—প্রতীকী ছবি।
সপ্তম তথা শেষ দফার নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু ভাবে হয় এবং কমিশন যাতে কার্যকর ভূমিকা নেয়, তার জন্য নির্বাচন কমিশনের উপরে চাপ বাড়াল দুই বিরোধী দল সিপিএম এবং বিজেপি। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) কাছে অভিযোগ জানাতে গেলেও তিনি প্রথমে দেখা না করায় বৃহস্পতিবার তাঁর দফতরের বাইরে বেশ কিছু ক্ষণ অবস্থান করলেন সিপিএম নেতারা। সন্ধ্যায় অভিযোগপত্রের তালিকা নিয়ে গিয়ে ষষ্ঠ দফার ভোটের পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, সে জন্য কমিশনকে সতর্ক করে এলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রবীন দেব, শমীক লাহিড়ী, দলের রাজ্য কমিটির সদস্য সুখেন্দু পানিগ্রাহীরা এ দিন কমিশনে গিয়েছিলেন। কমিশনের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে শমীকের অভিযোগ, ‘‘আমাদের কোনও অভিযোগের জবাব দিতে পারেননি সিইও। ফোন করলে ফোন ধরছেন না, মেসেজ করলে উত্তর দিচ্ছেন না। তৃণমূলের ইশারায় চলছে কমিশন!” পঞ্চায়েতের মতো এ বারেও গণনা-কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসকে ‘ভোট লুট’ করার সুযোগ দিচ্ছে কমিশন, এমন অভিযোগও করেছেন শমীকেরা। নিষেধ সত্ত্বেও যাদবপুর কেন্দ্রের টালিগঞ্জ বিধানসভায় গণনার কাজে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের ‘প্রমাণ’-ও এ দিন সিইও-কে দিয়েছে সিপিএম। এ সবের প্রেক্ষিতে দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের হুঁশিয়ারি, ‘‘দক্ষিণবঙ্গে বিজেপি নেই। নির্বাচন কমিশন যদি মনে করে বিজেপি বাজারে নেই বলে তারা চুপ করে বসে থাকবে, তা হলে তারা ভুল ভাবছে! মানুষ এ বার পাড়ায় পাড়ায় তৃণমূলের ছোট মস্তানদের বুঝে নেবেন, পুলিশ বা কমিশনের অপেক্ষা করবেন না!’’
কালীঘাট, পাটুলি থানার ওসি-দের সরানোর দাবি জানানো হলেও, কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, সে প্রশ্নও তুলেছে সিপিএম। এই সূত্রেই কালীঘাটে একাধিক বার দলীয় কর্মসূচিতে তাঁরা যে ‘বাধার’ মুখে পড়েছিলেন, তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে রবীনের অভিযোগ, “নির্বাচনে সবার সমান সুযোগ পাওয়ার কথা। কিন্তু এখানে পক্ষপাতিত্ব হচ্ছে। দাবি সত্ত্বেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।”
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সন্ধ্যায় কমিশনে গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুও। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়, শিশির বাজোরিয়া। শুভেন্দুর অভিযোগ, ষষ্ঠ দফার ভোটের ক্ষেত্রে পুলিশ অন্তত ৫০ জন বিজেপির পোলিং এজেন্ট ও কর্মীদের আটকেছিল, অন্তত ৩০০টি বাড়িতে গিয়ে তল্লাশি চালিয়েছিল। সিইও-র কাছ থেকে প্রয়োজনীয় আশ্বাস মিলেছে দাবি করেও, কয়েক জন রিটার্নিং অফিসারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর বক্তব্য, “নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, গণনার ৭২ ঘণ্টা আগে কাউন্টিং এজেন্টের নাম দিতে হয়। কিন্তু কিছু রিটার্নিং অফিসার ৩০ তারিখের মধ্যে এজেন্টদের নামের তালিকা চাইছেন। এত তাড়াহুড়ো কিসের? এজেন্টদের তালিকা নিয়ে ওরা আসলে গ্রেফতার করতে চায়।” ষষ্ঠ দফায় ৪৭৪টি বুথে ক্যামেরা বন্ধ ছিল বলে অভিযোগ করে বিজেপির প্রতিনিধিদল। বিজেপি সূত্রের খবর, সিইও দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, সুন্দরবনের কিছু প্রত্যন্ত অঞ্চলে বুথে ক্যামেরা থাকবে না। সেই সব বুথের তালিকা চেয়েছে বিজেপি। শুভেন্দু বলেন, “৪০টির মতো বুথে ক্যামেরা রাখা যাবে না। বিজেপি ওই বুথগুলিতে বিজেপি ভোটের দিন বিশেষ নজর রাখবে।”