Lok Sabha Election 2024

পান ও ফুল চাষিরাই নির্ণায়ক শক্তি

দুয়ারে লোকসভা ভোট। প্রতি কেন্দ্রে সাতটি করে বিধানসভা রয়েছে। রইল বিধানসভাভিত্তিক পরিক্রমা।

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল

তমলুক শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২৪ ০৮:৫৪
Share:

নন্দকুমারে পানের বরজ। —নিজস্ব চিত্র।

জেলা সদর রয়েছে এই লোকসভা কেন্দ্রে। পাশাপাশি, এই কেন্দ্রেই রয়েছেন বিজেপির প্রার্থী তথা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলা নিয়ে যাঁর রায়ে রাজনীতির ময়দানে এখনও জলঘোলা হচ্ছে। পূর্ব মেদিনীপুরের সেই অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যেই রয়েছে তমলুক বিধানসভা। এই এলাকায় অধিকাংশ বাসিন্দা বাসিন্দা জীবিকা জন্য পান, ফুল, মাছ চাষের উপর নির্ভর করলেও পান এবং ফুল এখনও সরকারি ভাবে কৃষি পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি। তাই এই বিধানসভা এলাকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের প্রচারে উঠে এসেছে পান, আনাজ, মাছ চাষের উন্নয়নের জন্য নানা পরিকল্পনার কথা।

Advertisement

পূর্ব মেদিনীপুরে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে কলকারাখানায় কাজের পাশাপাশি তমলুক ও হলদিয়া মহকুমার বেশিরভাগ পরিবার ধান, পান, ফুল ও আনাজ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এছাড়া, তমলুক মহকুমার ময়না, তমলুক, নন্দকুমার, নন্দীগ্রাম-১ ও ২ ব্লকে মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন বেশ কয়েক হাজার পরিবার। তমলুকের পানের সুখ্যাতি রয়েছে বিভিন্ন রাজ্য-বিদেশে। প্রতি বছর কয়েকশো কোটি টাকার পান রফতানি হয়। কিন্তু জেলার এই অন্যতম অর্থকরী ফসল পান ও ফুল সরকারিভাবে কৃষি পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি না পাওয়ায় ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ঘোষণা হয় না। নেই সরকারি উদ্যোগে পানের সংরক্ষণ ব্যবস্থা।

স্থানীয় চাষিরা জানাচ্ছেন, তমলুক বিধানসভা এলাকার মধ্যে শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক ও তমলুক ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় মিঠা, বাংলা ও সাঁচি পানের চাষ হয়। শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে জুঁই, বেল ও তমলুক ব্লকে বাহারি পাতাও চাষ হয়। পান ও ফুলের দাম পুরোটাই নির্ভর করে রয়েছে বেসরকারি বাজারের উপরে। তাতে চাষিরা হামেশাই দামের দিকে থেকে মার খান বলে দাবি। তমলুকের এসইউসি প্রার্থী তথা ফুল চাষিদের নেতা নারায়ণচন্দ্র নায়ক বলছেন, ‘‘পান ও ফুলের সংরক্ষণের জন্য হিমঘর, গবেষণা কেন্দ্র হয়নি। পান, ফুলজাত বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনের জন্য কারখানা তৈরিতে উদ্যোগী হয়নি কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার।’’

Advertisement

রাজনৈতিক মহল মনে করাচ্ছে, তমলুক বিধানসভায় শহর ছাড়া রয়েছে শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের পুরো এলাকা এবং চারটি পঞ্চায়েত। শহিদ মাতঙ্গিনী, তমলুক ব্লকের প্রায় পুরো এলাকা পান ও ফুল চাষে নির্ভরশীল। গত ২০২১ সালে বিধানসভার ভোটে তমলুক বিধানসভায় তৃণমূল জয়ী হলেও ব্যবধান ছিল মাত্র ৫০০টি ভোটের। আর গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূলের হাতছাড়া হয়ে যায়। ফলে এবার লোকসভা ভোটে শাসকদল এবং বিজেপি পান ও ফুল চাষিদের মন জয় করতে চেষ্টা করছেন। বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সাধারণ সম্পাদক বামদেব গুছাইত বলছেন, ‘‘পান ও ফুল চাষিদের সমস্যা রয়েছে। পান ও ফুলকে কৃষিপণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিতে শুভেন্দু অধিকারী ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াতকে চিঠি দিয়েছেন।’’

অন্যদিকে, সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, ‘‘আমরা সরকারে থাকার সময়ে পাঁশকুড়ায় ফুল বাজার তৈরি করেছিলাম। কিন্তু তৃণমূল রাজ্য সরকারের আমলে সেই ফুল বাজার যথাযথ পরিচালনা ও উন্নয়ন করতে ব্যর্থ।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement