(বাঁ দিকে) অধীর চৌধুরী মল্লিকার্জুন খড়্গে (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
বাংলার কংগ্রেস নেতৃত্বের দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল, সর্বভারতীয় নেতারা ভোটের প্রচারে পশ্চিমবঙ্গে এসে বিজেপির পাশাপাশি আক্রমণ করুন শাসকদল তৃণমূলকেও। এ বার রাজ্য নেতৃত্বের দাবি মেনে মালদহের সুজাপুরে প্রচারে এসে বিজেপির সঙ্গেই একাসনে বসিয়ে তৃণমূলকেও আক্রমণ করলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী-সহ রাজ্য নেতারা বরাবরই বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলকেও আক্রমণ করে আসছিলেন। আর এ বার তাঁদের কথা মেনে নিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণ শানালেন এআইসিসি সভাপতি।
তিনি বলেন, ‘‘যে ভাবে নরেন্দ্র মোদী সারা দেশে কংগ্রেসকে দুর্বল করতে চাইছেন, সেই একই ভাবে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলও কংগ্রেসকে ভেঙে দিতে চাইছে।’’ এর পর তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে খড়্গে আরও বলেন, ‘‘আমি তৃণমূল সমর্থকদের বলছি, আপনারা নিজেদের ভোট নষ্ট করবেন না। তৃণমূল কখনও দেশের ক্ষমতায় আসতে পারবে না। বিজেপিকে সরিয়ে দেশের ক্ষমতায় আসার শক্তি একমাত্র কংগ্রেসেরই রয়েছে।’’ উল্লেখ্য, মালদহের ভোটের প্রচারে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী জোট ইন্ডিয়ায় থেকেও বাংলায় কেন কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করা গেল না, তার ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন, বাংলায় সিপিএমের সঙ্গে জোট না রাখার শর্তে দু’টি আসন ছাড়ার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন কংগ্রেসকে। কিন্তু সিপিএমের সঙ্গ ছাড়তে না চাওয়ায় কংগ্রেসের সঙ্গে মমতার দল জোট করতে পারেনি। সঙ্গে ভোট কেটে বিজেপিকে জেতানোর চেষ্টাও কংগ্রেস করছে বলে অভিযোগ করেছিলেন তিনি।
তাই বাংলার কংগ্রেস নেতৃত্ব চেয়েছিলেন, সর্বভারতীয় নেতারা বাংলায় প্রচারে এসে যেন আক্রমণ করেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বকে। খড়্গে তৃণমূলের নাম করে আক্রমণ শানালেও, একটি বারের জন্যও মমতা বা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম মুখে আনেননি। তবে এ প্রসঙ্গে অধীর-ঘনিষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের সংগঠন ইন-চার্জ নিলয় প্রামাণিকের বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল কোনও জাতীয় রাজনৈতিক দল নয়। আর এই নির্বাচন কেন্দ্রে সরকার ঠিক করার নির্বাচন। এটা সারা ভারতের নির্বাচন, তাই তৃণমূল এখানে বিজেপির বিরোধীই নয়। এমনিতেও বাংলায় খাল কেটে কুমির (বিজেপিকে) তৃণমূলই এনেছিল, মন্ত্রিত্বের লোভে বিজেপির সঙ্গে জোট করেছিলেন মাননীয়া। বিজেপি নামক গণশত্রুর সাথে সারা ভারতে একটা দলই লড়ছে, সেটা হল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস।’’
খাড়্গের আক্রমণ প্রসঙ্গে তৃণমূল মুখপাত্র শান্তনু সেন বলেন, ‘‘সর্বভারতীয় কংগ্রেসের সভাপতিকে আমরা অনুরোধ করব, তিনি যদি সত্যিই বিজেপিকে হারাতে চান, তা হলে বাংলায় তাঁদের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি যে ভাবে সিপিএমকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূলকে দুর্বল করে দিয়ে বিজেপির সুবিধা করে দিতে চাইছেন, সঙ্গে নিজেকে প্রতি মুহূর্তে বিজেপির তল্পিবাহক হিসাবে প্রমাণ করছেন, সবার আগে তাঁর বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আর বাংলার রাজনীতিতে কে বিজেপিকে হারাতে পারে এবং হারাতে চাইছে, তা বাংলার মানুষ ভালই জানেন বলেই আমরা মনে করি।’’