দুই জেলায় নির্বাচনী প্রচারে উঠল দুই শিল্পের প্রসঙ্গ
Lok Sabha Election 2024

রুগ্ন চটশিল্পের পুনরুজ্জীবনে আন্দোলন, ঘোষণা মমতার

শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে মঙ্গলবার শ্রীরামপুর স্টেডিয়ামে সভা করেন মমতা। হিন্দিতে তিনি বলেন, ‘‘জুট বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। জুট বাংলার অনেক বড় অংশ ছিল।”

Advertisement

প্রকাশ পাল

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২৪ ০৯:৪৯
Share:

শ্রীরামপুরের স্টেডিয়াম মাঠে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: তাপস ঘোষ।

দু’দিন আগেই নির্বাচনী প্রচারে এসে গঙ্গার দু’পারে হুগলি এবং উত্তর ২৪ পরগনায় চটশিল্পের দুর্গতির জন্য রাজ্য সরকারকে দায়ী করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এ নিয়ে পাল্টা কেন্দ্রীয় সরকারকে দুষে চটশিল্পের পুনরুজ্জীবন এবং শ্রমিকদের বাঁচাতে বড় আন্দোলনে নামার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে মঙ্গলবার শ্রীরামপুর স্টেডিয়ামে সভা করেন মমতা। হিন্দিতে তিনি বলেন, ‘‘জুট বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। জুট বাংলার অনেক বড় অংশ ছিল। ভোটের পরে জুট নিয়ে আমরা বড় আন্দোলন করব। কারণ, জুটশিল্প না বাঁচলে মজদুরদের জীবন চলবে না। কল্যাণও লড়াই করবেন। আপনারাও লড়াইয়ে মদত দিন।’’ কল্যাণ অভিযোগ করেন, গুজরাতের বড় বড় সিন্থেটিক ব্যবসায়ীদের স্বার্থরক্ষার জন্য মোদী এখানকার চটশিল্প নিজের হাতে নষ্ট করেছেন কেন্দ্রীয় সরকারের চটের ব্যাগের বরাত অনেক কমিয়ে দিয়ে।

এই লোকসভা কেন্দ্রের গঙ্গাপারে একাধিক জুটমিল রয়েছে। গত পাঁচ বছরে রিষড়ার ওয়েলিংটন এবং শ্রীরামপুরের ইন্ডিয়া জুটমিল দীর্ঘদিন বন্ধ থেকেছে। হুগলি কেন্দ্রের গোন্দলপাড়া জুটমিলও দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। এখন সব মিল চললেও সার্বিক অবস্থা যে সুখকর নয়, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষই মানছে। এই আবহেই কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যে দায় ঠেলাঠেলিও শুরু হয়েছে।

Advertisement

বিজেপি অবশ্য চটশিল্প নিয়ে মমতার এ দিনের ঘোষণাকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। হুগলির বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এত দিন করেননি কেন? হঠাৎ ভোটের সময় আন্দোলন কেন? সিঙ্গুরে আন্দোলন করে কৃষকদের ঠকিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। আবার চটের নাম করে শ্রমিকদের ঠকাবেন আন্দোলন করে! আমি নিজে পাটচাষিদের কাছে গিয়ে তাঁদের কথা শুনেছি। পুরো জিনিসটাই কেন্দ্রের পর্যবেক্ষণে আছে।’’ জুট মিলের দুর্দশার জন্য তৃণমূলকে দায়ী করে তাঁর অভিযোগ, চেয়ারম্যান পদে বসা তৃণমূল নেতারা চটকল-মালিকদের সঙ্গে সমঝোতা করে, কালো চুক্তি করে শ্রমিকদের কাজের দিন কমিয়ে দিচ্ছেন।

তবে, চটশিল্প প্রসঙ্গে কেন্দ্রের দায় এড়ানো নিয়ে মোদীর বক্তব্যের সমালোচনায় নেমেছে এসইউসি-র শ্রমিক সংগঠনও। সোমবার বিকেলে ওই সংগঠনের তরফে ইন্ডিয়া জুট মিলের গেলে সভা করা হয় দলের প্রার্থী প্রদ্যোৎ চৌধুরীর সমর্থনে। সংগঠনের প্রবীণ নেতা দিলীপ ভট্টাচার্যের অভিযোগ, চটের বস্তার বদলে সিন্থেটিক ব্যাগকে প্রাধান্য দিচ্ছে কেন্দ্র। পাট কেনার ব্যাপারে ছড়ি ঘোরাচ্ছে ফড়েরা। শ্রমিকদের নানা ভাবে বঞ্চনা করা হচ্ছে।
চটকলের পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য সরকারের ভূমিকারও সমালোচনা করেন তিনি।

মমতা এ দিন দাবি করেন, ‘‘এখানে (হুগলিতে) আমরা ৫২ হাজার ছোট এমএসএমই ইউনিট তৈরি করেছি। তাতে লক্ষাধিক ছেলেমেয়ে কাজ করেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement