Lok Sabha Election 2024

লড়াইয়ে ‘নিষ্ক্রিয়’ পুরপ্রতিনিধিরা, ভাবাচ্ছে তৃণমূলকে

বিধানসভাভিত্তিক এই পর্যালোচনা এবং বিভিন্ন স্তরের নেতানেত্রী, কাউন্সিলরদের ভূমিকার কথা শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে কলকাতা যাচ্ছে।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২৪ ০৯:৪৯
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

লোকসভা ভোটে শিলিগুড়ি শহরের বিজেপির বিরুদ্ধে ‘সক্রিয়’ লড়াই না হওয়ায় তৃণমূলের কাউন্সিলরদের বড় অংশের ভূমিকা নিয়ে নিয়ে দলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছে। সেই সঙ্গে দলের অনুমোদন ছাড়া স্থানীয় স্তরের কিছু নেতার নিজেদের মর্জিতে বৈঠক ডাকা, কমিটি তৈরির মতো কাজকর্ম নিয়ে সরব হয়েছেন কয়েকটি ওয়ার্ডের নেতৃত্ব। গত শনিবার সন্ধ্যায় শহরের হিলকার্ট রোডের দলীয় দফতরের উল্টোপাশের একটি বহুতল ভবনে শিলিগুড়ি বিধানসভার পর্যালোচনা বৈঠক হয়েছে। সেখানে সমতলের সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ, প্রার্থী গোপাল লামা থেকে শুরু করে জেলা কমিটির নেতারা ছিলেন। দলের টাউন ১ এবং টাউন ২ কমিটির অধীনে বেশির ভাগ কাউন্সিলর বিজেপিকে টক্কর দিয়ে ‘লিড’ দেওয়ার কথা বলতেই পারেননি। বামেদের ভোট রামে, অবাঙালি ভোটারদের বিজেপিমুখী— এ সব যুক্তি দিয়ে কাউন্সিলরেরা পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন।

Advertisement

দলের নেতৃত্ব কাউন্সিলরদের এই ভূমিকায় একেবারেই সন্তুষ্ট নন। বিধানসভাভিত্তিক এই পর্যালোচনা এবং বিভিন্ন স্তরের নেতানেত্রী, কাউন্সিলরদের ভূমিকার কথা শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে কলকাতা যাচ্ছে। ভোটে হারজিৎ যাই হোক, সেই রিপোর্ট ধরেই ভবিষ্যতে দলের নেতানেত্রীদের অবস্থান ঠিক হবে। দলের অন্দরের খবর, এ বার প্রতিটি লোকসভার পর্যালোচনার পর পরিস্থিতি খোঁজ নিচ্ছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে শিলিগুড়ি শহরের একটা বড় অংশের কাউন্সিলরদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন উঠে পড়েছে। দলের হিসাবে, ভোটপ্রাপ্তির হারে শিলিগুড়ি শহরে বিজেপি প্রার্থীর থেকে দলের প্রার্থী পিছিয়েই রয়েছেন।

দলের সমতলের সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ বলেছেন, ‘‘পর্যালোচনা করে কে কী বলছেন তা দেখা হচ্ছে। সবার দায়িত্ব রয়েছে। কেউ দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। কলকাতায় সব জানিয়ে দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে।’’

Advertisement

তৃণমূল জেলার নেতাদের একাংশের বক্তব্য, সারা বছর দলের সমস্ত কর্মসূচি, অনুষ্ঠানে কাউন্সিলরেরা সামনের সারিতে থাকেন। অথচ ভোটের সময় দেখা যাচ্ছে, নিজের ভোটটা ছাড়া কোনও ভোটেই এঁরা দলকে এগিয়ে দিতে পারছেন না। গত লোকসভার পর বিধানসভাতেও তাই হয়েছিল। এ বার তো শহরে ৩৭ জন কাউন্সিলর আছেন। এ বারও লোকসভায় সেই ‘পিছিয়ে পড়ার’ গল্প চলছে। ভোটের আগে কয়েক জায়গায় কাউন্সিলর, ওয়ার্ডের নেতারা প্রার্থীকে পর্যন্ত নিয়ে যাননি। নিজেরা ভোট করে নেবেন বলে ডুবিয়েছেন বলে অভিযোগ। বাড়ি বাড়ি একাধিকবার পৌঁছানো, মুখ্যমন্ত্রীর প্রকল্পের লিফলেট, ভোটের স্লিপ বিলিও হয়নি।

দলের জেলার এ প্রবী‌ণ নেতার বক্তব্য, ‘‘বাম বা অন্য দল থেকে এসে টিকিট নিয়ে কাউন্সিলর হওয়া বেশিরভাগ বামভোট বা নিজের পুরানো দলের ভোটও আনতে পারেননি বলেই বুথস্তরের রিপোর্ট এসেছে। আদি তৃণমূলী কাউন্সিলরেরা কয়েকজন বরং
নিজেদের ওয়ার্ডে কম হলেও জেতার কথা বলেছেন।’’ দলের প্রাক্তন এক কাউন্সিলরের কথায়, ‘‘এলাকায় দলের মাটি শক্ত না করে শুধু নিজের মাটি শক্ত করার কাউন্সিলরদের চিহ্নিত করে রাখা প্রয়োজন। আগামী দিনে টিকিট বিলিতে সব মাথায় রাখার
প্রয়োজন রয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement