মমতার পদযাত্রা। —ফাইল চিত্র।
সেই চেনা ছবি। জনসংযোগে বার বারই যে পথকে বেছে নিয়েছেন, বৃহস্পতিবার শান্তিপুরে প্রশাসনিক বৈঠকের আগে লোকসভা ভোটের দিকে নজর রেখে মানুষের কাছাকাছি পৌঁছতে সেই পথকেই বেছে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুরুটা করেছিলেন বুধবার কৃষ্ণনগরে পা দেওয়ার পর থেকেই। ওই দিন বিকেলে জেলা স্টেডিয়ামে হেলিকপ্টার থেকে নেমে তিনি জেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে সার্কিট হাউসে পৌঁছন। তখনও রাস্তার দু’পাশের ভিড়ের উদ্দেশে কখনও নমস্কার করেছেন তো কখনও হাত নেড়েছেন। আবার কখনও ভিড়ের দিকে এগিয়ে গিয়ে কথা বলেছেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে।
বৃহস্পতিবারও ব্যতিক্রম হল না সেই ছবির। হাঁটতে হাঁটতে আচমকা দাঁড়িয়ে এক শিশুকে কোলে তুলে নিয়ে আদর করতে দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রীকে। বুঝিয়ে দিলেন, এখনও মানুষের মাঝখানে আগের মতোই তিনি সাবলীল। যদিও তাঁর চারপাশের নিরাপত্তারক্ষীদের বেস্টনি ভেদ করে সাধারণ মানুষের তাঁর কাছে পৌঁছনো সম্ভব হয়নি। এদিন কৃষ্ণনগর ও শান্তিপুরে তিনি হেঁটেছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে দেখতে মেঘলা আকাশ উপেক্ষা করে মানুষের ভিড় ও উৎসাহ ছিল নজরে পড়ার মতো।
বুধবারই সাংবাদিকদের মমতা জানিয়ে দেন, শান্তিপুরে যাওয়ার পথে এদিন বেলা এগারোটা নাগাদ ভাতজাংলা থেকে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার হাঁটবেন। সেই মত আগে থেকে ভাতজাংলা এলাকার রাস্তার কার্যত দখল নেয় পুলিশ। ভাতজাংলা গ্রাম পঞ্চায়েত ভবনের সামনে এসে মুখ্যমন্ত্রী গাড়ি থেকে নেমে পড়েন। তাঁর কাছে পৌঁছনোর জন্য কার্যত হুড়োহুড়ি পড়ে যায় জেলা নেতৃত্বের একাংশের। তবে নিরাপত্তা বেস্টনি ভেদ করতে পারেননি তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রী জাতীয় সড়ক ধরে শান্তিপুরের দিকে হাঁটতে শুরু করেন। রাস্তার পাশে ভিড়ের দিকে কখনও নমস্কার করে কখনও হাত নাড়তে নাড়তে দ্রুত পায়ে এগিয়ে যেতে থাকেন। তবে এক কিলোমিটার হাঁটার কথা থাকলেও তিনি আরও বেশ কিছুটা হাঁটেন। পরে গাড়িতে উঠে শান্তিপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হন। ফের শান্তিপুর স্টেশনের কাছে গাড়ি থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করেন। সেখানেও রাস্তার পাশে ছিল একই রকম ভিড়। বিশেষ করে মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। এক সময় মুখ্যমন্ত্রীকে ভদ্রাকালী এলাকায় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শিশুদের ডেকে তাদের হাতে বিস্কুট ও চকোলেট তুলে দিতেও দেখা যায়।
জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক করতে এসে এদিন কার্যত লোকসভা ভোটের আগে জনসংযোগ ঝালিয়ে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী।