বৃহস্পতিবার হলদিয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর জনসভায় লক্ষ্মীর ভান্ডারের উপভোক্তারা। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।
দেশে নোটবন্দির সময় সাধারণ মানুষের দুর্দশা ঘোচাতে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের পরিকল্পনা তাঁর মাথায় এসেছিল বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সে ক্ষেত্রে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও ভূমিকা ছিল বলে জানালেন তিনি।
মেদিনীপুর লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়ার সমর্থনে বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় জনসভা করেন মমতা। সেখানেই মমতা বলেন, “যখন আমি দেখলাম দেশে নোটবন্দি হয়েছে, আধ ঘণ্টার মধ্যে সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছিলাম দেশের ক্ষতি হবে।” এর পরে তিনি বলেন, “অভিষেকের মা লতা আমার কাছে থাকে, আমার দেখাশোনা করে। ওর পরিচারিকা বলে, আমাকে দু’হাজার টাকা দাও না। ব্যাঙ্ক পাঁচশো-হাজার টাকা দেবে না। লতাকে বললাম, তোর কাছে অনেক টাকা জমানো রয়েছে, তা হলে? ও বলে, ‘কোথায় জমানো! লক্ষ্মীর ভান্ডারে লুকিয়ে চুরিয়ে যেটুকু জমিয়ে রেখেছিলাম, সেটাও নোটবন্দিতে কেড়ে নিল।” এর পরেই ‘লক্ষ্মীর ভান্ডারে’র বিষয়টি তাঁর মাথায় আসে, জানান মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “তখন ভাবলাম, লক্ষ্মীর ভান্ডারটা আমি কেড়ে নিতে দেব না। লক্ষ্মীর ভান্ডারে আগের দিনে মেয়েরা জমিয়ে রাখতেন। সেই টাকাটা প্রয়োজনে খরচ করতেন। আমার নিজের একটা লক্ষ্মীর ভান্ডার রয়েছে। সেখানে ৫ টাকা, ১০ টাকা ফেলে রাখি। যখন প্রয়োজন পড়বে, ওই টাকাটা আমার কাজে লাগবে।”
মমতার এই মন্তব্য নিয়ে বিঁধছেন বিরোধীরা। তাঁরা নিশানা করছেন অভিষেকের মা লতার ‘অনেক টাকা’কে। বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “গোপন কথাটি রবে না গোপনে। অবচেতন থেকে চেতনে উত্তরণের সাক্ষী থাকল বাংলা! লতার অনেক টাকা, এটা বেরিয়ে গেল।” সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, “নামটা লতার ভান্ডার বা মমতার ভান্ডার দিতে পারতেন। লক্ষ্মীর ভান্ডার কেন? মা-বোনেরা ব্রত করেন সন্তানের মঙ্গল কামনায়, লক্ষ্মীর ভান্ডারেও জমান। আর এখানে লুটের টাকার সঙ্গে সরকারের সব কিছু জড়িত।”