রবিবার মেচেদায় মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
বিরোধী দলনেতার ‘গড়ে’ দলের প্রার্থী কে, তা এখনও সামনে আসেনি। তবে রবিবার সেই এলাকাতেই এসে মিছিল এবং সভা করলেন সিপিএমের নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। তৃতীয় বারের জন্য কেন্দ্রে মোদী সরকারের বিজয় রথ আটকাতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি যখন ‘ইন্ডিয়া’ জোট গঠন করেছে, তখন সেই জোটের অন্যতম শরিক সিপিএমের মীনাক্ষী দাবি করলেন ‘ইন্ডিয়া’ কোনও জোটই নয়।
রবিবার সকালে কাঁথি-৩ ব্লকের নাচিন্দায় দু’কিলোমিটার মিছিল করেন মীনাক্ষী। পরে সভা করেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘ইন্ডিয়া কোনও জোট নয়। কে বলেন ইন্ডিয়া জোট? কেউ কি বলেছে?’’ প্রার্থী ঘোষণা না হলেও কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের বামফ্রন্ট প্রার্থীর সমর্থনে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফও এদিন সমাবেশ আয়োজন করে। কাঁথি শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে নাচিন্দায় সেই সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বসাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও আক্রমণ করেন বাম নেত্রী।
মীনাক্ষী এ দিন বলেন, ‘‘আজ যেখানে সভা করছি, এই জায়গায় গত পঞ্চায়েতে অভিষেক এসে এলাকার প্রধান, উপপ্রধান ও অঞ্চল সভাপতিকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলে বহিষ্কার করেছিলেন। এটা করার কারণ, তিনি দলের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি দেখাতে চাইছেন? কিন্ত আপনার পিছনেও সামনে যে কয়লার কালি লেগে, সেটা কী হবে!’’ মমতাকে মীনাক্ষীর কটাক্ষ, ‘‘সিং দিয়ে বেলুন ফাটানো যায়, কিন্তু লোকসভা চালানো যায় না।’’ উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে মমতা টিভির একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁকে ‘শিং’ দিয়ে বেলুন ফাটাতে দেখা গিয়েছিল।
এদিন মমতা এবং অভিষেকের পাশাপাশি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও আক্রমণ করেন মীনাক্ষী। তিনি বলেন, ‘‘অধিকারী গড় বলে কিছু হয় না। অধিকারী গড় মানে দুর্নীতির গড়। অধিকারী অ্যান্ড সনস্ নিজেদের পকেট ভরাতে ব্যস্ত।’’ এদিনের সভায় ডিওয়াইএফে’র রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী ছাড়াও ছিলেন সিপিএমের যুব সংগঠনের জেলা সম্পাদক ইব্রাহিম আলি, জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য ঝাড়েশ্বর বেরা প্রমুখ। এ দিন, মীনাক্ষীর সভার শেষে ১১৬বি জাতীয় সড়কের ব্যাপক যানজট হয়। নাচিন্দায় প্রায় এক ঘণ্টা ধরে যানজট চলে। দোল উপলক্ষে রবিবার থেকেই জমজমাট দিঘা এবং মন্দারমণি। সৈকত শহরে পৌঁছতে যানজটে বেগ পেতে হয় পর্যটকদের।
মীনাক্ষী মেচেদাতেও সভা করেছেন। িলেন তমলুক কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সায়ন বলেন, ‘‘আমাদের লড়াই তৃণমূল ও বিজেপির লোক ঠকানোর বিরুদ্ধে, দুর্নীতি ও স্বজন পোষণের বিরুদ্ধে।’’ এদিন সকালে সায়ন ময়না ব্লকের শ্রীকণ্ঠা পঞ্চায়েতে রামচন্দ্রপুর বাজার থেকে পদযাত্রা করেন। বাম প্রার্থী এবং নেত্রীর দাবি প্রসঙ্গে বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সহ-সভাপতি আনন্দময় অধিকারী বলেন, ‘‘সিপিএম রাজ্যের ক্ষমতায় থাকার সময়ে মানুষের কীভাবে অত্যাচার চালিয়েছিল, তা রাজ্যবাসী জানেন। ওঁরা কিছু বলার আগে আয়নায় নিজেদের মুখটা দেখুক।’’