প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল ছবি।
ঝড়ের আগে নৈঃশব্দ্য!
প্রায় দু’মাস প্রত্যহ একাধিক জনসভা, একের পর এক দীর্ঘ বক্তৃতা, পদযাত্রা, সমাজমাধ্যমে ধারাবাহিক পোস্ট, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার, শেষ পর্যন্ত কন্যাকুমারীতে ধ্যানপর্বের মধ্যে মোদীময় হয়ে ছিল লোকসভা ভোট। কিন্তু মঙ্গলবার ফল প্রকাশের আগের দিন, চব্বিশ ঘণ্টা ডিএমকে-র প্রয়াত প্রতিষ্ঠাতা কে করুণানিধির জন্মশতবর্ষে একটি রুটিন শুভেচ্ছা জানানো ছাড়া কার্যত অদৃশ্য মোদী! গোটা দিনে তাঁর কোনও নতুন বক্তব্য নেই, ছবি বা বার্তা নেই। যা যথেষ্ট বিরল একটি ঘটনা রাজধানীর রাজনীতিতে। আজ এই প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে কিছুটা হালকা চালে উপরোক্ত ব্যাখ্যাটিই দেওয়া হয়েছে। বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, আগামিকাল সকাল থেকেই মোদী ঝড় উঠতে চলেছে আসমুদ্র হিমাচলে। তাই আজ মোদী নিঃশব্দ। দীর্ঘ প্রচারের পরে আজ বিরতি নিয়েছেন। কালথেকে আবার দেশের রাজনীতির মধ্যমণি তিনি।
২০১৯-এর লোকসভার প্রচার শেষ হয়েছিল ১৭মে। সে দিন কিন্তু অমিত শাহকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় দফতরে এসেছিলেন মোদী। সাংবাদিক বৈঠক করে সে দিন শাহ দাবি করেছিলেন, তাঁরা তিনশো পার করবেন একাই। মোদী অবশ্য স্বভাবসিদ্ধ ভাবেই সাংবাদিক বৈঠকে রা কাড়েননি। তবে আগাগোড়া পাশে বসেছিলেন শাহের।
উল্লেখজনক ভাবে এ বারে অমিত শাহও ভোটের পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে বসলেন না। মোদীও গত বারের মতো এলেন না বিজেপির অফিসে। তবে বুথ ফেরত সমীক্ষার ফল প্রকাশের দিন অর্থাৎ শনিবারই নিজের এক্স হ্যান্ডল থেকে গোটা পাঁচেক পোস্ট করেছিলেন মোদী। ওই সমীক্ষার ফলকেই অন্তিম ফল হিসেবে সামনে নিয়ে এসে দেশবাসীকে এবং দলীয় কর্মীদের অভিনন্দন জানিয়ে আগাম জয়ের ভাষ্য তৈরি করেন তিনি সেই রাতে। এর পরে ধ্যানের শেষে, দক্ষিণ থেকে দিল্লি ফেরার পথে একটি দীর্ঘ সঙ্কল্পও লিখে ফেলেন প্রধানমন্ত্রী। রাজনৈতিক শিবিরের মতে,যা দেশবাসীর কাছে নতুন ইনিংস শুরু করার ঘোষণাপত্রও বটে। সেখানে নিজের আধ্যাত্মিক পরিক্রমা থেকে তাঁর সরকারের প্রশাসনের মডেল– বিস্তারিত ব্যাখ্যা সেরে রেখেছেন মোদী।
বিজেপি নেতৃত্ব মঙ্গলবার বড় জয় আশা করছেন। আর তা ঘটলে বেশির ভাগ কৃতিত্ব দেওয়া হবে মোদীকেই। আগামী পাঁচ বছর নিঃসন্দেহে তিনিই থাকবেন সব সংবাদের শিরোনামে। রাজনৈতিক শিবিরের খবর, সোমবার দিনটি তাই তিনি একটি সংক্ষিপ্ত বিরতি নিলেন মাত্র।