পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রের তৃনমূল কংগ্রেসের প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতোর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায। Sourced by the ABP
বিজেপি পরিকল্পনা করে বুথের নেতাদের গ্রেফতার করাতে পারে বলে অভিযোগ তুললেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই বুথে বুথে দু’-তিন জনের নামের তালিকা করে রাখতে বললেন তিনি। সেই সঙ্গে নেতা-কর্মীদের প্রচারে আরও বেশি সময় দিতে বললেন।
রবিবার কাশীপুর বিধানসভার লধুড়কা চণ্ডেশ্বর শিবমন্দির সংলগ্ন ময়দানের সভায় বিজেপিকে বিঁধে মমতা কর্মীদের সতর্ক করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘বিজেপির পরিকল্পনা রয়েছে। যদি আপনার বুথ সভাপতিকে গ্রেফতার করে, যদি এজেন্টকে গ্রেফতার করে, মনে রাখবেন দু’টি-তিনটি করে নাম ঠিক রাখতে হবে।’’
ভোটের পরেও কর্মীদের সজাগ থাকতে বলেন। তিনি বলেন, ‘‘মনে রাখতে হবে, নির্বাচনের পরে যাঁরা ভোট কেন্দ্রে ইভিএম বাক্সগুলো পাহারা দেবেন, মানুষের ভোট যাতে সুরক্ষিত থাকে দেখতে হবে। বিজেপি কিন্তু টাকা দিয়ে, খাবারে মাদক মিশিয়ে, ভয় দেখিয়ে, লোডশেডিং করে, ইভিএমে চিপ ঢুকিয়ে দিতে পারে। এগুলো যাতে করতে না পারে, নজর রাখতে হবে ভাল করে।’’
পাল্টা বিজেপির জেলা সভাপতি বিবেক রঙ্গা দাবি করেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এ ভাবেই ক্ষমতায় এসেছে বলে, তিনি এমনই ভাবতে পেরেছেন। তবে মানুষ এ সব কথায় গুরুত্ব দেবে না।’’
লোকসভা ভোটের মুখে তৃণমূল নেতৃত্বের মাথাব্যথার অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে পুরুলিয়ায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এ দিন বক্তব্য রাখার মাঝে আচমকা উল্টোদিকে ঘুরে মঞ্চে উপবিষ্ট জেলা নেতৃত্বের দিকে তাকান মমতা। তারপরে নির্দেশ দেন, ‘‘নেতাদের বলব আরও বেশি করে প্রচারে সময় দিতে হবে। নির্বাচনে আত্মতুষ্টির জায়গা নেই।’’
জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘নেত্রীর নির্দেশ আমাদের কাছে শিরোধার্য। আমরা একসঙ্গেই কাজ করছি। আরও ভালভাবে কাজ করতে হবে।’’
২৭ ফেব্রুয়ারি জেলায় প্রশাসনিক সভা করতে এসে জেলা পরিষদে কর্মাধ্যক্ষদের মধ্যে সমন্বয়ের চূড়ান্ত অভাবের কথা নেত্রীর কানে আসে। তারপরেই মমতার নির্দেশে দলের পুরুলিয়ার পর্যবেক্ষক মলয় ঘটক তারপরে এক দশকের বেশি সময় পরে কাছাকাছি এসেছেন দুই জেলা নেতা সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় ও স্বপন বেলথরিয়া। তৃণমূল প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতোও করজোড়ে কর্মীদের নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে নিতে আবেদন করেন। যদিও কিছু দিন আগে ঝালদা শহর তৃণমূলের কর্মিসভায় দলের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। প্রার্থীর প্রচারে দেওয়াল লেখার কাজেও কর্মীদের সক্রিয়তা কম দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেন জেলা নেতৃত্ব। এ দিন শান্তিরাম বলেন, ‘‘লড়াইয়ে আত্মসন্তুষ্টির কোনও জায়গা যে নেই, সে কথাই দিদি এ দিন আরও একবার মনে করিয়ে দিয়েছেন।’’ দলের নির্বাচনী কমিটির চেয়ারম্যান সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সবাই এক সঙ্গেই কাজ করছেন।