তিরুচিরাপল্লীর প্রার্থী এস দামোদরন। ছবি: সংগৃহীত।
গরমে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে লোকজনের সঙ্গে কথা বলছেন। সব্জি বিক্রেতাদের কাছে গিয়ে শুনছেন তাঁদের সমস্যার কথা। আশ্বাস দিচ্ছেন সময় বদলে দেওয়ার। ভোটের আগে এই ছবি বিরল নয়। রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের হামেশাই এই ধরনের জনসংযোগ করতে দেখা যায়। তবে তামিলনাড়ুর তিরুচিরাপল্লীতে এই কাজটিই করতে দেখা গেল রাজনীতির ময়দানে অপেক্ষাকৃত কম পরিচিত এক জনকে। তিনি ৬২ বছরের প্রৌঢ় এস দামোদরন। দু’বছর আগে তাঁর জনহিতকর কাজের জন্য ভারত সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করেছে।
তিরুচিরাপল্লী থেকে এ বছর নির্দল প্রার্থী হিসাবে ভোটে দাঁড়িয়েছেন দামোদরন। তাঁর নির্বাচনী প্রতীক চিহ্ন গ্যাস স্টোভ। শুক্রবার সকালে তিরুচিরাপল্লীর গান্ধী মার্কেটে তাঁকে ভোটের প্রচারে দেখা গিয়েছে। প্রচারের ময়দানে দামোদরন ‘একাই একশো’। নিজেই নিজের হয়ে ভোট চাইছেন ঘুরে ঘুরে। বাজারের সব্জি বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলছেন, কখনও আবার তাঁদের সরিয়ে দিয়ে নিজেই সব্জি নিয়ে ক্রেতার সঙ্গে দরাদরি করছেন। ফুল বিক্রেতার পাশে বসে ফুলের মালা তৈরি করতেও দেখা গিয়েছে এই নির্দল প্রার্থীকে।
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দামোদরন বলেন, ‘‘তিরুচিরাপল্লী কেন্দ্র থেকে আমি নির্দল হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছি। আমি এই এলাকার ভূমিপুত্র। এখানকার জন্য কাজ করতে চাই। এখন আমার বয়স ৬২ বছর। দু’বছর আগে আমি দেশের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের হাত থেকে পদ্মশ্রী পুরস্কার গ্রহণ করেছিলাম। গত ৪০ বছর ধরে আমি অ্যাসোসিয়েটস সার্ভিস ভলান্টিয়ার সাফাইকেন্দ্রে কাজ করেছি। আমার সাফাইয়ের কাজের জন্যই আমাকে সম্মানিত করেছিল দেশের সরকার। এখন আমি আমার কেন্দ্রের জন্যও কাজ করতে চাই।’’
দামোদরন আরও জানান, মাত্র ২১ বছর বয়সে সাফাইয়ের কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। সে সময়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন রাজীব গান্ধী। নিজের দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি ন’বার প্রধানমন্ত্রী বদল হতে দেখেছেন। তিরুচিরাপল্লীতে মানুষের কাছ থেকে প্রবল সাড়া পাচ্ছেন বলেও জানান প্রৌঢ়। তাঁর কথায়, ‘‘এই শহরকে ‘গ্রিন সিটি’ হিসাবে গড়ে তুলতে হবে। মানুষ আরও উন্নত রাস্তা এবং উড়ালপুল চাইছেন। তার জন্য আমাদের সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’’
পদ্মশ্রী দেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান। দক্ষিণ ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রত্যন্ত গ্রাম এবং শহুরে বস্তিতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করেছেন দামোদরন। সমাজকর্মী হিসাবেই তাই তাঁকে নাগরিক সম্মান দেওয়া হয়েছে। এ বার তিনি ভোটেও লড়তে চলেছেন।