মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
প্রায় প্রতি দিন নির্বাচনী সভা এবং রোড-শো করছেন। বাংলার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত ঘুরছেন। সভায় বলতে বলতে তাঁর গলা ভেঙে গিয়েছে। কার্যত ‘বলার ক্ষমতা’ হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। মঙ্গলবার বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে তৃণমূল প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচারে গিয়ে এই কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে বাঁকুড়া এবং রঘুনাথগঞ্জের বাসিন্দাদের জন্য ‘সুখবর’ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, সেখানকার প্রায় দেড় লক্ষ যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে তাঁর সরকার।
মঙ্গলবার পুরুলিয়ায় তৃণমূল প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতোর সমর্থনে সভা করার পর বাঁকুড়ার প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী এবং বিষ্ণুপুরের প্রার্থী সুজাতা মণ্ডলের সমর্থনে জনসভা করেন তৃণমূলনেত্রী মমতা। বিষ্ণুপুরের জনসভা থেকে তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি যেটা বলে সেটা করে না। আমরা যেটা বলি, সেটা করি। আমরা বলেছি এনআরসি করতে দেব না। দিইনি। মরে যাব। তা-ও দেব না। সিএএ করতে দিয়েছি? দেব না। এখন ইউনিফর্ম সিভিল কোড নিয়ে এসেছে, যাতে তফসিলিরা অস্তিত্ব হারায়। আমরাও অস্তিত্ব হারাই। আর মোদী একা লাঠি ঘুরিয়ে বেড়াবে!’’ বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বলেন, ‘‘মোদী ম্যাজিক শেষ। মোদী হটাও, দেশ বাঁচাও। এটাই স্লোগান হওয়া উচিত।’’
তৃণমূল নেত্রী জানান, বাংলার সব ক’টি লোকসভা আসনে ‘খেলা হবে’। তিনি বলেন, ‘‘মোদীবাবুকে বিদায় দেওয়ার খেলা হবে। ভোটটা এ বার তৃণমূলকে দিতেই হবে।’’ মোদী সরকারকে নিশানা করে একের পর এক কটাক্ষের পর তাঁর নাতিদীর্ঘ বক্তব্য শেষ করে দেন মমতা। তিনি জানান, দু’টি কারণে অল্প কথা বলে সভা শেষ করছেন। এক, আবহাওয়া খারাপ। দুই, তাঁর গলার অবস্থা। সোমবার বজ্রাঘাত এবং ঝড়ে বাংলায় বেশ কয়েক জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বাঁকুড়ার বাসিন্দারাও। মৃতদের পরিবারের উদ্দেশে সমবেদনা জানানোর পর সবাইকে সাবধানে থাকতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরে জানান, তাঁর গলার অবস্থা খুব খারাপ। তিনি বলেন, ‘‘প্রায় দেড় মাস বাড়ির বাইরে আছি। বলতে গেলে, কথা বলার ক্ষমতাই হারিয়ে ফেলছি চিৎকার করতে করতে। তাই মলয়কে (মন্ত্রী মলয় ঘটক) বলছি, তুমি উন্নয়নের কথাগুলো তুলে ধরো। আর মা, বোন এবং ভাইদের সান্ত্বনা দিয়ে বলছি, জেনে রাখবেন, বাঁকুড়া, রঘুনাথপুর জুড়ে দেড় লক্ষ ছেলেমেয়ের চাকরি হবে। তার কারণ, আমরা ডানকুনি থেকে বড়জোড়া ইকনমিক করিডর তৈরি করছি। পানাগড়, বাঁকুড়া হয়ে রঘুনাথপুর যাবে। দয়া করে আর বাইরে কেউ যাবেন না।’’