তালে-তালে: সভামঞ্চে ড্রাম বাজাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার ময়নাগুড়িতে। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।
সভামঞ্চের পাশেই আদিবাসী-রাজবংশী নাচের দলের লোকজন জড়ো হয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হেলিকপ্টার থেকে নেমে প্রথমে তাঁদের কাছে যান। তখন মাদল, ঢোল, খঞ্জনিতে বোল উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চে উঠে বক্তব্য রাখলেন। বক্তৃতার শেষে ডেকে নিলেন নাচের দলকে। মঞ্চেই শুরু হল নাচগান। তাতে পা মেলালেন মুখ্যমন্ত্রীও। নাচের দলের কেউ লাল-সাদা শাড়ি পরে, কেউ বা রাজবংশী কায়দায় হলুদ শাড়ি পরে গলায় গামছা ঝুলিয়ে। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে পা মিলিয়ে মঞ্চে বৃত্তাকারে নাচলেন। ধূপগুড়ির একটি নাচের স্কুলের শিক্ষিকা দীপ্তি রায় নাচের মাঝেই মুখ্যমন্ত্রীর পায়ে মাথা ঠেকিয়ে প্রণাম করলেন, মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে তুলে নিয়ে আদর করলেন। একে একে সকলে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি লোকসভার শেষ জনসভায় ময়নাগুড়ির পশ্চিম শালবাড়ি ফুটবল মাঠের মঞ্চে দেখা গেল এমনিই রঙিন ছবি। নাচের দলের প্রধান দীপ্তি রায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বললেন, আরও ভাল করে নাচ শিখতে, শেখাতে।”
এ দিন সভায় ভিড় উপচে পড়েছিল। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার থেকে নামেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রের দাবি, শুধুমাত্র ময়নাগুড়ি বিধানসভা এলাকা থেকে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার মানুষের জমায়েত হয়েছে। যদিও পুলিশ সূত্রে খবর, ২০ হাজারে মানুষের জমায়েত হয়েছিল এ দিনের এই জনসভায়।
জল্পেশ মন্দিরের পাশেই এ দিন মঞ্চ বাঁধা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী জল্পেশ মন্দিরের প্রসঙ্গও আনেন। জানান, রাজ্য সরকার মন্দিরের উন্নয়নে পাঁচ কোটি টাকা দিয়েছে। ভোটের পরে জল্পেশ মন্দিরে আসবেন বলে জানান। জলপাইগুড়ির সভায় ঝড়ের প্রসঙ্গও এনেছেন তিনি। ময়নাগুড়ি বিধানসভা এলাকাতেই ঝড় হয়েছিল। এ দিন ফের মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত সকলেই বাংলার বাড়ি পাবেন। এ দিনের ভিড়ে দেখা গিয়েছে চা শ্রমিকদেরও। মুখ্যমন্ত্রী চা শ্রমিকদের পাট্টার কথা বলেছেন। যে চা শ্রমিকেরা যে লাইনে থাকেন সেখানেই পাট্টা পাবেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য সরকার ৫৯টি বন্ধ বাগান খুলেছে দাবি করে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকার তথা প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে ভরা সভায় প্রশ্ন তুলেছেন, “তোমরা ক’টা বাগান খুলেছ?”
গত ৩১ মার্চ টর্নেডোর রাতেই মুখ্যমন্ত্রী জলপাইগুড়ি চলে এসেছিলেন। চালসার একটি বেসরকারি হোটেলে ছিলেন। ইদের সময়ে এবং নববর্ষের আগে দু’দফায় কলকাতায় গিয়েও ফিরে জলপাইগুড়িতে এসেছিলেন, চালসায় থেকেছিলেন। এ দিন ময়নাগুড়ির সভা সেরে মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়ি চলে যান।