জলপাইগুড়ি শহরের এবিপিসি ময়দানে জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি - সন্দীপ পাল।
কোচবিহারের অসম সীমানা লাগোয়া এলাকায় প্রচারে এসে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) সঙ্গে নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) প্রসঙ্গ তুলে বিজেপিকে আক্রমণ করলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার কোচবিহার তুফানগঞ্জের নাগরুরহাটে আলিপুরদুয়ার লোকসভা আসনের তৃণমূল প্রার্থী প্রকাশ চিক বরাইকের সমর্থনে প্রচার করেন মমতা। সেখানেই অসমে এনআরসি-সিএএ নিয়ে অশান্তির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘‘আপনাদের পাশেই তো। এনআরসি করে ডিটেনশন ক্যাম্পে রেখে আসবে। বলবে বাংলাদেশ থেকে বাবা-মায়ের জন্ম সার্টিফিকেট নিয়ে এসো। পারবেন তো? আমি পারব না।” সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস, “আমাদের সরকার থাকতে সিএএ’ এনআরসি মানব না। আপনারা নাগরিক আমরাও নাগরিক। আপনাদের ভোটে প্রধানমন্ত্রী দশ বছর ধরে আছেন। তাঁরা কী করে বলেন, সিএএ-তে নাম লেখান?’’
তুফানগঞ্জ কোচবিহার জেলার অংশ হলেও আলিপুরদুয়ার লোকসভার মধ্যে পড়েছে। যেখান থেকে অসম সামান্য দূরে। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী সভামঞ্চ থেকে বলেন, “সিএএ চালু করেছে (কেন্দ্রীয় সরকার) আপনাদের বিদেশি বানাবে বলে৷ বিজেপি নেতাদের মধ্যে ৪২ জন সাংসদ দাঁড়িয়েছেন, তাঁরা কেন সিএএ-তে আবেদন করছেন না? সিএএ মাছের মাথা, লেজা হল এনআরসি৷ সিএএ-তে নাম লেখাবেন, তা হলেই বিদেশি হয়ে গেলেন৷ না দিতে পারবেন ভোট, না পাবেন অধিকার৷”
নাগরিকপঞ্জি নিয়ে এক সময়ে অসমে শোরগোল হয়। লক্ষ-লক্ষ মানুষের নাম নাগরিকপঞ্জির বাইরে চলে যায়। তাতে প্রচুর কোচবিহারের মানুষ ছিলেন। যাঁরা নথিপত্রের খোঁজে এক অফিস থেকে আর এক অফিসে ঘুরে বেড়ান। অসম সীমানার ওই অঞ্চলে বিজেপি দীর্ঘ সময় শক্তিশালী। তুফানগঞ্জ মহকুমাতেও উদ্বাস্তু মানুষের বড় অংশেরবাস। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, সে সব মাথায় রেখেই সিএএ-র সঙ্গে এনআরসি প্রসঙ্গ টেনে আনেন মুখ্যমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবারই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কোচবিহারের রাসমেলার মাঠে সভা করে সিএএ নিয়ে বিরোধীদের দিকে তোপ দেগেছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন, এত দিন রাজবংশী, মতুয়া, নমশূদ্র কারও কথা কেউ ভাবেননি। যখন বিজেপি সরকার সিএএ এনে মানুষকে নাগরিকত্ব দেওয়ার চেষ্টা করছে, তখন আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। বিজেপির কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে-র প্রতিক্রিয়া, “মুখ্যমন্ত্রী ভয় পেয়েছেন। তাই মিথ্যে বলে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা করছে। সিএএতে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কাউকে বিতাড়িত করা হবে না, তা প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলে দিয়েছেন।