মল্লিকার্জুন খড়্গে। —ফাইল চিত্র
ভোটের নির্বাচন শেষের বেশ কয়েক দিন পরে হঠাৎ ভোটের হার বৃদ্ধি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশনের তোপের মুখে পড়েছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। শুক্রবার কমিশনের তরফে খড়্গেকে চিঠি পাঠিয়ে বলা হয়, ‘‘কংগ্রেস সভাপতির বিবৃতি নির্বাচন সংক্রান্ত ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার উপর আগ্রাসন।” এই আবহে শনিবার কমিশনকে পাল্টা চিঠি লিখলেন খড়্গে। সেখানে তাঁর অভিযোগ, বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র শরিকদের উদ্দেশে লেখা খোলা চিঠির জবাব দিলেও, আসল অভিযোগগুলির কোনও সদুত্তরই দেয়নি কমিশন।
খড়্গে শনিবার কমিশনকে পাঠানো চিঠিতে লেখেন, “আমাদের শরিক দলগুলির জন্য আমি চিঠি লিখেছিলাম। অবাক ব্যাপার যে, ওই চিঠি নিয়ে উত্তর দিলেও তাদের উদ্দেশে যে অভিযোগগুলি করা হল, সেগুলি নিয়ে নীরব থাকা হল।”
ভোটপর্ব শেষের বেশ কয়েক দিন পরে প্রথম দু’ফার ভোটের হার বৃদ্ধি নিয়ে দেশ জুড়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে ইতিমধ্যেই। কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিভিন্ন বিরোধী দল কমিশনের এই কাজ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে। প্রশ্ন তুলেছে নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে। এই পরিস্থিতিতে খড়্গে-সহ বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সহযোগী দলগুলির নেতারা বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলেন। কমিশনে চিঠি লিখে হঠাৎ ভোটের হার বৃদ্ধির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।
২১ পাতার চিঠিতে ১৯ দফা যুক্তি এবং আনুষঙ্গিক ‘তথ্য-পরিসংখ্যান’ দিয়ে খড়্গের অভিযোগ খণ্ডন করার চেষ্টা করে কমিশন। কংগ্রেস সভাপতি সমাজমাধ্যমে প্রকাশ করা খোলা চিঠিতে ‘নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা এখন সবচেয়ে কম’ বলে যে মন্তব্য করেছিলেন, তার সমালোচনাও করা হয়। যদিও কমিশনের দেওয়া চিঠির ভাষা এবং শব্দচয়ন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল নানা মহলে। শনিবার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন খড়্গেও। বলেন, “আমি বুঝতে পারি তারা (নির্বাচন কমিশন) কতটা চাপের মধ্যে কাজ করছে।”
প্রসঙ্গত, গত ১৯ এপ্রিল প্রথম দফা এবং ২৬ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় লোকসভার ভোটগ্রহণ পর্ব ছিল। প্রথম এবং দ্বিতীয় দফায় সারা দেশে কত শতাংশ ভোট পড়েছে, গত ৩০ এপ্রিল তার চূড়ান্ত হিসাব প্রকাশ করেছিল নির্বাচন কমিশন। প্রথম দফার ভোট হয়ে যাওয়ার প্রায় ১১ দিন পর এই চূড়ান্ত হিসাব প্রকাশ করা হয়েছিল। কমিশন সূত্রে ২০ তারিখ জানা গিয়েছিল, প্রাথমিক হিসাবে প্রথম দফায় দেশে ভোট পড়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ। দ্বিতীয় দফার ভোটের পর কমিশনের তরফে জানানো হয়, দেশে গড়ে ভোট পড়েছে ৬০.৯৬ শতাংশ। কিন্তু ৩০ এপ্রিল কমিশনের তরফে নতুন বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, প্রথম দফায় দেশে ৬৬.১৪ শতাংশ এবং দ্বিতীয় দফায় ৬৬.৭১ শতাংশ ভোট পড়েছে। অর্থাৎ, আগে যা জানা গিয়েছিল, তার চেয়ে প্রায় ছয় শতাংশ বেড়ে গিয়েছে কমিশনের হিসাব। এই ভোট বৃদ্ধি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা।