মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
ভোট এগিয়ে আসছে। কিন্তু এখনও দলীয় প্রার্থী মিতালি বাগের প্রচারে দেখা নেই আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল নেতাদের একাংশের। এই পরিস্থিতিতে আজ, বুধবার আরামবাগের কালীপুর স্পোর্টস কমপ্লেক্সে মিতালির সমর্থনে সভা করতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে তিনি কী বার্তা দেন, সে দিকে তাকিয়ে দলের অনেকেই। তৃণমূলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী অবশ্য বলেন, ‘‘দলে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। সভায় প্রচুর জনসমাগম হবে। মানুষ জানেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানেই উন্নয়ন।’’
স্বপন যা-ই বলুন, গত পঞ্চায়েত ভোটে টিকিট না পাওয়া এবং পরে বিভিন্ন স্তরে কমিটি গঠন নিয়ে এখানে দলের অন্দরে দ্বন্দ্ব বার বার সামনে এসেছে। প্রচার শুরুর পরে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীও বৈঠক করে গিয়েছেন। তারপরেও বিক্ষুব্ধ বহু পুরনো নেতা-কর্মী ভোটের কাজে নামেননি বলে তৃণমূলেরই একটি সূত্র মানছে। ফলে প্রচারেও তেমন সাড়া নেই বলে চর্চা অব্যাহত।
বিদায়ী সাংসদ অপরূপা পোদ্দারকে এ বার টিকিট দেয়নি তৃণমূল। মিতালির প্রচারে তাঁকে এক দিনও দেখা যায়নি। অপরূপার দাবি, প্রার্থী, দলের জেলা নেতৃত্ব অথবা নির্বাচন কমিটি— কোনও তরফেই তাঁকে ডাকা হয়নি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘গত দশ বছরে সাংসদ হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে অনেক উন্নয়ন করেছি। প্রচারে গিয়ে মানুষকে এ ব্যাপারে অনেক ভাল করে বোঝাতে পারতাম। সেই সুযোগই দেওয়া হল না।’’ তবে অপরূপার দাবি, দলের কর্মীদের সঙ্গে তাঁর নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে।
অপরূপার বক্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাওয়া হলে আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি রামেন্দু সিংহরায় ক্ষিপ্ত স্বরে বলে ওঠেন, ‘‘এটা নিয়ে আমাকে ফোন করছেন কেন?’’ তারপরেই ফোন কেটে দেন।
কালীপুর মাঠে মমতার সভার মঞ্চ তৈরি হয়ে গিয়েছে সোমবার। সভাস্থলের পশ্চিমের মাঠে হেলিপ্যাডে মঙ্গলবার হেলিকপ্টার মহড়া দেয়। ১২ ফেব্রুয়ারি এই মাঠেই প্রশাসনিক বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পয়লা মার্চ এখানেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রশাসনিক সভা এবং রাজ্যে বিজেপির নির্বাচনী প্রচারের সূচনা করেন।
আরামবাগের পাশাপাশি আজ মমতা বলাগড়ের বাকুলিয়া ধোবাপাড়া পঞ্চায়েতের গঙ্গাধরপুর মাঠে সভা করবেন হুগলির প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে। মঙ্গলবার মঞ্চ তৈরির প্রস্তুতি চলে। হেলিপ্যাডের মহড়া হয়। হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি অরিন্দম গুঁইনের কথায়, ‘‘বৃষ্টি নিয়ে আমরা ভয় পাচ্ছি না। মুখ্যমন্ত্রী এলে যদি ছিটেফোঁটা বৃষ্টি হয়, তা শুভ লক্ষণ। ঝড়বৃষ্টি হলেও তা উপেক্ষা করে প্রচুর মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর সভায় আসবেন।’’