মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ডানলপ কারখানাটি। জেসপও বন্ধ। এই দুই কারখানার এমন পরিণতির জন্য কেন্দ্রকে দুষলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বলাগড়ের বাকুলিয়া ধোবাপাড়া পঞ্চায়েতের গঙ্গাধরপুরে হুগলির তৃণমূল প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে নির্বাচনী জনসভায় মমতার অভিযোগ, রাজ্য সরকার ডানলপ-জেসপ অধিগ্রহণ করতে চাইলেও কেন্দ্রের অনুমোদন মেলেনি।
বক্তব্যের মাঝে মমতা দাবি করেন, ‘‘অনেক কারখানা, পোলবা-দাদপুর থেকে শুরু করে শিল্প পার্ক, অনেক কিছু তৈরি করা হয়েছে।’’ এর পরেই তিনি ওই দুই বন্ধ কারখানার কথা তোলেন। বলেন, ‘‘আমি খুলে রেখেছিলাম। কিন্তু এরা বন্ধ করে দিয়েছিল ২০১৩-’১৪-য় হবে। শ্রমিকদের মাইনেও বন্ধ করে দিয়েছিল। ২০১৬ সালে আমরা বিল পাশ করে বলেছিলাম, ডানলপ আর জেসপ আমাদের দিয়ে দাও, রাজ্য সরকার চালাবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত দিল্লির সরকার আমাদের দেয়নি।’’
তাঁর অভিযোগ, কারখানা মালিকের সঙ্গে বিজেপির সংস্রব রয়েছে। তাই কারখানা রাজ্যকে চালাতে দেওয়া হয়নি। বন্ধ ওই কারখানার শ্রমিকদের মাসে ১০ হাজার টাকা রাজ্য দেয় জানিয়ে মমতার সংযোজন, ‘‘আমি চাই ডানলপ, জেসপ খুলুক। নিজেরাও খুলবে না আমাদেরও খুলতে দেবে না, এ কেমন মামদোবাজি!’’ গত বিধানসভা ভোটের আগেও হুগলিতে এসে একই অভিযোগ করেছিলেন মমতা।
ডানলপ বাম আমল থেকেই ধুঁকছিল। ২০১১ সালের পরে আর খোলেনি। তখন প্রায় ২২০০ কর্মী ছিলেন। অভিযোগ, ডানলপের বহু যন্ত্রপাতি লোপাট হয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০১৭ সালে ডানলপে লিকুইডেশনের নোটিস ঝোলে।
হুগলি লোকসভার মধ্যেই সিঙ্গুর। এ দিন সিঙ্গুরের জমি আন্দোলন প্রসঙ্গ এনে মমতার দাবি, সেই জমির ৪৩৪ একরে চাষ হচ্ছে। টিউবওয়েল বসেছে। কৃষিভিত্তিক শিল্প হচ্ছে। শিল্প পার্ক তৈরি করা হচ্ছে। জমি নিয়ে আন্দোলনকারী ৩৬১১ জনকে এখনও মাসে ২ হাজার টাকা এবং ১৬ কেজি চাল দেওয়া হয়। এর সঙ্গে সরকারি কলেজ, ট্রমা কেয়ার সেন্টার, হুগলি পুলিশ জেলার সদর কার্যালয় ইত্যাদির কথাও উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিজেপি প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’। তাঁর অভিযোগ, ডানলপের যাবতীয় জিনিস
চুরি করেছে তৃণমূলের লোকেরা। সিঙ্গুরে শিল্প না হওয়ার জন্যও তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে দায়ী করেন। লকেটের বক্তব্য, ‘‘টাটা কারখানার বদলে অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রি? সিঙ্গুরের মানুষ বড় শিল্প চান। তার কী হল?’’ বিজেপি ক্ষমতায় এলে ডানলপ এবং সিঙ্গুর নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হবে বলেও লকেট জানান।