কীর্ণাহারে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ। নিজস্ব চিত্র।
লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে যখন পাড়ুইয়ের বাতিকার অঞ্চলে বৈঠক ও কর্মিসভার আয়োজন করছে বিজেপি, তখন নানুরের কীর্ণাহারে বিজেপি-র বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে তোপ দেগে একাধিক পদাধিকারী যোগ দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে। বৃহস্পতিবারের এই ঘটনায় বিজেপি নেতৃত্ব বিড়ম্বনায় পড়েছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এ দিন কীর্ণাহার বাসস্ট্যান্ডে ব্রিগেডের ‘জনগর্জন সভার’ প্রস্তুতিতে সভা ছিল তৃণমূলের। সেখানেই বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক বুদ্ধদেব ঘোষ, নানুর মণ্ডল ওবিসি মোর্চার প্রাক্তন সভাপতি সনাতন ঘোষের নেতৃত্বে তৃণমূলে যোগ দেন তাঁরা। তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ, তৃণমূলের নানুর ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য প্রমুখ। দলবদল করে সনাতনের দাবি, ‘‘বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ( বোলপুর) সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডলের আচরণে বীতশ্রদ্ধ হয়েই দল ছেড়ে আসত হল। উনি বলেছেন, আমাদের মতো কর্মীসমর্থকদের দরকার নেই। হাওয়ায় ভোট হয়ে যাবে!’’
সন্ন্যাসীচরণ ওই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘প্রলোভনে পড়ে অনেক আগেই ওঁরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। আজ ওঁদের নিয়ে তৃণমূল স্রেফ নাটক করল।’’ ব্লক সভাপতির পাল্টা বক্তব্য, ‘‘আমাদের উন্নয়নমূলক কাজে শামিল হওয়ার জন্যই বিজেপি ছেড়ে ওঁরা তৃণমূলে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। সেই জন্য তাঁদের দলে স্বাগত জানানো হয়েছে।’’ সভাপতি যাই দাবি করুন, ভোটের আগে তৃণমূল বিজেপির ঘর ভাঙতে শুরু করেছে। চলতি মাসেরই ৩ তারিখ রামপুরহাট শহর তৃণমূল কার্যালয়ে দলের বীরভূম সাংগঠনিক জেলার অধীনে থাকা সিউড়ি, দুবরাজপুর, নলহাটি থেকে আসা একাধিক বিজেপি কর্মী ও পদাধিকারী শাসকদলে যোগ দিয়েছিলেন।
এ দিনই বিজেপি-র বোলপুর দু'নম্বর নগর মণ্ডলের বাতিকার গ্রামের দলীয় কার্যালয়ে দলের জেলা যুব মোর্চার তরফে একটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী পিয়া সাহা, রাজ্য যুব মোর্চার সহ-আহ্বায়ক সৌরভ মজুমদার, যুব মোর্চার জেলা সভাপতি সব্যসাচী রায়, জেলার সাধারণ সম্পাদক শিবদাস ঘড়ুই। পরে কর্মিসভাও করা হয়। সন্ত্রাসহীন পরিবেশে যাতে ভোট হয় এবং ভোটারেরা যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন, তা প্রশাসনকে সুনিশ্চিত করার দাবিও জানান পিয়া।
তবে, এ দিনের সভাতেও লোক বেশি না-হওয়া নিয়ে দলের অন্দরে প্রশ্ন উঠেছে। বোলপুর সাংগঠনিক জেলার এক কার্যকর্তা বলেন, “বোলপুরের মত গুরুত্বপূর্ণ আসনে আরও যোগ্য প্রার্থী ছেড়ে দিয়ে পিয়া সাহাকে প্রার্থী করায় অনেকেই তা মেনে নিতে পারছেন না। হয়তো সে কারণেই দলের অনেকে মিটিং-মিছিলে অনুপস্থিত থাকতেন।’’ পিয়ার প্রতিক্রিয়া, ‘‘দলের মধ্যে অসন্তোষ নিয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। উচ্চ নেতৃত্ব যা বলার বলবেন। মোদীজি আমাকে প্রার্থী করেছেন। দলের তরফে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তা আমি যথাসম্ভব পালন করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।’’ প্রচারে ও কর্মিসভায় সেভাবে কেন লোক হচ্ছে না, সে প্রসঙ্গে পিয়া বলেন, ‘‘আমার কোথাও মনে হচ্ছে না যে লোকসমাগম কম হচ্ছে।’’