Narendra Modi

মোদীর মঞ্চে থাকবেন অনন্ত, তবে রাজবংশী সংগঠনকে পাবে না বিজেপি! কোচবিহার সভার প্রস্তুতি তুঙ্গে

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে বিশেষত কোচবিহারের ফলাফল পার্থক্য তৈরি করেছিল রাজবংশী ভোট। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকেই পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছিলেন জিসিপিএ এবং তার শীর্ষনেতা অনন্ত।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৪ ২৩:০৫
Share:

কোচবিহারে মোদীর সভার প্রস্তুতি। —নিজস্ব ছবি।

নিশীথ প্রামাণিকের সমর্থনে বৃহস্পতিবার কোচবিহারে জনসভা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। লোকসভা নির্বাচনে এ বারও নিশীথের উপরই ভরসা রেখেছে বিজেপি। ভোটঘোষণার পর কোচবিহার থেকেই পশ্চিমবঙ্গে প্রচারসভা শুরু করছেন মোদী। অনেকের মতে, রাজবংশী ভোট ‘দখলে’ রাখতে কোচবিহারকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে পদ্মশিবির। তাই মোদীর জনসভার জায়গা হিসাবে প্রথমেই কোচবিহারকে বাছা হয়েছে। বৃহস্পতিবার কোচবিহারের রাসমেলা ময়দানে মোদীর সভার প্রস্তুতি তুঙ্গে। তবে মোদী-মঞ্চে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ অনন্ত মহারাজকে দেখা গেলেও রাজবংশী সংগঠন জিসিপিএ-কে দেখা যাবে না বলেই স্থানীয় সূত্রে খবর।

Advertisement

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে বিশেষত কোচবিহারের ফলাফল পার্থক্য তৈরি করেছিল রাজবংশী ভোট। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকেই পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছিলেন জিসিপিএ এবং তার শীর্ষনেতা অনন্ত। কোচবিহারে জিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হন নিশীথ। পাঁচ বছর আগে বিজেপি এই কোচবিহারে জিসিপিএ সংগঠনের যে স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন পেয়েছিল, এ বার তা নিয়েই সংশয় দেখা দিয়েছে বিজেপির অন্দরে।

জিসিপিএ সংগঠনের অভিযোগ, গত পাঁচ বছরে রাজবংশীদের জন্য কিছুই করেনি বিজেপি। জিসিপিএ সংগঠনের দাবি ছিল, পৃথক রাজ্যের। ২০১৯ সালে সেই দাবিকে সামনে রেখেই বিজেপিকে সমর্থন জানিয়েছিল তারা। কিন্তু পাঁচ বছর কেটে গেলেও সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। কেন্দ্র থেকে নির্দিষ্ট করে বলে দেওয়া হয় উত্তরবঙ্গ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হচ্ছে না। জিসিপিএ সংগঠনের কথায়, বিজেপি কথা রাখেনি।

Advertisement

একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে কোচবিহারের ‘স্বঘোষিত’ মহারাজ অনন্ত রায়কে কাছে টানতে অনেক কিছুই করতে হয়েছিল বিজেপিকে। স্বয়ং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজবংশী ভোট টানার লক্ষ্যে অনন্তকে মানাতে চলে গিয়েছিলেন মহারাজের অসমের বাড়িতে। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের আগে তিনি কিছুটা বেসুরো। এখন বিজেপির রাজ্যসভা সাংসদ হলেও দলের বিরুদ্ধেই ক্ষুব্ধ অনন্ত। তবে বৃহস্পতিবারের সভায় বিজেপির সাংসদ হিসাবে তিনি থাকলেও জিসিপিএ-এর সমর্থকদের থাকা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

বিজেপির সাংসদ হিসেবে অনন্ত মহারাজ আগামিকাল মোদীর সভায় উপস্থিত থাকলেও থাকছেন না জিসিপিএ-এর সমর্থকেরা। অনন্ত মহারাজ জানান, তিনি সাংসদ হিসাবে সভায় উপস্থিত থাকবেন। কিন্তু জিসিপিএ-এর কেউ থাকছেন না সভায়। তাঁর কথায়, ‘‘এ বার মানুষ ঠিক করবেন তারা কী করবেন।’’ স্বাভাবিক ভাবেই জিসিপিএ-এর সমর্থন হারিয়ে কিছুটা হলেও ব্যাকফুটে বিজেপি। জিসিপিএ-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নির্মল রায় বলেন, ‘‘কেন্দ্রের পক্ষ থেকে যে সমস্ত প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তা কিছুই রক্ষা করেনি তারা। কেন্দ্রীয় সরকার বলেছিল উত্তরবঙ্গ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হবে। সেই প্রতিশ্রুতি তারা রাখেনি। কেন্দ্রীয় সরকার যে হেতু তাদের প্রতিশ্রুতি রাখেনি তাই এ বার বিজেপিকে ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জিসিপিএ।’’

এই বিষয়ে বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বোস বলেন, ‘‘জিসিপিএ একটি স্বতঃস্ফূর্ত স্বাধীন সংগঠন, তারা কী করবে সেটা তাদের সিদ্ধান্ত। তবে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় মানুষের ঢল নামবে। ২০২১ সালে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন তিনি কোচবিহারে আবার আসবেন, তিনি কথা রেখে আবার আসছেন।’’ বিরাজ আরও জানান, বিজেপি রাজবংশীদের যে সমস্ত প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা পূরণ হবে।

উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগেই রাজবংশী অধ্যুষিত ধূপগুড়ি বিধানসভার উপনির্বাচনে জেতা আসন খোয়াতে হয়েছে বিজেপিকে। উপনির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে জেতা নির্মলচন্দ্র রায়কেই লোকসভা ভোটে প্রার্থী করেছে ঘাসফুল শিবির। ফলে রাজবংশী ভোটে বিজেপির একচ্ছত্র আধিপত্য রয়েছে বলা যাবে না। তাই বৃহস্পতিবারের জনসভা বিজেপির কাছে আলাদা গুরুত্ব রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement