প্রার্থীকে আর্জি হরিশপুরে। নিজস্ব চিত্র।
প্রার্থীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে এলাকায় ধসের সমস্যার কথা শোনালেন গ্রামবাসী। বুধবার অন্ডালের মদনপুর পঞ্চায়েতের হরিশপুর গ্রামে বাসিন্দাদের একাংশ আসানসোলের বিজেপি প্রার্থী সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার কাছে তাঁরা দাবি করেন, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা যে পক্ষ করবে, তাঁরা তার পাশে থাকবেন। সুরেন্দ্রর আশ্বাস, ভোটের পরে বিষয়টি নিয়ে তিনি উদ্যোগী হবেন।
এ দিন দুপুরে হরিশপুর গ্রাম হয়ে প্রচারে যাচ্ছিলেন সুরেন্দ্র। বাসিন্দাদের একাংশ তাঁর গাড়ি দাঁড়় করিয়ে তাঁকে ধসে গ্রামের অসহায় অবস্থা দেখে যাওয়ার অনুরোধ করেন। সুরেন্দ্র গাড়ি থেকে নামতেই বাসিন্দাদের একাংশ তাঁকে ঘিরে পুনর্বাসনের ব্যবস্থার দাবি জানান। শুভঙ্কর চৌধুরী নামে এক জন জানান, বাসিন্দাদের একাংশ ফাটল ধরা বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। অজয় চৌধুরী, অমর পাল, বিশ্বজিৎ ঘোষেরা দাবি করেন, এই গ্রাম থেকে অতীতে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ৬৮০ ভোটে এগিয়েছিল। এ সব শুনে সুরেন্দ্র বলেন, ‘‘এখন কোনও প্রতিশ্রুতি দেওয়া নির্বাচনী বিধিভঙ্গ হবে। পুনর্বাসনের জন্য কেন্দ্র রাজ্য সরকারকে দু’কিস্তিতে টাকা দিয়েছে। তার পরেও সমাধান হয়নি। নির্বাচনের পরে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে সমাধান করব।’’ সুরেন্দ্রর দাবি, ধস এবং দূষণ রোধে ইসিএলকেই ব্যবস্থা নিতে হবে, প্রচুর গাছ লাগাতে হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ১৩ জুলাই ধসের জেরে এই গ্রামের রাস্তার একাংশ বসে গিয়েছিল। বেশ কিছু বাড়িতে ফাটল ধরে। তিনটি স্কুলভ্যান ধসে বেশ কিছুটা মাটির নীচে ঢুকে যায়। এর পরে গ্রামবাসী আন্দোলনে নামেন। গ্রামে দু’টি বুথে প্রায় সাড়ে বারোশো ভোটার আছেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ স্তরে তৃণমূল জিতেছে।
অন্ডাল পঞ্চায়েত সমিতির স্থানীয় সদস্য তপনকুমার পালের দাবি, গত বিধানসভা ও লোকসভা উপনির্বাচনে গ্রামবাসী অভিমানে ভোট দেননি। পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে, আদতে গ্রামের মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আস্থা রাখছেন। গ্রামে প্রায় সাড়ে পাঁচশো বাড়ি আছে। তার মধ্যে প্রায় তিনশোটি পরিবার সরকারি খাস বা পাট্টা জমিতে বাড়ি করে থাকেন। বাকিরা নিজেদের জমিতেই বাস করেন। পুনর্বাসনের প্রকল্প অনুযায়ী, যাঁদের নিজেদের জমিতে বাড়়ি নয়, তাঁদের আবাসনে যেতে হবে। যাঁদের নিজেদের জমিতে বাড়ি, সরকার তাঁদের একশো বর্গফুট জমি ও তাঁর বাড়ির দাম বাজারদরে দিতে হবে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন সে ব্যবস্থা করছে, দাবি তাঁর।
আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের আধিকারিক (ওএসডি) তন্ময় রায় জানান, ‘‘অন্ডাল বিমানবন্দর এলাকায় ৪৮০টি বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। সেখানে হরিশপুরে নিজের জমিতে বাড়ি না থাকা প্রায় তিনশো জনকে পুনর্বাসিত করার পরিকল্পনা হয়েছে। এই তালিকা অন্ডাল ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় পঞ্চায়েতকে পাঠানো হয়েছে। নির্বাচনের পরে এই প্রক্রিয়া শেষ হবে। এ ছাড়া, যাঁরা নিজের জমিতে বাস করেন, এমন প্রায় আড়াইশো পরিবারের বিষয়টি এই কাজের নোডাল এজেন্সিকে জানানো হয়েছে। তারাই পরবর্তী পদক্ষেপ করবে।’’