—প্রতীকী চিত্র।
মোদীর সভায় ভিড় বাড়ানোটাই এখন চ্যালেঞ্জ বিজেপির কাছে। এর জন্য বুথে বুথে ঝাঁপাচ্ছেন পদ্মের নেতারা। সংখ্যালঘু প্রভাবিত কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্র থেকে সভায় লোক জড়ো করাটাই বিজেপির নেতৃত্বের কাছে অন্যতম চ্যালেঞ্জ। যদিও প্রতিবারই এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হয় তাঁদের। তবে এবার পরিস্থিতি বেশ কঠিন। কারণ কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রর লোকসভার সাংসদ পদ বাতিল হওয়ায় তৃণমূলের কাছেও ওই কেন্দ্র ধরে রাখাটা একটা চ্যালেঞ্জ। তাই গেরুয়া শিবিরের কাছে এ বারের লড়াইটা বেশ শক্তই।
আর সেই কারণেই, প্রধামমন্ত্রীর সভায় যাতে লোক কম না হয় সে জন্য প্রতিটা লোকসভা কেন্দ্র থেকে লোকসংখ্যা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না পারলে যে দলের ভিতরেই মুখ পুড়বে তা বিলক্ষণ জানেন জেলা নেতৃত্ব। আর সেই সুযোগেরই অপেক্ষায় রীতিমত ওত পেতে বিরোধী গোষ্ঠী। তাই কোনও ঝুঁকি না নিয়ে একেবারে ‘শক্তিকেন্দ্র’ ধরে ধরে বৈঠক করছেন পদ্ম নেতারা। জেলা বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সংখ্যালঘু এলাকা বা পঞ্চায়েত বাদ দিয়েই তাঁরা সভায় লোক সমাগমের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করছেন।
বিজেপির সাংগঠনিক পরিকাঠামো অনুযায়ী চার থেকে পাঁচটি করে বুথ নিয়ে শক্তিকেন্দ্র তৈরি হয়। শনিবার রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের পরই মণ্ডল সভাপতিদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস। রবিবার থেকে তিনি প্রতিটি মণ্ডলে গিয়ে সেখানকার নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছেন। কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে ২৫টি মণ্ডল রয়েছে। আজ, মঙ্গলবার থেকে জেলা ও মণ্ডল নেতৃত্ব শক্তিকেন্দ্র গুলিতে গিয়ে বৈঠক করেবেন। জেলা বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, মণ্ডলগুলিকেও লোক সমাগমের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। এরপর মণ্ডল নেতৃত্ব প্রতিটি শক্তিকেন্দ্র পিছু লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেবেন। সেই মত যানবাহনের ব্যবস্থাও করা হবে।
কাজটা অবশ্য সহজ নয় বলেই মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্বেরই একাংশ। কারণ কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রটি মূলত সংখ্যালঘু প্রভাবিত। বেশিরভাগ বিধানসভা কেন্দ্রে জনসংখ্যার ৬০ শতাংশের বেশি সংখ্যালঘু। ফলে একটা বড় সংখ্যার বুথ বা পঞ্চায়েত থেকে লোক আনা সম্ভব হবে না বলে ধরে নিয়েছেন নেতারা। ফলে বাকি বিধানসভা ও পঞ্চায়েত এলাকা থেকে লোক নিয়ে আসার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
জেলা বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২ মার্চ কৃষ্ণনগরে মোদীর জনসভায় দেড় লক্ষ লোক সমাগমের ‘টার্গেট’ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের জন্য ৬০ হাজারের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ২০ হাজার, কৃষ্ণনগর দক্ষিণ থেকে ১৫ হাজার, চাপড়া থেকে ছয় হাজার, তেহট্ট থেকে সাত হাজার, নাকাশিপাড়া থেকে সাত হাজার ও পলাশীপাড়া ও কালীগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে দু’হাজার করে লোক আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস বলেন, “২ মার্চ শুধু জনসভার মাঠই নয়, কৃষ্ণনগর শহরের রাস্তা-ঘাট বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের ভিড়ে উপচে পড়বে। এই শহরের মানুষ একটা ঐতিহাসিক সমাবেশের সাক্ষী থাকবেন।”