মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে আবারও সরব তৃণমূল নেত্রী। বালুরঘাট থেকে তিনি বলেন, ‘‘১৯ তারিখ আমাদের এক ভাইকে বিএসএফ গুলি করে দিয়েছে। আগেও শীতলখুচিতে চার জনকে গুলি করে মেরেছিল। যদি দেখেন কেন্দ্রীয় বাহিনী ভোট দিতে বাধা দিচ্ছে, তবে আমাদের কাউকে না কাউকে ফোন করে জানাবেন। প্রশাসন ব্যবস্থা করে দেবে। আমার কাছে এক জন অভিযোগ করেছেন যে ১৯ তারিখ চার-পাঁচ জন বিএসএফ ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে গ্রামের মানুষকে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। কী হচ্ছে এই সব! আমি নির্বাচন কমিশনকে বলব, চোখ খুলে দেখুন আর ব্যবস্থা নিন।’’
আবাস যোজনার টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র, বালুরঘাটের সভা থেকে মোদী সরকারকে আবার নিশানা করেন মমতা। পাশাপাশি তিনি এ-ও বলেন, ‘‘ভোটের পর ১১ লক্ষ বাড়ি আমরাই করে দেব। এই বছরের শেষে একটা কিস্তি দেব, পরের বছরের শুরুতে একটা কিস্তি দেব। আমরা ভিক্ষা চাইব না।’’
মুখ্যমন্ত্রী রবিবারের জনসভা থেকে বলেন, ‘‘৩৫০ কেন্দ্রীয় টিম পাঠিয়েছ। অনেক জ্বালিয়েছ। আমি ১০ দিন ধরে বলে যাচ্ছি শ্বেতপত্র প্রকাশ করো। বিহার, বাংলা, উত্তরপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রের এজি রিপোর্ট-সহ শ্বেতপত্র প্রকাশ করো। আমি দেখতে চাই কে চোর, আর কে সাধু।’’
বালুরঘাটের সভা থেকে নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকে খোঁচা মমতার। তিনি বলেন, ‘‘সবচেয়ে বড় ডাকাত, সবচেয়ে বড় গদ্দার, উনি মাঝেমধ্যেই ইডি, এনআইএকে দিয়ে গ্রেফতার করান। মনে হয় যেন কেন্দ্রের সরকারটা উনিই চালান। কাকে কখন গ্রেফতার করা হবে, বদলি করা হবে, খুন করা হবে, উনিই বলছেন। বলছে নাকি বোমা ফাটাবে। বোমাটা কি মেরে ফেলার বোমা? সাহস থাকলে আজই বলো।’’
বালুরঘাটের সভা থেকে মমতা বলেন, ‘‘আমাদের সাংসদেরা জীবন দিয়ে লড়াই করে। আর তোমরা তাঁদের পেটাও, তোমরা বাতিল করে দাও। মহুয়া মৈত্র এক জন মহিলা সাংসদ, তাঁকে তোমরা বার করে দিয়েছ।’’
বালুরঘাটের উন্নয়নের খতিয়ান দিতে গিয়ে তৃণমৃল নেত্রী বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার কী করেছে, তা বলতে শুরু করে তবে দিনরাত একাকার হয়ে যাবে। একটা রামায়ণ, একটা মহাভারত, একটা কোরান, একটা বাইবেলে কুলাবে না।’’
বালুরঘাটের সভা থেকেও দূরদর্শনের লোগোর রং গেরুয়া করা নিয়ে সরব হন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘দূরদর্শনটা দেখেছেন তো? আর কেউ দেখবেন না। ওটাকে দূর করে দিন। একদিন এটা আমাদের গর্ব ছিল। কাল থেকে গেরুয়া করে দিয়েছে।’’
বালুরঘাটের সভা থেকেও ১০০ দিনের কাজের বকেয়া নিয়ে সরব মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপির অনেক টাকা আছে, তাই মিথ্যে কথা বলে রোজ কোটি কোটি টাকার বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। অথচ ১০০ দিনের কাজের টাকা নেই। তিন বছর টাকা দিল না গরিব লোকগুলোর।’’
মমতা বলেন, ‘‘নির্বাচনের সময় যদি আপনি বিমানবন্দর চালু করে দেন, তবে অনেক মানুষের মনে হবে আমাদের প্রেশারে করে দিয়েছেন। আমি আপনার প্রেশার কুকার। আমাকে তো প্রেশার দিতেই হবে।’’
বালুরঘাটে বিমানবন্দর নিয়ে মোদীকে খোঁচা মমতার। তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী এখানে এসে বলে গিয়েছেন মমতাজি করতে দিচ্ছে না। আমি বলছি চোখ খুলে দেখুন। বালুরঘাট বিমানবন্দরের কাজ হয়েছে কি হয়নি? আমরা তো বেলুরঘাট নয়, বালুরঘাটে এসে বলছি। বিমানবন্দর পুরো তৈরি, কিন্তু আপনি বিমান দিচ্ছেন না। তাই চালু হচ্ছে না।’’
বালুরঘাটের সভা থেকেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করলেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির কিছু গদ্দার বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী করেছে? আমি একটা কথা বলতে চাই, এটা কি বাংলার নির্বাচন যে আমার কাছে কৈফিয়ত চাওয়া হচ্ছে? এটা দিল্লির নির্বাচন। তাই কৈফিয়তও মোদীকে দিতে হবে।’’
রবিবার প্রথমে বালুরঘাটের কুমারগঞ্জের চকরাম রায় গ্রাউন্ডে সভা করেছেন মমতা। এ বার বিপ্লব মিত্রের সমর্থনে বালুরঘাট টাউন ক্নাবের মাঠে দ্বিতীয় সভা করছেন তিনি।