে বিকেল ৩টে নাগাদ সভা করার কথা প্রধানমন্ত্রী তথা বিজেপির প্রধান মুখ নরেন্দ্র মোদীর। তাই দু’পক্ষে সাজ-সাজ রব। অপেক্ষা দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বার্তার।

Advertisement

বিজেপি সূত্রের খবর, কোচবিহার লোকসভা আসনে এ বারের দলীয় প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিককে নিয়ে দলের একাংশের ক্ষোভ রয়েছে। ‘ক্ষুব্ধদের’ দাবি, সেনাবাহিনীতে নারায়ণী রেজিমেন্ট তৈরি, কোচবিহারে বীর চিলা রায়ের মূর্তি স্থাপন, ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার মূর্তি স্থাপন থেকে শুরু করে রাজবংশী ভাষাকে অষ্টম তফসিলের আওতায় আনার মতো যে সব আশ্বাস নিশীথ এবং বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একাংশ দিয়েছিলেন, তার কোনওটাই বাস্তবায়িত হয়নি। নিউ কোচবিহারে রেলের জমিতে যে ‘স্পোর্টস হাব’ তৈরির কাজ নিশীথ শুরু করেন, তা-ও থমকে রয়েছে।

স্থানীয় বিজেপি নেতারা ভোট-প্রচারে বেরিয়ে দাবি করছেন, রাজ্য সহায়তা ‘না করাতেই’ সে ভাবে উন্নয়নের কাজ করা যায়নি কোচবিহারে। কিন্তু প্রশ্ন রয়েছে, নারায়ণী রেজিমেন্ট তৈরির মতো একাধিক বিষয়ে রাজ্যের কোনও ভূমিকাই নেই। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্র কী করল? ‘গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশন’-এর নেতা নগেন্দ্র রায় তথা অনন্ত মহারাজকে বিজেপি রাজ্যসভার সাংসদ করেছে। তিনি বারে বারে দাবি করেছেন, বিজেপি সরকার কোচবিহারকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। লোকসভা ভোটের বাদ্যি বাজতে অনন্ত সুর বদলে বলেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তাঁকে জানিয়ে দিয়েছেন, কোচবিহার কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হবে না। তা নিয়ে অনন্তের অনুগামী রাজবংশীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। কোচবিহারের মতো রাজবংশী-প্রধান জেলায় এ ক্ষোভ মেটাবেন কী ভাবে, মোদীর বার্তায় সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজবেন বলে জানিয়েছেন জেলা বিজেপির নেতাদের একাংশ।

Advertisement

দল সূত্রের দাবি, তৃণমূলের অন্দরেও অস্বস্তি কম নয়। কোচবিহার জেলাতেই রাজ্যের শিক্ষা ক্ষেত্রে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে প্রথম হইচই শুরু হয়। তাতে আদালতের নির্দেশে মেখলিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক পরেশ অধিকারীর মেয়ের চাকরি গিয়েছে। তা ছাড়া, একশো দিনের প্রকল্পে শাসক দলের একাংশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও উঠেছে কোচবিহারের একাধিক গ্রামে। যা নিয়ে তৃণমূল নেতাদের অনেকে ঘনিষ্ঠ মহলে বলছেন, “লোকে সে সব নিয়ে জানতে চাইলে কী বলব! লক্ষ্মীর ভান্ডারে টাকা বাড়ানো, একশো দিনের প্রকল্পে কেন্দ্রের টাকা রাজ্য দিয়েছে বললেই কি সবার মুখ বন্ধ হবে?”

তৃণমূলের কোচবিহার জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ বলেন, “কিছু সমস্যা রয়েছে। তা নিয়ে দিশা দেখাবেন আমাদের সর্বোচ্চ নেত্রী, এটুকু বলতে পারি।” বিজেপির কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে-র দাবি, “প্রধানমন্ত্রী যা কথা দিয়েছিলেন, সব পূরণ করেছেন। তবে নতুন কী বার্তা দেন, তার অপেক্ষা করছেন সবাই।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement