Lok Sabha Election 2024

চাপে তৃণমূল, সুর চড়াচ্ছেন বিরোধীরা

আদালতের রায়ের পরে কিছুটা কোণঠাসা অবস্থা তৃণমূলের। বিরোধীদের চাঁছাছোলা অভিযোগের মুখেও কিছুটা নীরব দেখাচ্ছে শাসকদলের নেতাদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:০১
Share:

আদালতের রায়ের পরে বিজেপির দেওয়াল লিখন। পোয়াবাগানে তোলা ছবি। নিজস্ব চিত্র।

নিয়োগের পুরো প্যানেলই বাতিল নিয়ে হাই কোর্টের রায়কে শাসকদলের গালে ‘সপাটে চড়’ হিসেবে দেখছেন পুরুলিয়ার বিজেপি নেতৃত্ব। অন্য দিকে বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী নেপাল মাহাতো মনে করাচ্ছেন, হরিয়ানায় শিক্ষাক্ষেত্রে সামান্য দুর্নীতির দায়েই জেলে যেতে হয়েছিল সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী ওমপ্রকাশ চৌটালাকে। পাল্টা তৃণমূল প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতোর দাবি, আদালতের রায়ের প্রভাব নির্বাচনে কোনও ভাবে পড়বে না। সব মিলিয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ, পাল্টা জবাবে সরগরম জেলার ভোট-রাজনীতি।

Advertisement

প্রচারের শুরু থেকেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে সুর চড়িয়েছে বিরোধীরা। সোমবার আদালতের রায়ের পরে, তা আরও চড়বে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

বিদায়ী সাংসদ তথা পুরুলিয়ার বিজেপি প্রার্থী জ্যোর্তিময় সিং মাহাতো বলেন, ‘‘আমরা বহু দিন ধরে বলে আসছি, ভুয়ো শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে। পুরো প্রক্রিয়া দুর্নীতিতে ভরা। আদালতের রায়ে তা সামনে এল। এই ঘটনা রাজ্য সরকারের গালে একটা সপাটে চড়।”

Advertisement

তাঁর দাবি, ‘‘শুধু শিক্ষামন্ত্রী বা শিক্ষা দফতরের আধিকারিকেরা নন। পুরো তৃণমূলই দুর্নীতিতে জড়িয়ে।”

নেপালের দাবি, ‘‘ঘুষ দিয়ে চাকরি পাওয়া যায়, এমন ধারণা সমাজে প্রচলিত ছিল। তৃণমূলের সরকার তা বাস্তবে পরিণত করল।”

পুরো প্যানেলই বাতিল হয়ে হাজার হাজার ছেলেমেয়েদের চাকরি যাওয়ায় মূলে রাজ্য সরকারই রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘‘ঠান্ডা মাথায় কয়েক হাজার ছেলেমেয়েদের খুন করল তৃণমূল। ওই
পরিবারগুলির দায় কেন রাজ্য সরকার নেবে না!”

আদালতের রায়ের পরে কিছুটা কোণঠাসা অবস্থা তৃণমূলের। বিরোধীদের চাঁছাছোলা অভিযোগের মুখেও কিছুটা নীরব দেখাচ্ছে শাসকদলের নেতাদের। বরং, তাঁরা পরোক্ষে প্রচারে সামনে আনছেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ‘সামান্য’ ত্রুটি-বিচ্যুতির কথা। কারা যোগ্য আর কারাই বা অযোগ্য, তা খতিয়ে না দেখেই পুরো প্যানেল বাতিল করে হাজার হাজার ছেলেমেয়েকে অনিশ্চিত জীবনের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে। শান্তিরাম বলেন, ‘‘আমাদের নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন আদালতের এই রায়ের ফলে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনও জটিলতা তৈরি হবে না।”

বাঁকুড়াতেও হাই কোর্টের রায়কে হাতিয়ার করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচারে জোর বাড়িয়েছে বিরোধীরা। বাঁকুড়ার বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকারের দাবি, “এই ঘটনা তৃণমূলের লাগামছাড়া দুর্নীতির ফল। ঘুষ নিয়ে যিনি চাকরি দেন, আর যিনি ঘুষ দিয়ে চাকরি নেন, তাদের এ ভাবেই ভুগতে হয়। তৃণমূল এই রাজ্যের শিক্ষিত যুবাদের ভবিষ্যৎ যে হাটে-বাজারে হাঁস-মুরগির দরে বিক্রি করেছে, তা আদালতের রায়ে প্রমাণিত।” সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতিও বলেন, “এর পরে লজ্জা থাকলে তৃণমূল আর মানুষের কাছে ভোট চাইতে যাবে না।" তৃণমূল যাঁদের টাকা নিয়েছে, অবিলম্বে ঘরে ঘরে গিয়ে তা ফিরিয়ে দিয়ে আসুক, দাবি দলের বাঁকুড়া কেন্দ্রের প্রার্থী নীলাঞ্জন দাশগুপ্তের।

পাল্টা সুভাষকে লক্ষ করে বাঁকুড়ার তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তীর অভিযোগ, “বিজেপি প্রার্থী যেন ভুলে না যান, তাঁর দলের বিধায়কই ওঁর বিরুদ্ধে এমস-সহ কেন্দ্রের হাতে থাকা নানা সংস্থায় চাকরির দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে। আমরা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিই না। কিন্তু
যাঁরা যোগ্য হয়েও চাকরি হারালেন, তাঁদের সামনে মুখ দেখাতে পারবেন না বিরোধীরা।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement