তৃণমূলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তথা তারকেশ্বরের বিধায়ক রামেন্দু সিংহ রায়। ছবি: ফেসবুক।
কোনও অবস্থাতেই কারও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা যাবে না। সম্প্রতি তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে এমনই কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে দলের সর্বস্তরে। আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা তারকেশ্বরের বিধায়ক রামেন্দু সিংহ রায় রামমন্দিরকে নিয়ে একটি বির্তকিত মন্তব্য করেন। সেই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিজেপি পাল্টা আক্রমণ শানাতে শুরু করেছে। তৃণমূল নেতৃত্বের কথায়, লোকসভা ভোটের আগের বিজেপিকে ধর্মীয় রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া চলবে না। তাই দলের সর্বস্তরের নেতাকে ধর্মীয় বক্তৃতা থেকে ক্ষেত্রে বিরত থাকতে হবে।
সম্প্রতি এক সভায় অযোধ্যার রামমন্দির প্রসঙ্গে বিধায়ক রামেন্দু বলেন, ‘‘এই যে রামমন্দির তৈরি হয়েছে। অপবিত্র ওই রামমন্দিরে ভারতবর্ষের কোনও হিন্দু যেন পুজো দিতে না যায়। ওটা একটা শো পিস তৈরি হয়েছে।’’ তৃণমূল বিধায়কের এমন মন্তব্যের ভিডিয়ো নিজের এক্স হ্যান্ডেল পোস্ট করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সঙ্গে তিনি লেখেন, ‘‘এটাই তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের আসল প্রকৃতি। হিন্দুদের আক্রমণ করতে করতে তাদের দুঃসাহস এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে এখন তারা ভগবান শ্রী রামের পুণ্যময় মন্দির যা হিন্দুদের পবিত্র পীঠস্থান, সেই মন্দির কে ‘অপবিত্র’ আখ্যা দেওয়ার ধৃষ্টতা দেখাচ্ছে। তারকেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক রামেন্দু সিনহা রায়, যিনি আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল সভাপতিও, তিনি বলছেন কিনা রামমন্দির অপবিত্র। তিনি আরও বলেছেন যে কোনও ভারতীয় হিন্দুরই এমন অপবিত্র স্থানে পূজা দিতে যাওয়া উচিত নয়। আমি শুধুমাত্র ওনার এই অবমাননাকর বক্তব্যের তীব্র নিন্দা করেই বিরত থাকছি না, বরং এমন ঘৃণ্য বিবৃতি দিয়ে সারা বিশ্বের হিন্দুদের অনুভূতিতে আঘাত হানার জন্য এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’ কথা মতো তৃণমূল বিধায়কের নামে এফআইআর দায়ের করেন তিনি।
তাঁর এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পরেই বিভিন্ন হিন্দু সংগঠনের তরফে রামেন্দুর বক্তৃতার সমালোচনা শুরু হয়। অখিল ভারতীয় সন্ত সমিতি বিবৃতি দিয়ে বলে, ‘‘তৃণমূল নেতা রামেন্দু সিংহ রায়ের মন্তব্যে ভগবান শ্রীরামের জন্মভূমিকে নিয়ে সনাতন হিন্দু ধর্ম ও ধর্মাবলম্বীদের অপমান করা হয়েছে, তার আমরা তীব্র নিন্দা করি।’’ ধর্মীয় সংগঠনগুলির এমন প্রতিক্রিয়ার পরেই সর্বস্তরের দলীয় নেতৃত্বকে ধর্ম সংক্রান্ত বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে নিষেধ করা হয়েছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ব্রিগেড সমাবেশ সফল করতে দলের রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকেও বিরোধী রাজনৈতিক দলের ফাঁদে পা না দেওয়ার পাশাপাশি, বির্তকিত মন্তব্য না করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তৃণমূলের এক প্রবীণ বিধায়কের কথায়, ‘‘দলের নির্দেশ একেবারে সঠিক। কোনও ধর্মকেই আঘাত করা উচিত নয়।’’