—প্রতীকী চিত্র।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে ছিলেন না। বীরভূমে এ বার লোকসভা নির্বাচনেও থাকছেন না দলের জেলা সভাপতি, জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডল। পালাবদলের পরে বীরভূমে প্রথমবার কেষ্টকে ছাড়া লোকসভা ভোটে যাচ্ছে তৃণমূল পঞ্চায়েত নির্বাচন ভাল ভাবে উতরে গেলেও ‘কেষ্টদা’ ছাড়া লোকসভা নির্বাচন কেমন হয় তা নিয়ে ‘সাবধানী’ তৃণমূলেরই অনেকে।
গরু পাচার মামলায় অনুব্রত জেলে যাওয়ার আগে প্রতিটি নির্বাচনে জেলা জুড়ে মিটিং করে বুথ ভিত্তিক লিড বেঁধে দিতেন। বোলপুরে বসে ভোট পরিচালনার পাশাপাশি নজরবন্দি অবস্থায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর অফিসারদের চোখে ধুলো দিয়ে কর্মীদের কাছে পৌঁছে যেতেও দেখা গিয়েছে অনুব্রতকে। এ বারের লোকসভা ভোটে সে সব অনুপস্থিত।
তৃণমূল সূত্রে দাবি, অনুব্রত না থাকায় দলের সব কর্মী উজ্জীবিত হয়ে মাঠে নামবেন কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। সেই সঙ্গে অনুব্রত বিরোধী বলে পরিচিত, জেলা সভাধিপতি কাজল শেখের সঙ্গে কোর কমিটির একাংশের প্রচ্ছন্ন অন্তর্বিরোধ চলছে বলেও সূত্রের দাবি। প্রচারে গিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে তিন বারের সাংসদ, বীরভূম কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়কে। কেষ্টহীন এ বারের ভোট তাই শাসক দলের নেতাদের কাছে কার্যত ‘চ্যালেঞ্জ’ হয়ে উঠেছে।
অনুব্রত ছাড়া ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল অবশ্য কিছুটা স্বস্তিতে রেখেছে শাসক দলকে। জেলার ১৬৭টি পঞ্চায়েতের মধ্যে তৃণমূল ১৩৯টি ও বিজেপি ৭টি দখল করেছে। ত্রিশঙ্কু হয় ২১টি পঞ্চায়েত। বিরোধীদের হাতে রয়েছে ১৫টি পঞ্চায়েত। বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি (বোলপুর) সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল অবশ্য দাবি করছেন, ‘‘পঞ্চায়েতে সন্ত্রাস করে অনেক জায়গায় প্রার্থীই দিতে দেয়নি শাসক দল। লোকসভায় সন্ত্রাসমুক্ত ভোট হলে ফল অন্য রকম হবে।’’ একই সুরে সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলছেন, ‘‘অনুব্রত মণ্ডল নেই তো কী হয়েছে, তাঁর চেলারা তো রয়েছেন। বিরোধীদের কেউ যাতে এজেন্ট না হয় সে জন্য তাঁরা বাড়ি বাড়ি হুমকি দিয়ে আসছেন। স্বচ্ছ ভোট হয় তাহলে দু’টি কেন্দ্রেই মিরাকল হবে।’’
কাজল শেখকে বার বার ফোন করে এবং মেসেজ পাঠিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তৃণমূলের জেলা কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বলছেন, ‘‘হার সুনিশ্চিত জেনেই বিরোধীরা মুখরক্ষা করতে বাঁধা গত গেয়ে রাখছেন।’’