—প্রতীকী চিত্র।
নারী দিবসে প্রধানমন্ত্রীর রান্নার গ্যাসের দাম কমানোর ঘোষণা আসলে নির্বাচনের রাজনীতি। তেমনই দাবি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির। ৯৩০ টাকার এলপিজি সিলিন্ডার ৮৩০ টাকা হওয়া কিংবা প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনায় ভর্তুকির পরিমাণ বৃদ্ধিকে আদৌ জনকল্যাণ বলতে রাজি নয় বিরোধীরা।
এখন থেকে উজ্জ্বলা যোজনাভুক্ত গ্রাহকেরা রান্নার গ্যাস পাবেন সিলিন্ডার পিছু ৫১০ টাকা দামে। সম্প্রতি দু’দফায় মোট ৩০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে উজ্জ্বলা ভর্তুকি। সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি এবং পেট্রল, ডিজেল, রান্নার গ্যাস-সহ যাবতীয় জ্বালানি নিয়ে নাজেহাল জনসাধারণকে লোকসভা নির্বাচনের আগে খুশি করতেই কেন্দ্রের ওই সিদ্ধান্ত বলে দাবি বিরোধী রাজনৈতিকগুলির। তাদের দাবি, নির্বাচনের আগে গ্যাসের দাম কমানো আসলে ‘গিমিক’, ‘চমক’, ‘স্টান্ট’। তৃণমূলের নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “এটা বিজেপির নির্বাচনী স্টান্টবাজি। ওরা ক্ষমতায় ফিরতে পারলে গ্যাসের দাম আবার হাজার টাকা বাড়িয়ে দেবে। বিজেপি গরিবের কথা নয়, ধনী ব্যবসায়ীদের হয়ে কাজ করে।’’
গ্যাসের দাম কমানো নিয়ে নদিয়া ডিস্ট্রিক চেম্বার অব কমার্স, ইন্ড্রাস্ট্রি অ্যান্ড ট্রেডের যুগ্ম সম্পাদক গোকুলবিহারী সাহা বলেন, ‘‘মানুষ এখন চালাকি বুঝতে পারেন। হাজার টাকা বাড়িয়ে ১০০ টাকা কমানোর অঙ্ক সবাই ধরতে পারছেন।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘করোনার সময় যে গ্যাসের সিলিন্ডার ছিল ৫৮৫ টাকা সেটাই পরের তিন বছরে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ১১০০ টাকা ছাড়িয়ে গেল। এখন নির্বাচনের মুখে ১০০ টাকা দাম কমিয়ে কি নির্বাচন পরবর্তী সময়ে দাম বাড়ানোর ক্ষেত্র প্রস্তুত করা হল?”
সিপিএমের নদিয়া জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য সুমিত বিশ্বাস বলেন, “মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার আগে গ্যাসের দাম ছিল সিলিন্ডার পিছু ৪৪০ টাকা। সেটা বাড়তে বাড়তে ১১০০ টাকার বেশি করে এখন ১০০ টাকা কমানো নির্বাচনী চমক ছাড়া আর কি? আন্তর্জাতিক বাজারে যখন প্রাকৃতিক তেল ও গ্যাসের দাম কমেছে তখনও আমাদের দেশে ব্যতিক্রমী ভাবে দাম বেড়েছে গ্যাসের, কিছু শিল্পপতির স্বার্থে। এখন মানুষকে বোকা বানানো হচ্ছে।” জেলা কংগ্রেস সভাপতি অসীম সাহা গ্যাসের এই দাম কমানোকে তাৎক্ষনিক সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার সস্তার রাজনীতি বলে মন্তব্য করেছেন। জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র সিলভি সাহা বলেন, “গত পাঁচ বছর ধরে গ্যাসের আকাশছোঁয়া দামের জন্য আমরা রান্নাঘরে যে ভাবে ভুগছি। তার প্রভাব যাতে নির্বাচনে না-পড়ে তার জন্য ১০০ টাকার টোপ দেওয়া হচ্ছে। সচেতন মানুষ এই টোপ গিলে বোকা হবে না।” যদিও বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, “কেন্দ্রীয় সরকার খুশি মতো গ্যাসের দাম কমাতে বা বাড়াতে পারেন না। আন্তর্জাতিক বাজারের দাম অনুযায়ী তা নির্ধারিত হয়। দাম বাড়লে মানুষের অসুবিধা হয়। নরেন্দ্র মোদী সরকার সেই অসুবিধার কথা মাথায় রেখেই দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।” লোকসভা নির্বাচনে এর প্রভাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি এমনই জিতবে। তার জন্য গ্যাসের দাম কমাতে হবে না।”