গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিরোধীরা রোজ বিদ্ধ করে তৃণমূলকে। কিন্তু তৃণমূলের তীব্র সমালোচক হয়েও ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি জানিয়ে দিলেন, ‘চাকরি চুরির’ সব দোষ তিনি শুধুমাত্র তৃণমূলের ঘাড়ে চাপাতে চান না।
আনন্দবাজার অনলাইনের সাক্ষাৎকারভিত্তিক অনুষ্ঠান ‘দিল্লিবাড়ির লড়াই: মুখোমুখি’তে নওশাদ বলেছেন, ‘‘চাকরি বিক্রির অভিযোগে পার্থবাবু (প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়) জেলে আছেন। কিন্তু সব চাকরি বিক্রি হয়নি। একা তৃণমূলের ঘাড়ে দোষ চাপালেও হবে না।’’ তা হলে বাকি নিয়োগ কী ভাবে হয়েছে? নওশাদের জবাবে, ‘‘কিছু চাকরি সুপারিশে হয়েছে। তাতে ১০০ বছরের পুরনো দলের নেতা হয়তো বলেছেন, পার্থ’দা আমার কেসটা একটু দেখে দেবেন? এই ভাবেও অনেক চাকরি হয়েছে।’’ যা নওশাদের জবানিতে ‘অদৃশ্য সেটিং’!
১০০ বছরের পুরনো দল বলতে নওশাদ কাদের কথা বলেছেন, তা স্পষ্ট নয়। বাংলায় রাজনীতি করে, ১০০ বছরের পুরনো এমন দল বলতে কংগ্রেস। সিপিআইয়ের বয়স শতবর্ষ পেরিয়েছে। কিন্তু সিপিআই ভেঙে ১৯৬৪ সালে তৈরি হওয়া সিপিএমের বয়স এখন ৬০ বছর। অনেকের মতে, নওশাদ সামগ্রিক ভাবে বাম-কংগ্রেসকেই নিশানা করতে চেয়েছেন। কারণ, যে সময়ে নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছিল বলে এত কাণ্ড, সেই সময়ে বিরোধী দল হিসেবে বিধানসভায় ছিল সিপিএম এবং কংগ্রেসই।
নওশাদকে এ হেন মন্তব্য করতে আগে শোনা যায়নি। হতে পারে সেটা রাজনৈতিক সমীকরণের কারণে। কারণ, কংগ্রেসের সঙ্গে নওশাদদের তেমন কোনও যোগাযোগ না থাকলেও বাম তথা সিপিএমের সঙ্গে তাঁর এবং তাঁর দলের সমন্বয় ছিল। তবে চাকরি দুর্নীতি নিয়ে নওশাদের এই বক্তব্য ‘তাৎপর্যপূর্ণ’। রাজনৈতিক ভাবে তৃণমূলের জন্য ‘উপকারী’ বলে মনে করছেন অনেকে। কারণ, তৃণমূলের বিরোধী হিসেবেই তাঁর পরিচয়। বিরোধী শিবিরের কেউ যদি বলেন, অন্য দলের সুপারিশেও চাকরি হয়েছে, তা হলে তা শাসকদলের ‘হাতিয়ার’ হতে পারে। তবে বিবিধ প্রশ্নে নওশাদ বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি তৃণমূল বিরোধিতায় অটল। এবং তা চালিয়ে যাবেন।